কামরুল হাসান, ঠাকুরগাঁও, খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ বথপালিগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আজ ও পর্যন্ত কোনো উন্নয়ন হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, ভাঙা স্কুল ঘর, অপর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ এবং অফিস ঘর না থাকায় সীমাহীন কষ্টে পাঠকার্যক্রম চালাতে হচ্ছে বিদ্যালয়টির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের।
মূল স্কুলঘরে বাঁশের বেড়া ও টিনের চাল থাকলেও বারান্দায় রয়েছে খড়ের ছাউনি। ছাউনির এখানে-সেখানে ভেঙে গেছে। বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে। সেদিন আর ক্লাস হয় না।
সম্প্রতি ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, টিনের চালা ঘরে ক্লাস চলছে। সেদিন প্রচণ্ড রোদ থাকায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম ছিল। তৃতীয় শ্রেণির ২২ জনের মধ্য পাঁচ জন, চতুর্থ শ্রেণির ১৭ জনের মধ্যে চার জন এবং পঞ্চম শ্রেণির মাত্র একজন শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ে উপস্থিত দেখা গেছে।
চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র আবিদ বলে, “প্রচণ্ড রোদ বা একটু বৃষ্টিতেই অনেকে স্কুলে আসে না। বৃষ্টির দিনে আমিও স্কুলে আসি না। স্যাররা ক্লাস নিতে পারেন না। চাল থেকে পানি পড়ে বই ভিজে যায়।”
তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী গণেশ জানায়, বৃষ্টি হলে ওরা স্কুলের পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। বৃষ্টি শেষে বেঞ্চ ভেজা ও শ্রেণিকক্ষে কাদা থাকায় সেদিন আর ক্লাস হয় না।
সহকারী শিক্ষিকা রীণা বালা জানান, শিক্ষকদের জন্য আলাদা কোনো অফিস রুম নেই। টিফিনের সময় তাদের বারান্দায় বসে থাকতে হয়।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সলেমান আলী জানান, ১৯৯২ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু বিদ্যালয়ের পাকা ভবনের জন্য আবেদন করা হলেও এখন পর্যন্ত সাড়া মেলেনি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলাম বলেন, “পাকা ভবন তৈরি করার জন্য আবেদন করা হয়েছিল। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী বলতে পারবেন।”
উপজেলা প্রকৌশলী তাজমিল খান মিলু জানান, বিদ্যালয়ের টপ গ্রাফিক সার্ভে ও সয়েল টেস্ট করা হয়েছে। চূড়ান্ত বরাদ্দের জন্য কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে। তাড়াতাড়ি বরাদ্দ পাওয়ার আশা করছেন তিনি।
পীরগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থা প্রায় একই। এই বিদ্যালয়গুলো হলো ঘুঘুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নিয়ামতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিংদলপতিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ বথপালিগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সতহা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।