খোলা বাজার২৪ ॥ শুক্রবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫
আমার একটি ছবি প্রচারিত হচ্ছে বলে আমি সম্প্রতি জেনেছি। ছবিতে দেখা যাচ্ছে যে আমি রাস্তায় হাঁটছি। আমার আশেপাশে দু’চারজন ছাত্র, আমার কানে মোবাইল ফোন। ছবিটি ১০ সেপ্টেম্বর সম্ভবত স্টেট ইউনির্ভাসিটির সামনে থেকে তোলা, সেখানে তখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবিতে সমবেত হয়েছিল। এই ছবির সূত্র ধরে দাবি করা হয়, এই আন্দোলনে আমার ‘ম“’ বা ‘অংশগ্রহণ’ ছিল। আমি সবিনয়ে জানাচ্ছি যে এটি সত্যি নয়। আমি শিক্ষার উপর ভ্যাট আরোপের বিরোধিতা করি নৈতিকভাবে। এই ভ্যাট যে অন্যায় ও অগ্রহণযোগ্য আমি তা ব্যাখ্যা করে প্রথম আলোতে অগাস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে দুটো লেখা লিখি। কিন্তু তাই বলে আমি ভ্যাট প্রত্যাহারে ছাত্রদের রাস্তার আন্দোলনে কোনভাবে সম্পৃক্ত ছিলাম না। ছাত্রদের কোন সমাবেশে আমি অংশগ্রহণও করিনি। শিক্ষক হয়ে ছাত্রদের সমাবেশে উপস্থিত হওয়ার মনোবৃত্তিও আমার নেই। তাহলে আমার ছবিটি এলো কোত্থেকে? আমাকে তাহলে সেদিনের ঘটনা একটু বিস্তারিত বলতে হবে। গত বৃহস্পতিবার ১০ সেপ্টেম্বর এগারটা থেকে প্রায় সোয়া বারোটা পর্যন্ত আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে মাস্টার্সের ছাত্রদের ক্লাশ নেই। এরপর আমার মেয়েকে বেলা ১টার দিকে ধানমন্ডি ১১/এ তে অবস্থিত তার স্কুল থেকে তুলে তাড়াতাড়ি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে রওয়ানা দেই। আমি স্টেট ইউনির্ভাসির্টিতে আইন বিভাগে খন্ডকালীন এডভাইসর হিসেবে কাজ করি। সেদিন আইন বিভাগে প্রভাষক নিয়োগের জন্য সিলেকশন বোর্ড বসার কথা ছিল। এই বিভাগের এডভাইসর হিসেবে সিলেকশন বোর্ডে থাকতে হবে বলেই আমি সেদিন সেখানে যাই। কিন্তু দেখি আমার গাড়ী আবাহনী মাঠের পর আর আগেই বাড়ছিল না। অবশেষে আমি মেয়েকে নিয়ে হেটে কোনমতে স্টেট ইউনির্ভাসিটিতে আসি। কাজ সেরে বিকেল তিনটার দিকে বের হয়ে দেখি চারপাশ সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ। আমার গাড়ী আটকে আছে কয়েক বিল্ডিং পড়ে একটি ব্যাংকের সামনে। সাতমসজিদ রোডের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্ররা তখন বিপুল সংখ্যায় রাস্তায় নেমে এসেছে তাদের উপর আরোপিত ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবিতে। অনেক বলে-কয়ে, আমার ক্লাশ টু-তে পড়া মেয়ের কষ্টের কথা বলে, আমার গাড়ী উল্টেদিকের ব্যারিকেডের ফাঁক গলে বের করতে সমর্থ হই। আমার ধারনা ছাত্রদেরকে আমার গাড়ী ছেড়ে দিতে রাজী করানোর পর ফোনে যখন আমার গাড়ীর ড্রাইভারকে খুজছিলাম তখনি ছাত্রদের সঙ্গে আমার ছবিটি কেউ তোলে। পরে ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া হয়। সেখান থেকেই এই ভুল ধারনার জন্ম নেয় যে আমি ছাত্রদের ভ্যাটবিরোধী সমাবেশে অংশ নিয়েছি! আমি আশা করবো সেদিনের ঘটনার বিবরণের পর ছবিটি নিয়ে সকল ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটবে।