খোলা বাজার২৪, শনিবার, ৫ নভেম্বর ২০১৬ :
ইংল্যান্ডকে স্পিনজালে আটকানোর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু স্বাগতিক দল কি আগে থেকেই কখনো প্রতিপক্ষকে আটকানোর কৌশলটা বলে দেয়? বালক-বীর মেহেদী হাসান এসেই চমকে দিলেন। কিন্তু এর পর থেকে তাঁকে নিয়ে সারা দেশে যা হচ্ছে, তা কি ঠিক? চন্ডিকা হাথুরুসিংহে নিঃসন্দেহে সফল কোচ। কিন্তু সবকিছুতেই তাঁকে অবাধ স্বাধীনতা দিয়ে দেওয়াটা কি ভালো? মিরপুরে গত পরশু দেওয়া দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে এ রকম আরও অনেক প্রশ্নেরই উত্তর দিয়েছেন টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম।
মাঝখানে ১৫ মাস টেস্ট খেলেনি বাংলাদেশ। তারপরও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এত ভালো খেলা কীভাবে সম্ভব হলো?
মুশফিকুর রহিম: ইংল্যান্ডের সঙ্গে জেতা বা ভালো খেলার চেয়ে বড় ব্যাপার ছিল, ১৫ মাস পর টেস্ট খেলতে নেমেও যেন আমরা ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলতে পারি। আমাদের প্রস্তুতি ভালো ছিল। দীর্ঘ পরিসরের ম্যাচ না খেললেও প্রায় সবাই খেলার মধ্যে ছিল। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, আমাদের খুব ভালো পরিকল্পনা ছিল, যেটা আমরা কাজে লাগাতে পেরেছি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে উইকেট কী রকম হবে, একাদশ কী হবেৃসিরিজের দুই মাস আগে থেকেই এসব নিয়ে পরিকল্পনা শুরু হয়। মিরাজ টেস্ট খেলবে, এই পরিকল্পনাও আগে থেকেই ছিল। ওদের দলে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান অনেক। অন্যদিকে মিরাজের চেয়ে ভালো অফ স্পিনার বাংলাদেশে এখন নেই। সে জন্য আমাদের সিদ্ধান্ত ছিল, যত ভালোই খেলুক ওয়ানডেতে ওকে খেলাব না। টেস্টে ইংল্যান্ডকে একটা বিস্ময় উপহার দিতে চেয়েছিলাম আমরা। মিরাজই সেই বিস্ময়। আল্লাহর রহমতে আমাদের পরিকল্পনা সফল হয়েছে।
* এ রকম সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে আগে কখনো খেলেছেন? ১৫ মাস পর খেলা সিরিজকে কেন বেছে নিলেন এটার জন্য?
মুশফিক: খেলোয়াড়, টিম ম্যানেজমেন্ট—সবাই মিলে ভেবে দেখলাম, আর কত দিন এ রকম ফ্ল্যাট উইকেটে খেলব! আমাদের শক্তির জায়গাটাই যদি কাজে লাগাতে না পারি তো কীভাবে হবে? ফ্ল্যাট উইকেটে স্পিন করানো খুব কঠিন। বিশেষ করে প্রথম দুই-তিন দিন। শেষ দুই দিনের অপেক্ষায় থাকতে হয়। আর ওরা যদি টসে জিতে আগে ব্যাটিং নিয়ে ৪৫০-৫০০ রান করে ফেলে আমরা ওখান থেকেই অনেক ব্যাকফুটে চলে যাব। সে জন্যই মনে হলো, এবার একটু পরিবর্তন করে দেখি কী হয়। প্রথমে সিনিয়র খেলোয়াড়েরা একমত হলো, হয়তো কষ্ট হবে রান করতে। তবু চেষ্টা করে দেখি। এত দিন একভাবে করে সাফল্য পাইনি। এবার নিজেদের শক্তি কাজে লাগিয়ে দেখি কী হয়।
* পরিকল্পনাটা প্রথম কার মাথা থেকে আস্তে আপনি নাকি বলেছিলেন, তিন দিনে খেলা শেষ হয়, এমন উইকেট চানৃ
মুশফিক: যেদিন জানলাম ইংল্যান্ড নিশ্চিত আসছে, আমরা সিনিয়র খেলোয়াড়েরা তখনই পরিকল্পনা করি, তিন দিনের একটা উইকেট বানিয়ে খেলা যায় কিনা। আমি কথাটা কোচকে বলি। কোচেরও আইডিয়াটা খুব পছন্দ হয়।
* অনেক দিন ধরেই তো দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন আপনি। আগের টেস্টগুলোর চেয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই দুই টেস্টে খেলোয়াড়দের মানসিকতায় কী পরিবর্তন লক্ষ করেছেন?
