Tue. May 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪ ॥ মঙ্গলবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫
43দেশে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে বেসরকারি খাতে ২০০ মেগাওয়াট (এসি) ক্ষমতাসম্পন্ন সোলার পার্ক স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বিদ্যমান সোলার পাওয়ার প্ল্যান্টগুলোর মধ্যে এটাই হবে সবচেয়ে বড় সোলার পার্ক। ‘বিল্ড-ওন-অপারেট’ (বিওও) সিস্টেমে এবং ‘নো ইলেক্ট্রিসিটি-নো পেমেন্ট’ ভিত্তিতে ২০ বছর মেয়াদে টেকনাফে এ সোলার পার্কটি স্থাপন করবে সিঙ্গাপুর ভিত্তিক কোম্পানি ‘সানএডিশন এনার্জি হোল্ডিং পিটিই লিমিটেড’। এ সোলার পার্ক থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ টাকা ২৬ পয়সা প্রতি কিলোওয়াট/ঘণ্টা। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, এ সোলার পার্ক থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের যে ট্যারিফ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে তা তরল জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তুলনায় কম। আর ‘নো ইলেক্ট্রিসিটি-নো পেমেন্ট’ ভিত্তিতে বিদ্যুৎ ক্রয় করায় ‘বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড’কে কোন ক্যাপাসিটি পেমেন্ট দিতে হবে না। স্পন্সর কোম্পানি নিজ অর্থে ও নিজ ব্যবস্থাপনায় প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় জমির সংস্থান, বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য ট্রান্সমিশন লাইন, সাব-স্টেশন নির্মাণসহ সম্পূর্ণ প্রকল্প ব্যয় নির্বাহ করবে এবং বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) নির্ধারিত নিয়মানুসারে প্রয়োজনীয় প্রপোজাল সিকিউরিটি দাখিল করবে। সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত সোলার পার্কের স্থান নির্ধারণে গঠিত একটি কমিটি গত মার্চে কক্সবাজারের টেকনাফ, পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া, ময়মনসিংহের ত্রিশাল ও টাঙ্গাইলের ঘাটাইল এলাকা পরিদর্শন শেষে টেকনাফ কিংবা তেঁতুলিয়ায় প্রকল্প স্থাপনের সুপারিশ করে। পরবর্তীতে স্পন্সর কোম্পানি টেকনাফে প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহ প্রকাশ করে। বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মনোয়ার ইসলাম জানান, ‘প্রস্তাবটি এখন সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। কমিটি অনুমোদন দিলে খুব শীঘ্রই এর বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে।’ প্রকল্পের সার-সংক্ষেপ অনুযায়ী, ২০ বছর মেয়াদে এ সোলার পার্ক থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় বাবদ সরকারের ব্যয় হবে ১১০ কোটি ২০ লাখ ডলার। বাংলাদেশী টাকায় এর পরিমাণ হচ্ছে ৮ হাজার ৫৯৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। বিদ্যুৎ বিভাগের হিসাব মতে, বর্তমানে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা প্রতিবছর ১০ থেকে ১২ শতাংশ হারে বাড়ছে। ‘পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্লান ২০১০’ অনুযায়ী ২০২১ সাল নাগাদ দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৪০০০ মেগাওয়াট। এ পরিকল্পনার আওতায় প্রচলিত জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎসের ব্যবহার বৃদ্ধি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, ‘নবায়নযোগ্য জ্বালানির নীতিমালা-২০০৮’ অনুযায়ী ২০১৫ সালের মধ্যে মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের ৫ শতাংশ অর্থাৎ ৮০০ মেগাওয়াট এবং ২০২০ সালের মধ্যে উৎপাদিত বিদ্যুতের ১০ শতাংশ অর্থাৎ ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎস থেকে উৎপাদন করতে হবে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সৌরশক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে বিদ্যুৎ বিভাগ ৫০০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। এরই আওতায় এ সোলার পার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।