শহিদ সেলিম-দেলোয়ার দিবস উদযাপন উপলক্ষে ঢাকার হাতিরপুলে ফিকামলি সেন্টার-প্লাটিনাম জিম প্রাঙ্গণে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত। মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
২৮ ফেব্রুয়ারি, খোলা বাজার অনলাইন ডেস্কঃ শহীদ সেলিম-দেলোয়ার স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কুষ্টিয়া-১ আসনের সংসদ সদস্য জনাব আ কা ম সরওয়ার জাহান বাদশা এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবু আহমেদ নাসীম পাভেল, সাবেক অ্যাডিশনাল আইজিপি মাহবুব হোসেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. মোমতাজ উদ্দিন মেহেদী, বাংলাদেশ মনোবিজ্ঞান সমিতির মহাসচিব প্রফেসর ড. শামসুদ্দীন ইলিয়াস প্রমুখ।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সেলিম-দেলোয়ার স্মৃতি পরিষদের সভাপতি ফিকামলি তত্ত্বের জনক, বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ১৯৮৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সেলিম ও দেলোয়ারের সাথে মিছিলে আহত হয়ে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যাওয়া মৃত্যুঞ্জয়ী সাবেক ছাত্রনেতা ড. আব্দুল ওয়াদুদ।
ড. ওয়াদুদ বলেন, ‘রক্তঝরা আন্দোলন সংগ্রামের এক ঐতিহাসিক দিন ২৮ ফেব্রুয়ারি। আমারও আজ স্বরণসভা হতে পারত। রাখে আল্লাহ মারে কে? অল্পের জন্য সেদিন প্রাণে রক্ষা পেয়েছিলাম। সেলিম দেলোয়ারের রক্তদান গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামকে বেগবান করেছিল একথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। সে সময় মিছিল করা, মিটিং করা, ভোটের অধিকার ভাতের অধিকার এটা ছিল একটা দুঃসাধ্য ব্যাপার। সব গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সংগ্রামে আমাদের প্রেরণার উৎস ছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম, ত্যাগ-তিতিক্ষা, রক্তের বিনিময়ে, বারবার মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসে, অনেক ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা আজ রাষ্ট্র ক্ষমতায়। তার দূরদর্শী ও গতিশীল নেতৃত্বে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখছে বিশ্ববাসী। কিন্তু কিছুসংখ্যক ষড়যন্ত্রকারী ও কুচক্রী মহল সরকারের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করার পাঁয়তারা করছে। তাদের কালো হাত ভেঙ্গে দিতে আমরা সদা প্রস্তুত রয়েছি। আমরা বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধুকে হারিয়েছি; আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হারাতে চাইনা। দেশরত্ন শেখ হাসিনা আছেন বলেই দেশের আজ এত উন্নতি ও অগ্রগতি। উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে জননেত্রী শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নেই। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে বিজয়ী করতে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের বার্তা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এ কাজটি আমরা সফলভাবে করতে পারলে বর্তমান সরকারের পক্ষে ব্যাপক জনমত গঠন হবে ও আগামী নির্বাচনে ইনশাআল্লাহ ভোটবাক্সে এর প্রভাব পড়বে। নির্বাচনে জয়-পরাজয় মূলত নির্ভর করে সুইং ভোটারদের পর। তাই তাদের সামনে উন্নয়নের বার্তা ও জামাত-বিএনপি জোট সরকারের দুঃশাসন ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরতে হবে।’
ডক্টর আব্দুল ওয়াদুদ আরও বলেন, ‘শহীদদের স্মরণ করা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তাদের আত্মত্যাগ, সংগ্রাম, বীরত্বগাথা বেঁচে থাকা নেতাকর্মীদের উৎসাহ দেয়, অনুপ্রেরণা যোগায়।’
বাংলাদেশ মনোবিজ্ঞান সমিতি’র মহাসচিব প্রফেসর ড.শামসুদ্দীন ইলিয়াস বলেন, বাঙালি বিস্মৃত জাতি। মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে শুরু করে এদেশের স্বৈরাচার বিরোধী সকল আন্দোলন সংগ্রামে যে সমস্ত গণতন্ত্রকামী নেতাকর্মী শহিদ হয়েছেন তাদেরকে আমরা ভুলতে বসেছি; অনেকের কথাই আমরা ভুলে গেছি। একইভাবে আমরা ভুলতে বসেছি ১৯৮৪ সালের ছাত্র জনতার আন্দোলনের সহযাত্রী শহিদ সেলিম ও দেলোয়ারের আত্নত্যাগের কথা। ব্যতিক্রম শুধুই একজন, যিনি সেলিম দেলোয়ারের স্মৃতিকে আকড়ে রেখেছেন, শহিদ সেলিম দেলোয়ার স্মৃতি পরিষদ এর ব্যানারে, তিনি আমাদের পরম বন্ধু ড. আবদুল ওয়াদুদ। প্রতি বছর ২৮ ফেব্রুয়ারি এই সংগঠন থেকেই দিবসটি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয়। ড. ওয়াদুদের এই উদ্যোগকে আমি কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করি, শ্রদ্ধা জানাই।
পুলিশের এডিশনাল আইজিপি মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আগের পুলিশ আর বর্তমান পুলিশ এক নয়। পুলিশ আগের চেয়ে অনেক মানবিক ও জনবান্ধব।’
আলোচনা শেষে ৭৫ এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুসহ সকল শহীদ, জাতীয় চার নেতা, ডাক্তার এস এ মালেক, শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের, সেলিম-দেলোয়ার সহ গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে নিহত সকল শহিদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।