খোলা বাজার২৪, রোববার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬: নাগেশ্বরী ও ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বিভন্ন সীমান্ত দিয়ে আসছে ভারতীয় গরু। এসব গরু কাস্টমস হচ্ছে ৩০ ভাগেরও কম। এতে বিপুল পরিমান রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ কাস্টমস ও বিজিবির ছাড়পত্র দেয়া নিয়ে দ্বন্দের কারণে ইচ্ছা থাকলেও ছাড়পত্র পাওয়া যাচ্ছেনা। সড়কে সড়কে বিজিবি গরু আটক করে হয়রানী করছে। বিজিবি বলছে কাস্টমসের ছাড়পত্র না পেয়ে গরু আটক করা হচ্ছে। কাস্টমসের দাবী ব্যবসায়ীদের চাহিদা অনুযায়ী ছাড়পত্র দেয়া হচ্ছে। এদিকে বিট খাটাল প্রতি গরুতে ২০ টাকার পরিবর্তে ১শ করে নেয়ার অভিযোগও উঠেছে।
ভুরুঙ্গামারী উপজেলার ধলডাঙ্গা, শালঝোড় ও দিয়াডাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে আসা কয়েকশ ভারতীয় গরু আটক করে বিজিবি। পাগলার হাট মোড়ে ভটভটি ও অটোতে আসা গরুগুলোকে আটক রাখার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজহারুল ইসলাম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পরে গরুগুলো ছেড়ে দেয়া হয়। ভুরুঙ্গামারী ও নাগেশ্বরী উপজেলার কচাকাটা, তরীরহাট ও নারায়নপুর সীমান্ত দিয়ে আসা ভারতীয় গরুর অধিকাংশ ভুরুঙ্গামারী হাটে কেনাবেচা হয়। পরে যায় ঢাকাসহ বিভন্ন জেলায়।
সীমানা পেরিয়ে আসার পর বিটে খাটালে ডাক্তারী পরীক্ষা নিরীক্ষা করে গরুর ছাড়পত্র দেয়ার দেয়ার কথা। বিট কর্তৃপক্ষ গরু প্রতি ২০ টাকা নেবেন। কিন্তু ভুরুঙ্গামারীর পাগলার হাটের জামতলা মোড়ের দিলরুবা সানজিদা ট্রেডিং কোম্পানী লি. নামের বিটখাটালে গরু রাখার কোন ব্যবস্থা নেই। রাস্তার উপর দাড়িয়ে গরু আটক করে প্রতি গরুতে ১শ করে টাকা নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে ওই বিটের শাহিন নামের একজন বলেন, এক ব্যাপারীর গরু আসে ২০টা। বিট করে ৫টা। বেশি না নিয়ে উপায় আছে।
অন্যদিকে কাষ্টমস বিভাগ সীমান্ত সড়কের কাছাকাছি বা নির্ধারিত বিটের কাছাকাছি বসে করিডোরের কাগজ দেবার কথা। কাস্টমস বিভাগ কুড়িগ্রাম অফিসে বসে তারেক হোসেন নামের এক ব্যক্তির চাহিদা অনুযায়ী ছাড়পত্র দেন। তারেক সেসব নিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন। এখানে চলে রাজস্ব ফাঁকি। গরুর ব্যাপারীরা (ব্যবসায়ী) ১০টি ভারতীয় গরু আসলে ৪-৫টা গরুর ছাড়পত্র নেন। বাকিটা কিছু টাকার মাধ্যমে বাজারে তোলা হয়। সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে নেয়া সে টাকা বিজিবি, পুলিশ, বিটখাটালসহ স্থাণীয় কিছু ব্যক্তি পকেটে যাচ্ছে। এ বিষয়ে তারেক হোসেন জানান, ব্যবসায়ীদের দেয়া গরুর সংখ্যা অনুযায়ী কুড়িগ্রাম কাষ্টম অফিসে গেলে ওনারা বিজিবির স্লিপ চায়। স্থানীয় বিজিবি বলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া স্লিপ দেয়া হবেনা। এ সমস্যা চলছে। অথচ এখানে সরকারী উদ্যোগে নিয়মমত করিডোর করলে বিপুল পরিমান রাজস্ব পাবে সরকার। এদিকে বৈধভাবে অনেক মানুষের কাজেরও সুযোগ সৃষ্টি হবে।
ব্যবসায়ী এনছার আলী, শফিয়ার রহমান বলেন, কাস্টমসের লোকজন তাদের নির্দিষ্ট লোক ছাড়া গরুর ছিøপ দেয়না। গরু আসে কয়েক শ। স্লিপ দেয় এক দেড়শ। বিটে গরু রাখারও জায়গা নেই। টাকা বেশি নিচ্ছে। শতশত গরু ব্যবসায়ী হয়রানীর স্বীকার হচ্ছে এবং আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ্য হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম বলেন, ভারতীয় গরু আসার বিষয়ে সৃষ্ট সমস্যা প্রাথমিকভাবে সমাধান করা হয়েছে। এখানে বিজিবি ও কাস্টমস প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
কুড়িগ্রাম করিডোরের কাষ্টমস্ সুপার আমিরুল ইসলাম জানান, বিটের কাছাকাছি বসে করিডোরের কাজ করা করার নিয়ম। কিন্তু আমাদের লোকবল কম। সে কারণে ওখান থেকে একজন লোক আসলে চাহিদা অনুযায়ী ছাড়পত্র দেয়া হয়। হঠাৎ করে জটিলতা তৈরীর বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।