Thu. Apr 10th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

মুনিয়ার মৃত্যু: নুসরাতের অভিযোগ অসত্য প্রমাণিত

বহুল আলোচিত মুনিয়ার মৃত্যুর ব্যাপারে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ। গুলশান থানা মুনিয়ার আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলায় পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে আদালতে। আগামী ২৯ জুলাই এই প্রতিবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। পুলিশের রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, মুনিয়ার আত্মহত্যার প্ররোচনার জন্য যাকে আসামি অভিযুক্ত করা হয়েছে তিনি আদতেই অভিযুক্ত নন এবং আত্মহত্যার প্ররোচনার কোন ঘটনা ঘটেনি। উল্লেখ্য যে, গত ২৬ এপ্রিল গুলশানের একটি বাড়িতে মারা যান মুনিয়া। মুনিয়ার মৃত্যুর পরপরই তড়িঘড়ি করে তার বোন নুসরাত তানিয়া আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন গুলশান থানায়। অভিযোগ একজনকেই তিনি অভিযুক্ত করেন। এরপর পুলিশ দীর্ঘ তদন্ত করে। প্রায় তিন মাস তদন্ত করে পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে যে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এই আত্মহত্যা প্ররোচনার জন্য সংশ্লিষ্ট অভিযুক্তর কোন দায় পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য যে, নুসরাত শুরু থেকেই এই মামলাটি করেছিলেন উদ্দেশ্যমূলকভাবে এবং মামলা করতে গিয়ে তিনি অনেক প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিশেষ করে যে সমস্ত অভিযোগ তিনি দিয়েছিলেন সেই সমস্ত অভিযোগগুলো সবই দুরভিসন্ধিমূলক, প্রতারণামূলক এবং বিশেষ ব্যক্তিকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যই করেছিলেন বলে পুলিশ তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। নুসরাত এই মামলাকে ব্যবহার করে সরকার এবং বিভিন্ন মহলকে চাপে ফেলার কৌশল গ্রহণ করেছিলেন। এই মামলায় তিনি যে সমস্ত তথ্য উপাত্ত দিয়েছিলেন তার অধিকাংশই অসম্পূর্ণ, মিথ্যা। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলায় সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ থাকতে হয়। এই তথ্য প্রমাণের মধ্যে রয়েছে, যিনি আত্মহত্যা করেছেন তার সঙ্গে সর্বশেষ কার কথোপকথন হয়েছে, তিনি সরাসরি ওই ব্যক্তির কাছে গিয়েছিলেন কিনা। যার বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে তিনি সরাসরি আত্মহত্যাকারীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন কিনা, কথা বলেছিলেন কিনা এবং এমন কোন আলামত যেটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করে যে আত্মহত্যাকারী ব্যক্তি ওই বিশেষ ব্যক্তির প্ররোচনায় আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু মুনিয়ার মামলা তদন্ত করতে যেয়ে পুলিশ দেখেছে যে, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে তার সঙ্গে মুনিয়ার মাস তিনেক সম্পর্ক ছিলই না। বরং মুনিয়ার বোন মুনিয়াকে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করেছিলেন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য এবং সে কারণে মুনিয়ার মধ্যে এক ধরনের হতাশা তৈরি হয়েছিল।

পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন দেখা যাচ্ছে যে, ২৬ এপ্রিল মুনিয়া মারা যাওয়ার পর প্রথম সেখানে আসেন মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত তানিয়া। নুসরাত তানিয়াকে মুনিয়াই ডেকে নিয়ে আসেন কিন্তু সেই সময় নুসরাত তানিয়া বার বার বিলম্ব করছিলেন। কেন বিলম্ব করেছিলেন সেটি একটি বড় প্রশ্ন হয়ে উঠেছে। তাছাড়া, নুসরাত তানিয়া যে সমস্ত অভিযোগ করেছেন সে সমস্ত অভিযোগের কোনো সত্যতা পুলিশি তদন্তে পাওয়া যায়নি। একই সাথে মুনিয়ার বোন যে সমস্ত তথ্য উপাত্ত আলামত দিয়েছেন তার অধিকাংশই মিথ্যা, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন হিসেবে প্রমাণিত। উল্লেখ্য যে, মুনিয়ার আত্মহত্যার ঘটনার পরপরই নুসরাত মাঠে নামেন এবং তিনি বিভিন্ন মহলকে নিয়ে একের পর এক সংবাদ সম্মেলন এবং নানারকম টকশোতে অংশগ্রহণ করে সরকারের বিরুদ্ধে এক ধরনের প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু এখন মামলার তদন্ত শেষে দেখা গেল যে, নুসরাত তানিয়া ব্যক্তিগত অভিলাষ চরিতার্থ করার জন্য এবং কাউকে ফাঁসিয়ে নিজে লাভবান হওয়ার জন্য বা ব্ল্যাকমেইলিং-এর জন্যই এ ধরনের মামলা করতে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন। এখন এই চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে এই মামলার ভবিষ্যৎ নিষ্পত্তি হবে।