বৃহঃ. এপ্রি ১৮, ২০২৪
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
নরসিংদী প্রতিনিধি: নিজ বাসায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মোঃ হারুনুর রশীদ খান। শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারী) সকালে ফজর নামাজের পর সন্ত্রাসীরা উপজেলা চেয়ারম্যানের শিবপুর সদরের বাসায় ডুকে তাকে দুই রাউন্ড গুলি করে পালিয়ে যায়। গুলির শব্দ শুনে আশপাশের প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে প্রথমে শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থা আশংকা জনক হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।
এদিকে উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রশীদ খানের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে উপজেলার শতশত কর্মী সমর্থক ও আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা প্রথমে শিবপুরের রাস্তায় বিক্ষোভ করলে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে তারা সকাল ৮টা দিকে ঢাকা সিলেট মহাসড়কের ইটাখোলায় অবস্থান নিয়ে যানচলাচল বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এই বিক্ষোভ দুপুর প্রায় দুইটা পর্যন্ত চলে। এসময় আশপাশের হাজারো জনতা বিক্ষোভে অংশ নিয়ে রাস্তায় ট্রায়ার ও কাঠ পুড়িয়ে অগ্নিসংযোগ করে প্রতিবাদ জানান। উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে শিবপুরের ইউএনও জিনিয়া জিন্নাত, এসিল্যান্ড, ওসি ফিরোজ তালুকদার বিক্ষোভ কারীদের শান্ত করার চেষ্টা চালালেও তারা রাস্তা অবরোধে অনড় থাকেন। এমতাবস্থায় নরসিংদী জেলা প্রশাসক আবু নইম মোহাম্মদ মারুফ খান, পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম উপস্থিত হয়ে ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিলে অবরোধ কারীরা ৬ঘন্টা পর দুপুর দুইটায় বিক্ষোভ স্থগিত করেন।
এঘটনায় পুরো উপজেলায় আতংক বিরাজ করছে। সন্ত্রাসীরা কেন তাকে গুলি করেছে তার কোন তথ্য এখনো জানা যায়নি। বর্তমানে উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রমীদ খান ঢামেকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি পিঠে গুলিবিদ্ধ হন।
নরসিংদী-৩ শিবপুর আসনের সংসদ সদস্য জহিরুল হক ভূঞা মোহন জানান, সন্ত্রাসীরা তাকে নিজ বাসায় গুলি কওে পালিয়ে যায়। আমি তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং ঘটনার সাথে জড়িতদেও গ্রেফতার কওে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবী জানান। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিবপুরের সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মোল্লা। তিনি অবিলম্বে জড়িতদের গ্রেফতার করার দাবী জানান। শিবপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুহসীন নাজির জানান, দলীয় কোন্দলে হত্যার উদ্দেশ্যে সন্ত্রীরা তাকে নিজ বাসায় গুলি করেছে। আমরা হত্যার রাজনীতি চাই না। ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবী জানাচ্ছি। শিবপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম ভূঞা রাখিল বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রশীদ খান একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা এবং উপজেলা আওয়ামীলীগের একজন নিবেদিত প্রাণ। তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করা হয়েছে। আমি সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবী করছি। জেলা যুবলীগের সভাপতি বিজয় কৃষ্ণ গোস্মামী এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। গুলিবিদ্ধ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এর ভাতিজা জেলা যুবলীগের সহ সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন খান নিপুন বলেন, হারুন খানকে হত্যার উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসীরা গুলি করেছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সন্ত্রাসীদেও দ্রুত গ্রেফতার কওে আইনের আওতায় আনার জোর দাবী জানান। এই রিপোর্ট লেখাপর্যন্ত শিবপুর মডেল থানায় কোন মামলা হয়নি বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য ১৯৮৬ সালে উপজেলা চেয়ারম্যানের ভাই আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি রবিউল আওয়াল কিরন খানকেও সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করেছে। এছাড়া ২০২১ সালের ৬ডিসেম্বর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির পদ থেকে হারুনুর রশীদ খান কে অব্যাহতি দেওয়া হয়।