খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ২৬ এপ্রিল ২০১৬: সহিংস রক্তপাত ঘটানো ছাড়া বর্তমান সরকারের ক্ষমতায় টিকে থাকার অন্য কোন পথ খোলা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
রাজধানীর কলাবাগানে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূতের প্রটোকল অফিসার জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু তনয় এবং কারারক্ষী রুস্তম হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে খালেদা জিয়া বলেন, মানুষের নিরাপত্তা, অধিকার, ভোটাধিকার, নির্বাচন, গণতন্ত্র, শান্তি, স্বস্তি, নিরাপত্তা এখন লাশবাহী গাড়ীতে। বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার সহিংস রক্তপাত ঘটানো ছাড়া তাদের টিকে থাকার অন্যকোন পথ খোলা নেই। দেশ পরিচালনায় যেহেতু জনগণের সমর্থন নেই সেহেতু খুন-জখম টিকিয়ে রাখাকেই তারা পরিত্রাণের পথ মনে করছে।
তিনি বলেন, দেশে যে কোন হত্যাকা-কে নিজেদের স্বার্থে অতি অবিশ্বাস্য কল্পকাহিনী রচনা করা আওয়ামী লীগের স্বভাবধর্ম। কিছুদিন ধরে দেশব্যাপী বিভিন্ন ধর্ম সম্প্রদায় ও বিদেশী হত্যার ঘটনাগুলোতেও তারা একের পর অপপ্রচার চালিয়েছে। বিরোধী দলের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করেছে। ভোটারবিহীন সরকারের এই সমস্ত অপকৌশল মূলত: প্রকৃত ঘটনাকে ধামাচাপা দেয়া ও আসল অপরাধীদের আড়াল করা।
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, সরকার প্রধান যতই উচ্চস্বরে বক্তব্য দিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করুন না কেন তাভেল্লা হত্যাকা- থেকে শুরু করে জুলহাস মান্নান ও মাহবুব রাব্বি তনয় এবং রুস্তম আলী পর্যন্ত প্রতিটি হত্যাকা-ের দায় এই সরকারকেই নিতে হবে। সরকার যতই উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর অপচেষ্টা করুন না কেন, জাতীয় অর্থনীতির হরিলুট, রাজকোষ চুরির ঘটনা এড়াতে তিনি যতই অপকৌশল করুন না কেন জনগণের দৃষ্টিকে ঝাপসা করতে পারবেন না। তাঁর অপকৌশল বাস্তবায়ন করতে তিনি যতই দূষিত পরিকল্পনা করুন না কেন ভোটারবিহীন সরকারকেই এরজন্য জনগণের নিকট একদিন জবাবদিহি করতেই হবে।
তিনি বলেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে এখন আরও বিপজ্জনক। দেশের মানুষ এক ভয়াল নৈঃশব্দের মধ্যে আতঙ্কে দিন যাপন করছে। ব্যাংকার, শিক্ষক, এনজিও কর্মী, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, ছাত্র, নারী, শিশু সহ অনেককেই রাষ্ট্রযন্ত্রের যথেচ্ছ ব্যবহারের কারণে জীবন দিতে হয়েছে। সরকার সর্বক্ষেত্রে একচেটিয়াত্ব প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে গণতন্ত্রের পাশাপাশি রাজনৈতিক, সামাজিক ভারসাম্যকেও চরমভাবে ভেঙ্গে ফেলেছে। সর্বক্ষেত্রে দলীয়করণ করতে গিয়ে রাষ্ট্রের সকল অঙ্গ নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। তাই চারিদিকে অরাজকতারই জয়জয়কার। তিনি বলেন, দেশে হত্যা, হানাহানি, রক্তপাত, অপহরণ, গুম, মুক্তিপণ আদায়, বিচার বহির্ভূত হত্যাকা- প্রচ- আধিপত্য বিস্তার করেছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন আরো বলেন, কর্তৃত্ববাদী শাসন এতো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, মানুষের মুখে টু শব্দ শুনলেই সেই মানুষের টুঁটি টিপে ধরার জন্য ধেয়ে আসে রাষ্ট্রযন্ত্র। মনে হয় আমরা যেন একটি পিশাচ দ্বীপে বসবাস করছি।
নিহত জুলহাস ও তার বন্ধু এবং কারারক্ষী রুস্তম আলীর হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানান বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। একইসঙ্গে নিহতদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
অপর এক বিবৃতিতে এই তিন হত্যাকা-ের নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।