মুশফিক: সবচেয়ে বড় হলো আত্মবিশ্বাস। ভালো করার জন্য যে টেস্টেই আপনাকে নিয়মিত ভালো খেলতে হবে, এমন নয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাঁচ-ছয় মাস ভালো খেললে এমনিতেই আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়। গত এক-দেড় বছরে আমরা ওয়ানডে খুব ভালো খেলেছি। টি-টোয়েন্টিও খারাপ খেলিনি। সে জন্যই দলের মধ্যে বিশ্বাসটা ছিল। এই জিনিসগুলোই যদি আমরা লম্বা সময় ধরে করতে পারি, টেস্টেও কেন ভালো ফল হবে না? এ ছাড়া পুরো সিরিজে সিনিয়ররা যেভাবে জুনিয়রদের সাহায্য করেছে, এটা বিশাল ব্যাপার। মিরাজও বলেছে, ওর কখনো মনেই হয়নি ও জাতীয় দলে খেলছে।
* মিরাজের ওপর আপনাদের অনেক বেশি আস্থা ছিল। আপনারা যেন একরকম নিশ্চিতই ছিলেন যে, মিরাজ এসেই ভালো করবেন। দলের পরিকল্পনারও বড় অংশ ছিলেন
তিনি। মাত্র ১৯ বছর বয়সী নতুন একজন খেলোয়াড়ের ওপর এত আস্থার কারণ কী?
মুশফিক: মিরাজ যা করেছে তার পুরো কৃতিত্ব ওরই। ক্রিকেটে ভাগ্য না থাকলে কিছু হয় না, তবে সে যেভাবে বল করেছে, নিজের শক্তির দিকটা কাজে লাগিয়েছে, এগুলোর কৃতিত্ব শুধু তারই প্রাপ্য। ওর সম্পর্কে আমাদের এ রকমই ধারণা ছিল, বিশ্বাস ছিল সে এ রকম কিছু করে দেখাবে।
* এখন থেকে কি সব সিরিজেই বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামবেন?
মুশফিক: আমরা এখন যে পর্যায়ে আছি, এ রকম নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়েই খেলা উচিত। আমাদের জন্য এখন বড় চ্যালেঞ্জ দেশের বাইরে ধারাবাহিক ভালো খেলা। সে ক্ষেত্রে কন্ডিশন অনুযায়ী দলের কম্বিনেশনও অন্য রকম হতে হবে।
* অধিনায়কত্ব কেমন উপভোগ করছেন?
মুশফিক: অবশ্যই খুব উপভোগ করছি। ১৫ মাস পর টেস্ট খেলতে নেমে আমরা ভালো খেলেছি, সে জন্যই বেশি ভালো লাগছে। আরও ভালো লাগছে আমার ৫০তম টেস্টে আমরা জিতেছি বলে। এর চেয়ে ভালো আর কী হতে পারে! হয়তো আমি খুব বেশি অবদান রাখতে পারিনি। কিন্তু এমনও তো হতে পারত, আমি সেঞ্চুরি করলাম আর দল হারল। সেটা কোনোভাবেই ভালো হতো না।
* নিজের এই ৫০ টেস্টের ক্যারিয়ার নিয়ে কতটা সন্তুষ্ট?
