Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

16খোলা বাজার২৪,বুধবার, ৬ এপ্রিল ২০১৬: পানামা পেপারস’ কেলেঙ্কারির ঘটনায় বিশ্বের ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের অর্থ পাচার ও কর ফাঁকির বিষয়টি নিয়ে বিশ্বজুড়ে কঠোর সমালোচনা শুরু হলেও কেউ হ্যাকিং নিয়ে কথা বলছে না বলে খেদ প্রকাশ করেছেন আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মোসাক ফনসেকার প্রতিষ্ঠাতাদের একজন র‍্যামন ফনসেকা। তিনি দাবি করেছেন, বিদেশি সার্ভার থেকে তাঁদের প্রতিষ্ঠানে হ্যাক করা হয়েছে। এ নিয়ে তাঁরা গত সোমবার একটি ফৌজদারি অভিযোগ করেছেন।
র‍্যামন অভিযোগ করেন, এখানে কেউ হ্যাক করার বিষয়টি নিয়ে কথা বলছে না। অথচ অপরাধ হয়ে থাকলে এটিই হয়েছে।
টেলিফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়ে এএফপির করা এক প্রশ্নের জবাবে ফনসেকা বলেন, ‘আমরা অভিযোগ করেছি। তথ্য ফাঁস হওয়া নিয়ে আমাদের কাছে কারিগরি প্রতিবেদন আছে। সেখানে দেখা গেছে, বাইরে থেকে আমাদের সার্ভার হ্যাক করা হয়েছে।’ তবে কোন দেশ থেকে হয়েছে, তা তিনি বলেননি।
আফ্রিকার দরিদ্র দেশ আইভরিকোস্ট, অ্যাঙ্গোলা থেকে শুরু করে ধনী যুক্তরাজ্য—সব দেশেরই ক্ষমতাধরেরা ৪০ বছর ধরে মোসাক ফনসেকার সহযোগিতায় অর্থ পাচার, কর ফাঁকি দিয়ে দেশের বাইরে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। বিশ্বের যেসব প্রতিষ্ঠান গোপনীয়তা রক্ষার জন্য বিখ্যাত, মোসাক ফনসেকা সেগুলোর একটি। পানামার এ প্রতিষ্ঠানের অজস্র নথি ফাঁসের এ ঘটনা ‘পানামা পেপারস’ নামে খ্যাত হয়ে উঠেছে।
অজানা সূত্র থেকে মোসাক ফনসেকার ওই ১ কোটি ১৫ লাখ নথি জার্মান দৈনিক জিটডয়েচ সাইতংয়ের হাতে আসে। পত্রিকাটি সেসব নথি অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা নিয়ে কাজ করা ওয়াশিংটনভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টসকে (আইসিআইজে) দেয়। ১৯৭৭ থেকে ২০১৫ সাল, প্রায় ৪০ বছরের এসব নথি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তার কিছু অংশ আইসিআইজে প্রকাশ করে। আগামী মে মাসে আরও নথি প্রকাশের ঘোষণা দিয়েছে সংস্থাটি।
র‍্যামোন ফনসেকা বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারছি না। সারা বিশ্ব কি ইতিমধ্যে স্বীকার করে নিয়েছে—গোপনীয়তা কোনো মানবিক অধিকার নয়?’
মোসাক ফনসেকার ফাঁস হওয়া এসব নথিতে বিশ্বের শতাধিক ক্ষমতাধর মানুষ বা তাঁদের নিকটাত্মীয়দের বিদেশে টাকা পাচারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তালিকায় দেখা গেছে যে চীন, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরবের মতো ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান বা তাঁদের আত্মীয় এসব অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত। শুধু রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানেরাই নন, বিশ্বখ্যাত ফুটবলার লিওনেল মেসি থেকে ভারতীয় চিত্রনায়িকা ঐশ্বরিয়া রাই—তালিকায় আছে অনেকেরই নাম। আছেন অমিতাভ বচ্চনও। মেক্সিকোর মাদকসম্রাট বা সন্ত্রাসী সংগঠন হিজবুল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগের কারণে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কালো তালিকায় থাকা ব্যবসায়ীরাও বাদ যাননি এ তালিকা থেকে।
মোসাক ফনসেকার মাধ্যমে কর ফাঁকি দেওয়া অর্থ কর রেয়াতকারী অঞ্চলে তথাকথিত প্রতিষ্ঠান (অফশোর কোম্পানি) তৈরির মাধ্যমে গচ্ছিত রেখেছিলেন পাচারকারীরা। এসব অঞ্চলের মধ্যে প্রায় সব কটিই যুক্তরাজ্যের রানিশাসিত নানা অঞ্চল (ব্রিটিশ টেরিটোরিজ)। এই অঞ্চলগুলো ‘করের স্বর্গ’ বা ‘ট্যাক্স হেভেন’ নামে পরিচিত।
কিন্তু আইনি এ প্রতিষ্ঠানটি ও দেশটির সরকার জোর দিয়ে বলছে, অফশোর কোম্পানিগুলো অবৈধ নয়।