মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৭: সম্মানসূচক ‘ফ্রিডম অব অক্সফোর্ড’ খেতাবটি হারাতে পারেন অং সান সু চি। রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান গণহত্যা নিয়ে তার নীরব অবস্থানের কারণেই এ সিদ্ধান্ত নিতে পারে অক্সফোর্ড সিটি কাউন্সিল।
এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায় বিবিসি।
‘গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ সংগ্রাম’ এর স্বীকৃতিস্বরূপ সু চিকে ১৯৯৭ সালে ‘ফ্রিডম অব অক্সফোর্ড’ সম্মানে ভূষিত করা হয়। কিন্তু অক্সফোর্ড সিটি কাউন্সিল জানিয়েছে, তিনি (সু চি) আর এ খেতাব ধারণের যোগ্য নন।
ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সাম্প্রতিক হামলায় প্রাণ বাঁচাতে ৫ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে। এ সমস্যার শুরু ২৫ আগস্ট, যখন রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিরাপত্তাচৌকিতে হামলা চালায়।
সেনাশাসিত মিয়ানমারে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে একনিষ্ঠ থেকেছেন সু চি। এ কারণে তিনি দীর্ঘদিন গৃহবন্দি অবস্থায় জীবন কাটান। ২০১৫ সালের নভেম্বরে নির্বাচনে তার ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি পার্টি জয় লাভ করলে সু চি আন্তর্জাতিক মহলে গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং স্বাধীনতাকামী মানুষের নেতায় পরিণত হন।
কিন্তু মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ‘এথনিক ক্লিনজিং’ অপারেশনে হাজারো রোহিঙ্গাকে মেরে ফেলা হচ্ছে।
বাদ যাচ্ছে না নারী-শিশু। এই চরম অবস্থায় সু চির নীরবতা বিশ্বকে নাড়া দিয়েছে। আন্তর্জাতিক মহল এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলোতে ব্যাপকভাবে সমালোচিত তিনি। এখন অক্সফোর্ড সিটি কাউন্সিলের মতো সংস্থাগুলো সু চিকে যে সম্মাননা দিয়েছিল, তিনি তার যোগ্য কিনা তা নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে। এসব জানান বিবিসির ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্স এডিটর জন সিম্পসন।
ইতিমধ্যে গেলো সপ্তাহে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির অধীনন্ত একটি কলেজ থেকে সু চির একটি ছবি নামিয়ে ফেলা হয়েছে। ১৯৬৭ সালে সেইন্ট হিউ’স কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেন সু চি। ১৯৯৯ সালে সেই কলেজের প্রবেশপথে স্থায়ীভাবে তার একটি পোট্রেট টাঙানো হয়।
অক্সফোর্ড সিটি কাউন্সিলের নেতা বব প্রাইস সু চিকে দেওয়া সম্মানসূচক ‘ফ্রিডম অব অক্সফোর্ড’ খেতাব ফিরিয়ে নেওয়ার পক্ষে সকলের সমর্থন আদায়ের পরিকল্পনা করছেন।