মুশফিক: অবশ্যই আরও ভালো কিছু করা উচিত ছিল আমার। ৫০টির মধ্যে ২০-৩০টিতেই মনে হয়েছে এ বুঝি আমার প্রথম টেস্ট! অনেক সময় কীভাবে টেস্ট খেলতে হয় সেটাই বুঝতে পারিনি বা বুঝতে অনেক সময় লেগেছে। নিয়মিত টেস্ট খেললে হয়তো এত বেশি সময় লাগত না। অনেকে সহজে মানিয়ে নিতে পারে, তবে আমার একটু সমস্যাই হয়। অবশ্য কয়েক বছর ধরে যেভাবে খেলছি, সেটা ধরে রাখতে পারলে ক্যারিয়ার শেষে অত বেশি আফসোস থাকবে না, ইনশা আল্লাহ।
* ক্যারিয়ার শেষে টেস্টে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
মুশফিক: ওয়ানডে, টেস্ট দুটি মিলিয়ে রানের গড় অন্তত ৪০ দেখতে চাই। ইচ্ছা আছে আরও অন্তত ৫০টি টেস্ট খেলার। এটা আমার স্বপ্ন বলতে পারেন।
* একটু অন্য প্রসঙ্গ। স্বাগতিক দলের হোম কন্ডিশনের সুবিধা নেওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেটা নিয়ে স্বাগতিকদের কখনোই প্রকাশ্যে কথা বলতে দেখা যায় না। বাংলাদেশ দলের ক্ষেত্রে এবার দেখা গেল উল্টোটা। উইকেট নিয়ে পরিকল্পনার কথা আপনারা সিরিজের মধ্যে বারবার প্রকাশ্যে বলেছেনৃ
মুশফিক: আমরা এ বিষয়টা প্রথম থেকে বলার চেষ্টা করেছি এই কারণে, ওরা যেন এ নিয়ে অনেক ভয়ে থাকে। আপনি যখন একজন খেলোয়াড়কে বারবার বলবেন এই উইকেটে এই হয়, বা উইকেটটা ও রকম হতে পারে, যত বড় ব্যাটসম্যানই হোক, অবচেতনে নার্ভাসনেস কাজ করবেই। কুকের খেলা দেখে তাই মনে হয়েছে। উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়ে আমার মনে হয়েছে, টেস্টে ১০ হাজার রান করে ফেললেও কুক জানে না নতুন বলে অফ স্পিন কীভাবে খেলতে হয়। তারা যেহেতু স্পিনে দুর্বল, আমরা আমাদের স্পিনশক্তির কথাই তাদের আগে থেকে জানাতে চেয়েছি। আর আমরা যখন ইংল্যান্ডে যাই জীবনেও কিন্তু আমরা আশা করি না যে ফ্ল্যাট উইকেট হবে।
* তবু তারা তো কখনো মুখে বলে না যে, বাংলাদেশের জন্য ফাস্ট-বাউন্সি উইকেট বানানো হচ্ছে। উইকেট ও রকম হবে এটা আপনারা অভিজ্ঞতা থেকেই বোঝেনৃ
মুশফিক: (হাসি) মাঠে কিন্তু ওরা সারাক্ষণই এসব বলতে থাকে। এখানেও খেলার সময় বারবার বলেছে, ‘তোমরা ইংল্যান্ডে আসো। তখন দেখব কেমন খেলো।’ বেয়ারস্টো, স্টোকস অনেকবার বলেছে, ‘ইংল্যান্ডে কিন্তু এ রকম উইকেট কখনো পাবে না।’ তামিমকেও বলেছে, ‘ইংল্যান্ডে আসো। তুমি প্রতি বলে লেগ বিফোর হবে।’ তামিমও জবাব দিয়ে বলেছে, ‘তুমি মনে হয় জানো না ইংল্যান্ডে আমার দুটি সেঞ্চুরি আছে।’ বলতে পারেন এটা একটা মাইন্ড গেম। আমার মনে হয় এটা একটু হলেও ওদের মানসিক চাপে ফেলেছে।
* উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেই আপনি বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন। কিন্তু এবার বলেছেন, টিম ম্যানেজমেন্ট যে ভূমিকায় চাইবে সে ভূমিকায়ই খেলবেন। চিন্তাভাবনায় এই পরিবর্তন কীভাবে এল?
মুশফিক: (হাসি) টিম ম্যানেজমেন্ট যদি ভাবে আমাকে সব বাদ দিয়ে শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতে হবে, আমি তো তাদের ওপরে কিছু বলতে পারব না। তারা আমাদের অভিভাবক। তারা যেটা ভালো মনে করবে তাই হবে।* আপনি নিজে কি এখনো উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেই বেশি স্বচ্ছন্দ?
মুশফিক: তা তো অবশ্যই। এটা আমি সব সময়ই মনে করি এবং সব সময় উপলব্ধিও করি। উইকেটকিপার হিসেবে স্টাম্পের পেছন থেকে যা দেখতে পাই, সেটা আমাকে ব্যাটসম্যান বা অধিনায়ক সবভাবেই অনেক সাহায্য করে। ব্যাটিংয়ের সময় আমাকে কী করতে হবে, সে ধারণাও অনেক সময় আগে থেকে পেয়ে যাই। সব সময় হয়তো সেভাবে রান করতে পারি না, তবে উইকেট সম্পর্কে ধারণাটা সবার আগে আমারই হয়। দলের অন্য ব্যাটসম্যানরা, বিশেষ করে তামিম আমার সঙ্গে আলোচনা করে, জেনে নেয় উইকেটে কী হচ্ছে। কী শট খেলা উচিত।
* কোনো সন্দেহ নেই, চন্ডিকা হাথুরুসিংহে একজন ভালো কোচ। তাঁর অধীনে দল সাফল্যও পাচ্ছে। কিন্তু তাঁকে নিয়ে কিছু নেতিবাচক আলোচনাও আছে। নিজের সিদ্ধান্ত জোর করে চাপিয়ে দিতে চান, বিসিবি তাঁকে অনেক বেশি স্বাধীনতা দিয়েছে ইত্যাদি। এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য?
