খোলা বাজার২৪ বুধবার, ৭ অক্টোবর ২০১৫
বাংলাদেশে দুই বিদেশি নাগরিক খুন হওয়ার প্রেক্ষাপটে সার্বিক নিরাপত্তার আয়োজন জেনে নিয়ে সরকারকে সারা দেশেই বিদেশিদের নিরাপত্তায় বাড়তি ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছেন বিদেশি কূটনীতিকরা। মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্রিফিংয়ের পর ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশনার ও কূটনীতিক কোরের ডিন রবার্ট গিবসন বলেন, “বাংলাদেশ সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তাতে আমরা কৃতজ্ঞ।” তিনি বলেন, ‘সারা দেশে বিদেশিদের’ নিরাপত্তা বাড়ানোর বিষয়েই তারা কথা বলেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী সাংবাদিকদের বলেন, “সবকিছুতে তারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন এবং নিরাপত্তা ব্যাবস্থা আরও জোরদার করতে বলেছেন।” তিনি বলেন, “আমরা তাদের নিশ্চিত থাকতে বলেছি, তাদের আশ্বস্ত থাকতে বলেছি। কেনো দ্বিধা বা সন্দেহ থাকা উচিৎ নয়। শুধু কূটনৈতিক এলাকা নয়, প্রত্যন্ত এলাকাতেও বিদেশিরা আর্থসামাজিক উন্নয়নে কাজ করে থাকেন। আমরা তাদের নিরাপত্তার ব্যাবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি।” বাংলাদেশে অবস্থানরত প্রায় দুই লাখ ২৪ হাজার বিদেশি নাগরিকের ‘বিশেষ’ নিরাপত্তার জন্য সরকার তাদের বাসস্থান ও কর্মস্থল চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে ব্রিফিংয়ের আগেই জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। ২৮ সেপ্টেম্বর গুলশানের কূটনৈতিক পাড়ায় চেজারে তাভেল্লা নামের এক ইতালীয় এনজিওকর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এর পাঁচ দিনের মাথায় রংপুরের এক গ্রামে একই কায়দায় খুন হন জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি। দুটি ঘটনার পরই আইএস হত্যার দায় স্বীকার করে বলে খবর দেয় জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ‘সাইট ইন্টিলিজেন্স গ্রুপ’। এই পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে বাংলাদেশে জঙ্গি উত্থানের সম্ভাবনা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়। সরকার বিদেশিদের নিরাপত্তা নিয়ে আশ্বস্ত করলেও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশ তাদের নাগরিকদের বাংলাদেশে চলাফেরায় সতর্কতা জারি করে। হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানিয়েছে জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এই প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি কূটনীতিকদের সামনে আসেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পাশাপাশি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমও দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও সরকারের নেওয়া নিরাপত্তার আয়োজন সম্পর্কে ৪৫টি দেশের রাষ্ট্রদূত ও মিশন প্রধানদের অবহিত করেন।