তোফাজ্জল হোসেন ঃ নরসিংদী শহর সংলগ্ন হাজীপুর ইউপি মেম্বার ও বিশিষ্ট কাঠ ব্যবসায়ী সুজিৎ সুত্রধর সন্ত্রাসী হামলায় মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। সন্ত্রাসীরা তাকে নির্মমভাবে হাতুড়ী পেটা করে সারা শরীর তুলোধূনা করে দিয়েছে। কিছুদিন পূর্বে পুত্র সুজন সুত্রধরকে মারধোরের ঘটনায় মামলা করায় ¶িপ্ত হয়ে হাজীপুর এলাকার আজমল বাহিনী তার উপর এই হামলা চালিয়েছে। আশংকাজনক অবস্থায় সুজিৎ মেম্বারকে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
সুজিৎ মেম্বারের পারিবারিক সূত্র ও এলাকাবাসী জানিয়েছে, নরসিংদী শহর সংলগ্ন হাজীপুর শিল্পএলাকায় আজমল বাহিনীর চাঁদাবাজী, সন্ত্রাস ও অত্যাচার সীমাহীন পর্যায়ে পৌছেছে। গত কিছুদিন পূর্বে এক লাখ টাকা চাঁদা না দেয়ায় আজমল ও তার বাহিনীর লোকেরা সুজিৎ মেম্বারের পুত্র সুজন সূত্রধরকে বেধড়ক মারধোর করে। মারাত্মক আহত অবস্থায় সে এখন নরসিংদী জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। পুত্র সুজনের উপর হামলার ঘটনায় সুজিৎ মেম্বার বাদী হয়ে নরসিংদী সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান ও কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তি ঘটনা মিমাংসার নামে মামলাটি থানা থেকে তুলে আনার জন্য সুজিৎ মেম্বারের উপর চাপ সৃষ্টি করে। এ ঘটনা বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হবার পর সন্ত্রাসী আজমল, তার বাহিনী ও তার গডফাদাররা মারাত্মকভাবে ¶িপ্ত হয়। গত রবিবার বেলা সাড়ে ১১ টায় সুজিৎ মেম্বার হাজীপুর বাজারে তার কাঠের দোকানে গেলে বদু মেম্বারের নেতৃত্বে আজমল বাহিনীর ১২-১৩ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী দোকানের ভিতর ঢুকে তার উপর হামলা চালায়। সেখানে তারা সুজিৎ মেম্বারকে মারধোর করতে থাকলে বাজারের লোকজন দৌড়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসতে থাকে। এ অবস্থায় সন্ত্রাসীরা বাজারের লোকজনকে গুলি করার হুমকি দেয়। এ অবস্থায় লোকজন পিছু হটে গেলে সন্ত্রাসীরা সুজিৎ মেম্বারকে তার দোকান থেকে বের করে মারতে মারতে হত্যার উদ্দেশ্যে নগ্ন করে হাজীপুর এলাকার আনসার ক্যাম্পের মাঠের কোনায় নিয়ে যায়। তারা সেখানে সুজিৎ মেম্বারকে হাতুড়ী ও ইট দিয়ে ছেঁচে তার সারা শরীর তুলাধুনা করে ফেলে। এ অবস্থায় খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যেতে থাকলে সন্ত্রাসীরা তাকে অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে চলে যায়। পরে সেখানকার লোকজন তাকে দ্র“ত নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে।
খবর পেয়ে নরসিংদী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মনজুর এলাহী, সদর মডেল থানার ওসি আবুল কাসেম তাকে দেখার জন্য হাসপাতালে যান।
এদিকে সুজিৎ মেম্বারের পরিবারের লোকজন জানিয়েছে, গত ২ সেপ্টেম্বর সুজিৎ মেম্বারের দায়ের করা মামলাটি নরসিংদী মডেল থানা কর্তৃপ¶ এখনও র“জু করেননি।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যš— মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
বলাবাহুল্য যে, এলাকার লোকজন জানিয়েছে, ২০০৮ সালে হাজীপুর ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম ও তার ছোট ভাই রিপনকে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলা থেকে আসামীদেরকে অব্যাহতি দেয়ার পর থেকে হাজীপুর এলাকা সন্ত্রাসীদের এক অভয়ারন্যে পরিনত হয়েছে।
(খোলাবাজার/জিএম/০৭-০৯-২০১৫)