মুশফিক: কেউ সাফল্য পেলে তাকে তো কৃতিত্ব দিতেই হবে। তবে আমি বলব, হাথুরুসিংহে অনেক সৌভাগ্যবান। কারণ দলে এখন এমন অনেক পারফরমার আছে, যারা নিয়মিত ভালো খেলছে। নতুনরা এসেও ভালো খেলছে। এটা তিন বছর আগেও ছিল না। এখানেও অবশ্য কোচকে কৃতিত্ব দিতে হবে, কারণ নতুন হোক বা অভিজ্ঞ খেলোয়াড় হোক—তিনি স্বাধীনতা দেন। যার যেটা শক্তির জায়গা, সেটা দিয়ে খেলতে বলেন। তাতে কেউ বাজে আউট হলেও কোচ কিছু বলেন না। সৌম্য, সাব্বিরের মতো যারা স্ট্রোক বেশি খেলে তাদের জন্য এটা অনেক বড় স্বাধীনতা। তবে একটা পরিবারের ভেতর তো অনেক কথাই থাকে। বাংলাদেশ দলও একটা পরিবার। পরিবারের যেসব কথা বাইরের মানুষ না জানলেই ভালো, সেগুলো না বলাই ভালো।
* টেস্ট ক্রিকেটে এসেই দুর্দান্ত পারফর্ম করে হইচই ফেলে দিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। সংবাদমাধ্যমসহ সারা দেশ এখন তাঁকে নিয়েই আছে। এটাকে কীভাবে দেখেন?
মুশফিক: একজন ক্রিকেটারের কাজই হলো পারফর্ম করা। এটা অপ্রত্যাশিত কিছু নয়। ভালো খেলবে বলেই তো মিরাজ জাতীয় দলে! তবে হ্যাঁ, সে অবশ্যই বিশেষ প্রতিভা। এসেই দারুণ খেলেছে। তবে এটা নিয়ে যে এত কিছু হচ্ছে, তা আসলেই অপ্রত্যাশিত। ও এখনো ১৯ বছরের একটা বা”চা ছেলে। দুই-তিন বছর টানা ভালো খেলার পর এ রকম হতে পারে, তার আগে নয়। আল্লাহ না করুন, ওর যখন বাজে ফর্মে যাবে, তখন কিন্তু এত কিছু সে পাবে না। চাপটা অন্য রকম হবে। জাতীয় দলে ভালো খেলতে খেলতে আপনার ওপর সবার আস্থা আসবে। তারপর যখন আপনি খারাপ খেলবেন, মানিয়ে নেওয়াটা তখনই বেশি কঠিন। নাসির-সৌম্যরা এখন সেটা বুঝতে পারছে। তবে মোস্তাফিজের ব্যাপারটা পুরোই ব্যতিক্রম। আমার বিশ্বাস, আমার জীবদ্দশায় ওকে আমি কোনো দিন বাজে ফর্মে দেখব না। ওর মধ্যে আল্লাহপ্রদত্ত কিছু একটা আছে। কোনো কিছুই গায়ে মাখে না।
* এ রকম পরিস্থিতিতে মিরাজের জন্য কোনো পরামর্শ?
মুশফিক: প্রত্যাশা যেহেতু বেড়ে গেছে, এখন ওকেই এটা সামলাতে হবে। আমাদের সমর্থন সব সময়ই থাকবে। তবে সবার মনে রাখা উচিত, খেলাটা আমাদের রুটিরুজি, আমাদের দায়িত্ব। ১০ রান করে চলে আসব, সে জন্য আমাকে জাতীয় দলে নেওয়া হয়নি। আমাদের কাজই ৫০ করা, ১০০ করা। মিরাজেরও কাজ ৫ উইকেট নেওয়া, ১০ উইকেট নেওয়া। এটুকু করার পরই এত কিছু হলে সেটা ওই খেলোয়াড়ের ওপরই বাড়তি চাপ তৈরি করে। এখন তো ও কোথাও গেলে শান্তিমতো ঘুরতে পারবে না!