পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রদূত (অব.) জনাব সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম এখন বাংলাদেশের আকর্ষণীয় পর্যটন গন্তব্য হিসেবে পরিচিত। উপদেষ্টা বলেন, বিভিন্ন ভাষাভাষী নৃ-গোষ্ঠীসহ এখানকার সকল অধিবাসীর জীবনে শান্তি, সম্প্রীতি, উন্নয়ন ও অগ্রগতির অভিযাত্রা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থাসমূহ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
আজ ঢাকায় বাংলাদেশ সচিবালয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার অফিস কক্ষে উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা’র সাথে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মান্যবর এ্যাম্বাসেডর H.E. Mr. Michael Miller-এর নেতৃত্বে দুই সদস্যের প্রতিনিধি দল সৌজন্য সাক্ষাৎকালে উপদেষ্টা মহোদয় এসব কথা বলেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব সুপ্রদীপ চাকমা বলেন যে, বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থাকে বৈষম্যহীন করে গড়ে তুলতেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি নাগরিক যেন সমতার ভিত্তিতে বাংলাদেশে মিলেমিশে বসবাস করতে পারে সেজন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি এ প্রসঙ্গে এ সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন সংস্কার কর্মসূচির বিষয়ে মান্যবর ই.ইউ অ্যামবাসেডরকে অবহিত করেন। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন প্রতিনিধিগণ সরকারের গৃহীত সংস্কার কর্মসূচির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেন।
উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা আরও বলেন, বাংলাদেশ তথা পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সবসময় আমাদের পাশে ছিল। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বাংলাদেশকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে এবং এজন্য আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। উপদেষ্টা বলেন, আমরা বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকাকে শক্তিশালী করতে চাই। এরই ধারাবাহিকতায় পার্বত্য এলাকার পরিবেশ রক্ষা, ইকো ট্যুরিজম, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধিসহ সকল ক্ষেত্রে পার্বত্য অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর জীবন মানোন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলে কাজ করছে।
উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রদূত (অব.) জনাব সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন কমিউনিটির মানুষ বাস করে। তিনি বলেন যে, আমরা শিক্ষার প্রতি অধিকতর গুরুত্ব প্রদান করছি। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, মাল্টিমিডিয়া এর মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলের সকল ছাত্রছাত্রীদের পড়ালেখার মান বৃদ্ধি এবং পার্বত্য অঞ্চলের বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর জীবনমানের সার্বিক উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। এ বিষয়গুলোতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া সুশাসন, পরিবেশ বান্ধব ট্যুরিজম, সমউন্নয়ন, পাহাড়ে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা, শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তন, নারীর ক্ষমতায়ন, সুপেয় পানি সরবরাহ, মানবাধিকার রক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন আরও ঘনিষ্টভাবে কাজ করতে পারে মর্মে মাননীয় উপদেষ্টা ও মান্যবর ই.ইউ অ্যাম্বাসেডর একমত পোষণ করেন। এছাড়া পার্বত্য এলাকায় ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের মাধ্যমে সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র উন্মোচনের জন্য মান্যবর ই.ইউ. অ্যাম্বাসেডর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন প্রতিনিধি দলের সাথে আলোচনাকালে এসময় অন্যান্যের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব এ কে এম শামিমুল হক ছিদ্দিকী, ঢাকাস্থ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মান্যবর এ্যাম্বাসেডর H.E. Mr. Michael Miller, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আমিনুল ইসলাম, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রেজিলিয়েন্ট লাইভলিহুড প্রোগ্রাম ম্যানেজার মিজ মেহের নিগার ভূইয়া, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব কংকন চাকমা, উপসচিব জেসমিন আক্তার, উপদেষ্টার একান্ত সচিব (উপসচিব) খন্দকার মুশফিকুর রহমানসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।