খোলা বাজার২৪ শনিবার,২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যস্থতায় সিরিয়ায় অস্ত্রবিরতি কার্যকর হয়েছে। পাঁচ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধ ও রক্তপাত বন্ধে দেশটিতে এই প্রথম এ ধরনের বড় অস্ত্রবিরতি চুক্তি কার্যকর হলো।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, শুক্রবার গ্রিনিচ সময় ২২টায় ‘বৈরিতা হ্রাস’ শুরু হয়েছে। প্রাথমিক খবরে জানা গেছে, প্রধান প্রধান য্দ্ধুক্ষেত্রগুলোতে বন্দুকের আওয়াজ থেমে গেছে।
শুক্রবার মধ্যরাতে ঐতিহাসিক অস্ত্রবিরতি কার্যকরের কিছুক্ষণ পর জাতিসংঘ দূত স্ট্যাফান দ্য মিসতুরা বলেন, প্রাথমিক খবরে যুদ্ধ ‘থেমে গেছে’ বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে একটি জায়গায় লংঘনের ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা রাশিয়া ও সিরিয়াকে সতর্ক করে বলেন, ‘বিশ্ব ওই অস্ত্রবিরতি পর্যবেক্ষণ করবে।’ তিনি বলেন, ‘আগামী দিনগুলো হবে সংকটময়।’ মধ্যরাতে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের শহর আলেপ্পোতে গোলাগুলি বন্ধ হয়ে যায়। তবে এর আগে শুক্রবার সেখানে বিদ্রোহীদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক বিমান হামলা চালায় রাশিয়া।
দেশটির মানবাধিকার-বিষয়ক পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলছে, আলেপ্পোর কিছু স্থানে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। তবে অন্যান্য জায়গা শান্ত রয়েছে।
দ্য মিসতুরা বলেন, অস্ত্রবিরতি ব্যাপকভাবে পালিত হলে শান্তি আলোচনা আগামী ৭ মার্চ শুরু হবে।
জেনেভায় তিনি বলেন, মাঠে কি ঘটছে তা পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা করতে ১৭ জাতির আন্তর্জাতিক সিরিয়া সহায়তা গ্রুপের সমন্বয়ে গঠিত টার্স ফোর্স বৈঠকে বসবে।
দ্য মিসতুরা বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, কোন ধরণের ঘটনা ঘটলে তা দ্রুত নিয়ন্ত্রণ ও থামানো হবে। আর এটাই হবে পরীক্ষা।
তবে অস্ত্রবিরতি কতটা কার্যকর হবে, এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্লেষকেরা। তারা বলছেন, জঙ্গি দল আইএস ও আল নুসরার ওপর হামলা চলতে থাকলে সিরিয়ার পরিস্থিতি স্থিতিশীল হওয়া কঠিন। তাদের একটি বড় উদ্বেগের বিষয় হলো, ওই অস্ত্রবিরতির প্রস্তাবে আল-কায়েদা সমর্থিত আল-নুসরা ফ্রন্টের বিরুদ্ধে হামলা অব্যাহত রাখার সুযোগ রাখা হয়েছে। নুসরার যোদ্ধারা বিদ্রোহীদের দখলে থাকা বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে।
মার্কিন দূত সামান্থা পাওয়ার বলেন, অস্ত্রবিরতি কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তবে সহিংসতা কমার আশা রয়েছে।
২০১১ সালের মার্চে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরোধিতা করা বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘাত শুরু হয়। পরে তা গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়। দেশটিতে গত পাঁচ বছর ধরে চলা যুদ্ধে আড়ই লাখের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং এক কোটি ১০ লাখ লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে।