Thu. May 8th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪ ॥ মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫
24মাত্র তিনদিনেই দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে চলাচলকারী কোচ ও বাসের সব আগাম টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। যারা সংগ্রহ করতে পারেননি তাদের এখন যুদ্ধ করতে হবে ট্রেনের টিকিটের জন্য। যে যুদ্ধ চলমান। যে যুদ্ধ বহমান। আর কত বছর এ যুদ্ধ করতে হবে তাও জানে না দেশবাসী। আবার সড়ক দূর্ঘটনা। আবার লঞ্চ ডুবি। ঈদ সুখের বার্তা নিয়ে আসার কথা থাকলেও প্রতিবছর দেশবাসীর জন্য আতঙ্কে পরিনত হয় এ ঈদ। শান্তিমতো একটি ঈদও উৎযাপন করতে পারে না দেশবাসী। মাকে দেখার জন্য এ যুদ্ধ আর কতো দিন চলবে তাও জানে না কেউ। গত ১১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার থেকে রাজধানীর গাবতলী, শ্যামলী ও কল্যাণপুর থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হয়। তবে সায়েদাবাদ কিংবা মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে চলাচলকারী কোনো বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হয়নি। কাউন্টার খোলার তখনও আধঘণ্টা বাকি। এর আগেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে কমলাপুর রেলস্টেশন। স্টেশনের দীর্ঘ সারিগুলোই যেনো বলছে, দুয়ারে ঈদ উৎসব। ঈদে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কিনতে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে দেখা গেছে সেই চিরচেনা দৃশ্য। টিকিট পেতে সেই সংগ্রাম। ঈদের আগে কমলাপুর স্টেশনে এমন দৃশ্যই গতানুগতিক। অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায়। কিন্তু বরাবরের মতোই এর কয়েকঘণ্টা আগে কাউন্টারের সামনে অবস্থান নিয়েছেন শতাধিক মানুষ। সকালে যখন কাউন্টার খোলা হলো, টিকিটের আশায় তখন লাইনে দাঁড়িয়ে হাজারো মানুষ। ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও সিলেটেও এ দিন রেলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়েছে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি। এদিন ২০ সেপ্টেম্বরের টিকিটের জন্যই লাইনে দাঁড়িয়েছেন ঘরমুখো মানুষ। টিকিট বিক্রি চলবে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। আর ফিরতি টিকিট ২৩ সেপ্টেম্বর বিক্রি শুরু হয়ে ২৭ সেপ্টেম্বর শেষ হবে। কমলাপুর স্টেশন সূত্র জানায়, ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে বিক্রি হচ্ছে ২০ সেপ্টেম্বরের টিকিট। এছাড়া ১৬ সেপ্টেম্বর বিক্রি হবে ২১ সেপ্টেম্বরের, ১৭ সেপ্টেম্বর ২২ সেপ্টেম্বরের, ১৮ সেপ্টেম্বর ২৩ সেপ্টেম্বরের এবং ১৯ সেপ্টেম্বর ২৪ সেপ্টেম্বরের অগ্রিম টিকিট দেওয়া হবে। একইভাবে ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে পাওয়া যাবে ফিরতি টিকিট। এদিন বিক্রি হবে ২৭ সেপ্টেম্বরের টিকিট। ২৪ সেপ্টেম্বর বিক্রি হবে ২৮ সেপ্টেম্বরের, ২৫ সেপ্টেম্বর বিক্রি হবে ২৯ সেপ্টেম্বরের, ২৬ সেপ্টেম্বর ৩০ সেপ্টেম্বরের টিকিট এবং ২৭ সেপ্টেম্বর বিক্রি হবে ১ অক্টোবরের টিকিট। কমলাপুর স্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী জানান, প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ঈদুল আজহার অগ্রিম টিকিট দেওয়া হবে। একজন যাত্রী সর্বো”চ ৪টি টিকিট কিনতে পারবেন। ঈদের সময় বিক্রির টিকিট ফেরত দেওয়া হবে না বলে জানান তিনি। জানা গেছে, বর্তমানে রেলের মোট ৮৮৬টি কোচ রয়েছে। ঈদ উপলক্ষে ১৩৮টি কোচ ঈদের আগেই ট্রেনের বহরে যুক্ত হবে। ১৯৯টি ইঞ্জিন চালু রয়েছে; ঈদ সামনে রেখে মেরামতকৃত আরো ২৫টি বহরে যুক্ত হবে। রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতিদিন সারাদেশে এক লাখ ৮০ হাজার টিকিট ইস্যু করা হয়। ঈদ মৌসুমে অতিরিক্ত চাপ সামলাতে প্রতিদিন সব ট্রেন মিলিয়ে দুই লাখ ৫০ হাজার টিকিট বিক্রি করা হবে। এছাড়া ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন রুটে পাঁচ জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানো হবে। এই ট্রেনগুলো ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ, ঢাকা-খুলনা, চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রুটে ঈদের আগে তিন দিন এবং ঈদের পরে সাতদিন চলবে। এছাড়া ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ শোলাকিয়া রুটে ঈদের দিন দুই জোড়া স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে। এর আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর রেলমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়রোধে সতর্ক রয়েছি। এবারও ঈদে ট্রেন চলাচল নির্বিঘেœ করতে রেলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। যাত্রী নিরপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি ছাড়াও রেলওয়ের দু’টি নিরাপত্তা বাহিনী যাত্রীদের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে। যেখানেই যাত্রী হয়রানি, অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা দেখা যাবে সেখানেই যাত্রীদের নিরাপত্তায় সক্রিয় হবে এসব নিরাপত্তা বাহিনী।