Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪ ॥ রবিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫
10দেশের পাঁচ জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় শনিবার একই পরিবারে ছয় সদস্যসহ ১৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ২২ জন। এর মধ্যে গোপালগঞ্জে সাতজন, ঢাকার সাভারের ধামরাইয়ে চারজন, চুয়াডাঙ্গায় দুইজন এবং মুন্সীগঞ্জ ও গাইবান্ধায় একজন করে নিহত হন। গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : জেলায় মাইক্রোবাস ও ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের ছয়জনসহ মোট সাতজন নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও একজন। শনিবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া সড়কের মাঝিগাতির শিবপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার তেলিগাতি গ্রামের মৃত নসু মিয়ার ছেলে খোকন সিকদার (৪৫), তার স্ত্রী চায়না বেগম (৩৮), মেয়ে এ্যানিয়া (১৬), চাঁদনী (৮), খোকন সিকদারের মা কাতেবুন (৬৫), ভাই হাসান সিকদারের ছেলে সাকিব (১৩) ও ইজিবাইকচালক স্বপন সরদার (৩৫)। গুরুতর আহত হয়েছেন খোকন সিকদারের অপর মেয়ে ইতিমনি (১৩)। আহতদের স্বজনরা জানান, খোকন সিকদার খুলনা থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গ্রামের বাড়ি মাঝিগাতি ইউনিয়নের তেলিগাতি গ্রামে আসছিলেন। তারা খুলনা থেকে বাসে এসে গোপালগঞ্জের বেদগ্রাম বাসস্ট্যান্ডে নামেন। সেখান থেকে ইজিবাইক ভাড়া করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথিমধ্যে শিবপুরে বিপরীতমুখী জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের স্টিকার সম্বলিত একটি মাইক্রোবাসের (ঢাকা মেট্রো-চ-১৫-৬৯৩০) সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই সাকিব ও গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে আনার পথে চারজন এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুইজন মারা যান। অপর একজনকে গুরুতর আহতাবস্থায় প্রথমে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে এবং পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতের স্বজন বাচ্চু সিকদার জানান, খোকন সরদার এক আত্মীয়ের বিয়ে উপলক্ষে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গোপালগঞ্জের তেলিগাতি গ্রামের বাড়িতে আসছিলেন। বাড়িতে আসার পথে শিবপুরে এ দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ছয়জন নিহত হয়েছেন। এতে হাসপাতাল ও নিহতের এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গোপালগঞ্জ ফায়ার স্টেশন অফিসার মো. নিয়ামুল হুদা জানান, খবর পেয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। ঘটনাস্থলে একজন, আনার পথে চারজন ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুইজন মারা গেছেন। গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম রেজা বলেন, নিহত ছয়জন একই পরিবারের সদস্য। এছাড়া ইজি বাইকের চালকও মারা গেছে। নিহতদের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। সাভার প্রতিনিধি : ঢাকার ধামরাইয়ে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় চার জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনজন এবং অন্য একটি বাসের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার এক চালক নিহত হন। এছড়া দুই বাসের সংঘর্ষের ওই ঘটনায় অন্তত আরও ২০ জন আহত হয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানিয়েছেন। শনিবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে ধামরাইয়ের জয়পুরা এলাকার কেলিয়া এলাকায় দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এর আগে সকাল ১১টার দিকে একই এলাকায় একটি বাসের ধাক্কায় অটোরিকশার চালক নিহত হন। খবর পেয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনস্থলে পৌঁছে আহতদেরকে উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। নিহতরা হলেন— ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার সাবেক সেনা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ (৫৭), একই এলাকার সুমাইয়া খান (১৭), বাস চালক কটু মিয়া (৪৫) ও অটোরিকশার চালক জামাল হোসেন (২৫)। এদিকে, দুই বাসের সংঘর্ষের পর এক নারীসহ দুইজনের লাশ তাদের স্বজনরা বাড়িতে নিয়ে গেছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে অভিযোগ পেলেও সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানে না পুলিশ। ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিজাউল হক বলেন, ‘দুই বাসের সংঘর্ষের ঘটনায় আমরা তিনজনের লাশ পেয়েছি। এছাড়া আরও দুটি লাশ ঘটনার পরপরই তাদের স্বজনরা নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ পেয়েছি। কিন্তু এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।’ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ওসি রিজাউল হক আরও বলেন, দুপুরে বিকাস পরিবহনের একটি দূরপাল্লার বাস ধামরাইয়ের কেলিয়ায় পৌঁছলে সাদ সারা পরিবহনের একটি বাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হন। এছাড়া আরও ২০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় বাস দুটি দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। তিনি বলেন, আহত ২০ যাত্রীর মধ্যে কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং বাকিদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর আগে সকাল ১১টার দিকে ধামরাইয়ের ইসলামপুরে বাসের ধাক্কায় সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশার চালক জামাল হোসেন নিহত হন। ধামরাই থানার ওসি সিরাজুল হক জানান, পৃথক এ দুর্ঘটনায় থানায় থানায় দুটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি : চুয়াডাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত ও একজন আহত হয়েছেন। শনিবার সকাল ৮টার দিকে চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ সড়কের চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সুবদিয়া নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় লোকজন ট্রাকটি আটক করতে পারলেও চালক ও তার সহযোগী পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। প্রত্যক্ষদর্শীর উদ্ধৃতি দিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লিয়াকত হোসেন জানান, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার আরামডাঙ্গা গ্রামের মরহুম মকবুল হোসেনের ছেলে খাইরুল (৬৫) ও তার স্ত্রী আলেয়া খাতুন (৫৫) শনিবার সকালে চুয়াডাঙ্গা শহরে এসে কাজ শেষে শ্যালো মেশিন চালিত নসিমনে করে ঝিনাইদহের দিকে যাচ্ছিল। এ সময় সুবদিয়া নামক স্থানে ঝিনাইদহ থেকে চুয়াডাঙ্গার দিকে আসা দ্রুতগামী একটি ট্রাক (ঢাকা মেট্রো ট-১১-০৭৯৩) নসিমনটিকে ধাক্কা দেয়। এ সময় স্থানীয় লোকজন মারাত্মক আহত অবস্থায় নসিমন চালক শফি (৩৫) এবং নসিমনের যাত্রী খাইরুল ও তার স্ত্রী আলেয়া খাতুনকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শিমুল নসিমনচালক শফিকে মৃত ঘোষণা করেন। শফি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার নাহদাহ ইউনিয়নের বলিয়ারপুর গ্রামের আজিজুলের ছেলে। আহত খাইরুলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। কিন্তু ঢাকা যাওয়ার পথে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঝিনাইদহ শহরের চুয়াডাঙ্গা বাসষ্ট্যান্ডের কাছে পৌঁছলে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। এ সময় তাকে স্থানীয় শামিমা ক্লিনিকে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সিদ্দিকুর রহমান তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘাতক ট্রাকটি আটক করে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান ওসি। মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি : মুন্সীগঞ্জের ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে বাসচাপায় সিরাজুল ইসলাম (৫৫) নামে এক পথচারী নিহত হয়েছেন। শনিবার সকাল ১০টার দিকে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে দোগাছী বাসস্ট্যান্ডে ডি এম পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসটি চাপা দিলে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের বাড়ি মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার দক্ষিণ পাইকসা গ্রামে। ঘটনার পর বাসচালক পলাতক রয়েছে। বাসটি জনতা ভাঙচুর করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সিরাজুল ইসলাম রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ডিএম পরিবহনের বাস দ্রুতগতিতে এসে চাপা দিলে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। পরে উত্তেজিত জনতা বাসটিকে ভাঙচুর করে। শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহীদুর রহমান জানান, বাসচাপায় নিহতের ঘটনা আমি জানি না। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাচ্ছি। গাইবান্ধা প্রতিনিধি : জেলার সাদুল্যাপুর উপজেলায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় মো. সামছুজ্জোহা সরকার স্বপন (৩৮) নামে অটোবাইকের এক যাত্রী নিহত হয়েছেন। সাদুল্যাপুর-মাদারগঞ্জ সড়কের সাদুল্যাপুর উপজেলার তরফবাজিত ব্র্যাক অফিস এলাকায় শনিবার দুপুর ২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত সামছুজ্জোহা সরকার স্বপন সাদুল্যাপুর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের চিকনী গ্রামের মো. হবিবর মাস্টারের ছেলে।