খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫: খুব বেশি ফেসবুকে বসে থাকাটা স্বাস্থ্যহানীকর। এ কথা বিশেষজ্ঞরাই বলেন। তাই অনেকেই কিছুটা সময় ফেসবুক থেকে দূরে থাকতে চান। আপনিও কি কখনো চেষ্টা করেছেন? সদ্য এক গবেষণাতে বলা হয়, এ চেষ্টার দুই-এক ঘণ্টা বাদেই আপনি আবারো ফেসবুকে লগ ইন করতে বাধ্য। এর কারণ খুঁজে বের করেছেন আমেরিকার কর্নেল ইউনিভার্সিটির কর্নেল ইনফরমেশন সায়েন্সের গবেষকরা।
এক ডাচ প্রজেক্টের অধীনে পরিচালিত হয় ৫ হাজারের বেশি জরিপ। এসব জরিপের ফলাফল বিশ্লেষণ করেছেন গবেষকরা। প্রজেক্টের নাম ছিল ‘নাইনটি নাইন ডেস অব ফ্রিডম’। এ প্রজেক্টটি ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ৯৯ দিনের জন্যে ফেসবুক থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানান।
এতে যারা অংশ নেন তাদের ৩৩, ৬৬ এবং ৯৯তম দিনে মানসিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হয়। ফেসবুক ছাড়া তাদের মানসিক অবস্থা কেমন ছিল তাও পরীক্ষা হয় নিয়মিত। দেখা গেছে, সবাই ফেসবুক ছাড়তে উদ্যত হয়েছেন ঠিকই, কিন্তু খুব বেশি সময় থাকতে পারেননি। আবারো লগ ইন করেছেন ফেসবুকে।
এর ৪টি কারণ চিহ্নিত করেছেন গবেষকরা।
১. আসক্তি : ফেসবুক যাদের কাছে আসক্তি বলে মনে হয়, তারা খুব দ্রুত সেখানেই ফিরে গেছেন। একজন অংশগ্রহণকারী জানান, দশম দিনে ইন্টারনেটে অন্য কাজে প্রবেশ করি। কিন্তু প্রথমেই চলে যায় ফেসবুকে।
২. নিরাপত্তাজনিত কারণ : যারা মনে করেন ফেসবুক তাদের যাবতীয় কাজের ওপর নজরদারি করছে তাদের মধ্যে আবারো ফেসবুকে ফিরে যাওয়ার প্রবণতা অনেক কম। তবে বিষয়টি উপলব্ধি করেও তারা কি হচ্ছে না হচ্ছে দেখার জন্যে ফেসবুকে প্রবেশ করেন।
৩. বৈষয়িক উপলব্ধি : ফেসবুক ছেড়ে যারা বুঝতে পারেন যে এতে তাদের দারুণ উপকার হচ্ছে, তারা আর ফেসবুকে ফিরতে চান না।
৪. অন্যান্য সোশাল মিডিয়া : যারা টুইটা বা ইন্সটাগ্রাম বা অন্যান্য সোশাল মিডিয়ায় ঢুঁ মারেন তারাও ফেসবুক ছাড়ার পর সেখানে ফেরার তাগাদা অনুভব করেননি। এসব কারণ বের করার পর প্রধান গবেষক এরিক বাউমার বলেন, এই ফলাফলে বোঝা যায়, সোশাল মিডিয়ায় ঢোকার ক্ষেত্রে প্রতিদিন সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়টি বেশ পেরেশানিদায়ক। ব্যক্তিগত আসক্তি ছাড়া ব্যবহারকারীরা অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ ইত্যাদি কাজে তেমন টান অনুভব করেন না। তা ছাড়া ফেসবুক সামান্য হলেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু সামাজিক কাজে সহায়ক হয়ে উঠেছে। গ্রুপ গঠনের মাধ্যমে মানুষ একে-অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে। এদিকে, অপর এক ডাচ গবেষণায় বলা হয়, ফেসবুক ব্যবহারকারীরা অন্যদের চেয়ে ৩৯ শতাংশ কম সুখী থাকেন। সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস