খােলা বাজার২৪। সোমবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮: তাকে যখন লাঠি আর লোহার রড দিয়ে পেটানো হচ্ছিল, তখন গভীর রাত। গভীর কালো অন্ধকার, তার চিৎকার শুনেছিল। কোনো মানুষের কানে কি সেই চিৎকার পৌঁছেছিল? পাশের রুমের শিক্ষার্থীরা কি শুনেছিল, তার আহাজারি-গোঙানির শব্দ? না শোনার কথা নয়। শুনলেও সম্ভব ছিল না, লাঠি আর লোহার রড থেকে তাকে রক্ষা করা। কোনো শিক্ষার্থীর পক্ষে সম্ভব ছিল না, শিক্ষককে বিষয়টি জানানো? শিক্ষার্থীদের কেউ কাজটি করেনি। হয় তাদের সাহস হয়নি, অথবা তাদের বিবেক চিৎকার-আর্তনাদে কেঁপে ওঠেনি।
এখনও ফুল ফোটা পাখি ডাকা ক্যাম্পাসে, শিক্ষকরা নিশ্চয় গভীর ঘুমে ছিলেন তখন। কারও কারও হয়তো ঘুম ভেঙেছিল শিশু সন্তানের কান্নায়। কেউ হয়তো কথা বলছিলেন স্ত্রীর সঙ্গে। শিক্ষকদের সন্তানরা কেউ হয়তো ঘুমে, কেউ হয়তো ব্যস্ত সময় পার করছিলেন ভার্চুয়াল জগতে। গ্রাম থেকে আসা অতি সাধারণ একটি ছেলের আহাজারি, তাদের কারও কান পর্যন্ত পৌঁছানোর কথা নয়। পৌঁছলেও তা তাদের নির্বিকারত্বের অবসান ঘটাতে সক্ষম হতো বলে মনে হয় না।
বলছি এহসান রফিকের কথা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এহসান রফিকের কথা। একটি মাত্র ক্যালকুলেটর তার জীবনকে প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছে। মুখ ক্ষত-বিক্ষত, বিকৃত, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, চোখের কর্নিয়া ক্ষতিগ্রস্ত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাকে নির্যাতন করেছে। কিল-ঘুষির পাশাপাশি লাঠি এবং লোহার রড দিয়ে তাকে পিটিয়েছে।