Tue. Apr 22nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার ২৪,শনিবার,০২নভেম্বর,২০১৯ঃ ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের মেমোরিয়াল স্লোন ক্যাটারিং ক্যান্সার সেন্টারে চিকিৎসাধীন খোকার শারীরিক অবস্থা পরিবর্তনের আশা ছেড়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এদিকে আজ সকালে খোকার মৃত্যু নিয়ে গুজব রটানো হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিভিন্ন পেশাজীবীর লোকজন থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন স্থানের সাংবাদিক-আইনজীবীদের ফেসবুক ওয়ালেও ঠাই পেয়েছে এমন গুজবের।

তবে খোকার বিষয়ে মৃত্যুর ভুয়া তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে না ছড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন তার ছেলে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। তিনি বলেছেন, বাবা (সাদেক হোসেন খোকা) এখনও বেঁচে আছেন। দশদিন যাবৎ হসপিটালে ভর্তি আছেন তিনি।

খোকার ছেলে আরও জানান, বাবার অবস্থা খুবই গুরুতর। বেশ মুমূর্ষু অবস্থায় আছেন তিনি। চিকিৎসক বলেছেন তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এদিকে শুক্রবার (১ নভেম্বর) রাতে নিউইয়র্ক থেকে পাঠানো এক আবেগঘন ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা জানান।

ইশরাক হোসেন বলেন, মৃত্যুর বিষয়ে যেটা ছড়ানো হয়েছে সেটা আসলেই গুজব। সে রকম কিছু এখনও হয়নি। এটা হলে-তো লুকানোর কিছু নেই।

তিনি বলেন, উনি (সাদেক হোসেন খোকা) একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। চারবার নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য। দুই বার কেবিনেট মন্ত্রী ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি অবিভক্ত ঢাকার মেয়র, কেবিনেট মন্ত্রী ও অবিভক্ত ঢাকা মহানগর বিএনপির সভাপতি পদে ছিলেন। সুতরাং লুকানো-চাপানোর কিছু নেই। হায়াত-মউত আল্লাহর হাতে। যদি সে রকম কোনো পরিস্থিতি হয় সেটা অবশ্যই জাতীয়ভাবে নিউজ হবে। তবে এখন আমি যেটা বলতে পারি তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছেন। ওনাকে বিভিন্ন রকম ওষুধ দিয়ে কমফোর্টেবল রাখা হয়েছে।

ইশরাক আরও বলেন, ওনার ক্যান্সারের যে ট্রিটমেন্ট চলছিল সেটা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ক্যান্সারের ট্রিটমেন্ট দেয়ার মতো আর পরিস্থিতি নেই। এখান থেকে ফিরে আসাটা আল্লাহর ওপর নির্ভর করছে।

সাদেক হোসেন খোকা গত তিনদিন ধরে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের স্লোয়ান ক্যাটারিং ক্যান্সার সেন্টারে চিকিৎসাধীন খোকার শারীরিক অবস্থা পরিবর্তনের আশা ছেড়ে দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তারা খোকার সব চিকিৎসা বন্ধ করে দিয়েছেন।

খোকার জীবনের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে দেশে নেওয়াও পরিবারের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। পাসপোর্ট না থাকায় দেশে ফিরতে পারছেন না তিনি। পরবর্তী সময়ে কী হবে, এ নিয়ে স্বজনেরা বিভ্রান্তিতে আছেন।

ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য ২০১৪ সালের ১৪ মে সপরিবারে নিউইয়র্ক যান খোকা। তারপর থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সে থাকছেন তিনি।

সূত্র জানায়, লাগাতার ওষুধ সেবনের কারণে খোকার মুখে ঘা হয়ে গেছে। তিনি খাবার খেতে পারছিলেন না বিধায় স্লোয়ান ক্যাটারিং ক্যান্সার সেন্টারে ভর্তির পর গত ২৭ অক্টোবর তার ফুসফুসে একটি ছোট অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর তাকে চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে ওই হাসপাতালেই।

গত ১৮ অক্টোবর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৩১ অক্টোবর থেকে তার অবস্থার আরও অবণতি হয়।

২০০২ সালের ২৫ এপ্রিল অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন খোকা। ২৯ নভেম্বর ২০১১ সাল পর্যন্ত টানা ১০ বছর বিএনপি ও আওয়ামী লীগের শাসনামলে ঢাকা মহানগরের মেয়র ছিলেন তিনি।

মুক্তিযোদ্ধা খোকা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বাধীন ন্যাপ থেকে বিএনপিতে এসেছিলেন শুরুতেই। ব্রাদার্স ইউনিয়নের সূত্রে বিএনপির ঢাকা মহানগরের সাবেক সভাপতি খোকার ক্রীড়া সংগঠক হিসেবেও পরিচিত রয়েছে।