
গতকাল বুধবার ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬.৮ মিনিটে মরহুমের মরদেহ হযরত শাহজালাল (রহ.) বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। মরদেহের সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এবং হান্নান শাহ’র ছোট ছেলে রিয়াজুল হান্নান।
দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারনী ফোরামের সদস্য এবং রাজনীতির রাজপথের প্রিয় সহকর্মীকে শেষ বারের মতো দেখা ও শ্রদ্ধা জানাতে বুধবার রাতেই ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অব. আ স ম হান্নান শাহ’র বাসায় ছুটে যান বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
আজ বৃহস্পতিবার ২৯ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় মহাখালী ডিওএইচএস জামে মসজিদে প্রয়াত বিএনপির এই নেতার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় অংশ নেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ডা.এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, সাবেক নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন, এলডিপি’র সভাপতি কর্ণেল অব. অলি আহমদ , ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আনিসুজ্জামান প্রমুখ।
পরে বিএনপি নেতা হান্নান শাহ মরদেহ জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা নিয়ে আসা হলে বেলা ১১টায় সেখানে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী, চিফ হুইফ আ স ম ফিরোজ, বিরোধী দলীয় নেতার পক্ষে হুইফ নুরুল ইসলাম, খালেদা জিয়ার পক্ষে দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্ঠা আবুল খায়ের ভ’ইয়া, এলডিপির পক্ষে আব্দুল করিম আব্বাসী ও শাহাদাত হোসেন সেলিম প্রয়াত এই নেতার কফিনে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন।
এর আগে জানাজায় বিএনপি নেতা লে. জেনারেল অব. মাহবুবুর রহমান, মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চৌধুরী কামাল ইবনে ইফসুফ, জয়নাল আবদীন, ২০ দলীয় জোট নেতা খন্দকার গোলাম মোর্তুজা, জেবেল রহমান গানি, কামরুজ্জামান, সাবেক হুইফ শহীদুল হক জামাল, সাবেক সাংসদ আশরাফ উদ্দিন নিজাম, জয়নাল আবেদী (ভিপি জয়নাল) নাজিম উদ্দিন আলম, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, আব্দুল মোমেন তালুকদার খোকা এবং আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদ আহসান রাসেল প্রমুখ অংশ নেন।
এদিকে দুুপুর ১২টার দিকে প্রয়াত নেতা আ স ম হান্নান শাহ’র মরদেহ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নিয়ে আসা হয়। এ সময় শত শত নেতাকর্মীর শেষ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত হন হান্নান শাহ। বাদ জোহর দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, তরিকুল ইসলাম, এম কে আনোয়ার, মির্জা আব্বাস, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ড.আব্দুল মঈন খান, কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল্লাহ আল নোমান, মোহাম্মদ শাহজাহান, আহমেদ আযম খান, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর. আব্দুস সালাম, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, হাবিবুর রহমান হাবিব, গোলাম আকবর খন্দকার, আব্দুস সালাম আজাদ, শহীদুল ইসলাম বাবুল, তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ, আমিনুল ইসলাম, মারুফ হোসেন, রফিক শিকদার, ইউনুস মৃধা, রাজীব আহসান, আকরামুল হাসান মিন্টু প্রমুখ অংশ নেন।
এছাড়া ২০ দলীয় জোট নেতা সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, শফিউল আলম প্রধান, মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গোলাম মোস্তফা ভ’ইয়া প্রমুখ জানাজায় অংশ নেন।
গতকাল বুধবার ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় দীর্ঘদিন রাজনীতির মাঠে এক সাথে পথ চলা সহকর্মীর মরদেহ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অশ্রুসিক্ত নয়নে গ্রহণ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময়ে তাঁর পাশে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইয়েদুল ইসলাম বাবুলসহ বিএনপি ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। হান্নান শাহ’র মরদেহ মহাখালীর ডিওএইচএসের বাসায় নিয়ে আসলে সর্বস্তরের জনসাধারণের পাশাপাশি জামায়াত নেতা অধ্যক্ষ মুজিবুর রহমান, আব্দুল হালিম দেখতে আসেন।
মৃত্যুকালে বিএনপি নেতা হান্নান শাহ স্ত্রী নাহিদ হান্নান, দুই ছেলে শাহ রেজাউল হান্নান, রিয়াজুল হান্নান ও মেয়ে শারমিন হান্নান সুমিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
আগামীকাল শুক্রবার ৩০ সেপ্টেম্বর গাজীপুরের কাপাসিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পরে বাদ জুম্মা গ্রামের বাড়ি ঘাগুটিয়ার চালা বাজারে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরাস্থানে দাফন করা হবে। এদিকে দলের প্রিয় নেতা আ স ম হান্নান শাহ মৃত্যুতে বিএনপি চারদিন ব্যাপী শোক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১১ সেপ্টেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য হান্নান শাহকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়।এরআগে ৬ সেপ্টেম্বর হার্ট অ্যাটাকে গুরুতর অসুস্থ হলে তাঁকে সামরিক হাসপাতাল সিএমএইচে ভর্তি করা হয়।ওখান থেকে ডাক্তারের পরামর্শে সাবেক সেনা এই সদস্যকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়।
১৯৪২ সালে গাজীপুরে কাপাসিয়ার ঘাগুটিয়াতে জন্ম গ্রহণ করেন সদ্য প্রয়াত আ স ম হান্নান শাহ।তাঁর বাবা ফকির আব্দুল মান্নান ১৯৬৫-৬৮ পর্যন্ত পাকিস্তান সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। হান্নান শাহ’র ছোট ভাই শাহ আবু নঈম মোমিনুর রহমান সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ট বিচারপতি ছিলেন।