Tue. May 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

dinajpurখোলা বাজার২৪ ॥ সোমবার, ১২ অক্টোবর ২০১৫, কাহারোল, দিনাজপুর : দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলায় ৬টি ইউনিয়নের চাষীরা ধান ক্ষেতে বীজ প্রয়োগ ছাড়ায় ক্ষতিকর পোঁকা দমন ও ধ্বংস করার জন্য জীবন্ত পাচিং ব্যবস্থায় কৃষকরা সফল পাওয়ায় এই পদ্ধতি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। গত বছর অধিকাংশ কৃষক ধান ক্ষেতে ক্ষতিকারক পোঁকা দমনের জন্য ধইঞ্চা চাষ করে আশানুরূপ সাফল্য পেয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় চলতি রোপা আমন মৌসুমে উপজেলায় ১৩ হাজার ২ শত ৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষ করা হয়েছে। এ বছর উপজেলার কৃষকরা শতভাগ জমিতে জীবন্ত পাচিং (ধইঞ্চা চাষ) ও ডেড পাচিং এ ব্যবস্থা করেছে। যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুন।
ধান ক্ষেতে চোখ বুলালেই জীবন্ত পাচিং ধইঞ্চা আর ধইঞ্চা এবং ডেড পাচিং। যা লক্ষ করার মত। উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ আখেরুর রহমান বলেন, ধান ক্ষেতে সবুজের মাঝে ধইঞ্চা গাছের হলুদ ফুলের সমারোহ প্রাকৃতিক সুন্দর্য অনেক বাড়িয়ে দেয়। ধইঞ্চা গাছের হলুদ ফুল শুধু শোভা বর্ধনের জন্য নয়, বরং হলুদ ফুলে আকৃষ্ট হয়ে উপকারী পোঁকা আসে ধান ক্ষেতে। এরা ক্ষতিকারক পোঁকা ধ্বংস করে। এছাড়াও ধইঞ্চা গাছে দিন ভর ফিংগে, শালিক ও বুলবুলি সহ নানা ধরনের উপকারী পাখি বসার সু-ব্যবস্থার ফলে ক্ষতিকর পোঁকা দমন হয়। পোঁকা দমনে হাজার হাজার টাকা খরচ করে নানা ধরনের কীটনাশক ¯েপ্র করতে হয় ধান ক্ষেতে। একদিকে যেমন চাষীদের আর্থিক ক্ষতি হয় অন্যদিকে পরিবেশ ও বায়ু দূষণ হয়। খেতে হয় বিষাক্ত ধানের ফলে মানুষের নানা ধরনের রোগ বালাই সৃষ্টি হয়, তাই বালাই থেকে রক্ষা পেতে কীটনাশক প্রয়োগ ছাড়ায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট আফ্রিকান জাতের ধইঞ্চার দ্বারা জীবন্ত পাচিং পোঁকা দমনের সবচেয়ে সহজ উপায় এবং কম খরচে পরিবেশ বান্ধব কৃষি ব্যবস্থাপনায় কৃষকের জন্য সরবরাহ করে। জীবন্ত পাচিং এর মাধ্যমে বিশেষ করে ধানের মাজরা পোঁকা এবং পাতা মড়ানো পোঁকা দমন হয়। একমাত্র জীবন্ত পাচিং এর মাধ্যমে দুষণমুক্ত পরিবেশে, বিষমুক্ত ফসল উৎপাদন সম্ভব। কৃষকেরা প্রতি বিঘায় ২৫ থেকে ৩০টি ধইঞ্চা গাছের বীজ বপন করে জীবন্ত পাচিং এর মাধ্যমে ধান ক্ষেতের ক্ষতিকারক পোঁকা দমন করতে পারে। ধইঞ্চা গাছে সবুজ পাতা থেকে জৈব সার ধান ক্ষেতের উর্বরতা বৃদ্ধি সহায়তা পেতে পারে। তাই জীবন্ত পাচিং পদ্ধতি কাহারোল উপজেলার চাষীদের মাঝে ব্যপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এই পদ্ধতি অনুসরনকারী কৃষকদের মধ্যে আব্দুর রহিম, সালিমউদ্দীন, শাহজাহান, শুকুমার চন্দ্র রায়, অধির চন্দ্র, সামসুল ইসলাম, রহমম আলী, আফজাল হোসেন, মাহাবুব, অতুল চন্দ্র রায়, হুসেন আলী সহ অনেকের সাথে কথা হয় তারা জানান জীবন্ত পাচিং পদ্ধতি বোঝানের সময় তারা বিশ্বাস করতে পারেনি, পরে এ পদ্ধতির গুনাগুন দেখে বিস্মিত হন। তারা এ বছর স্ব উদ্দেগ্যে গত বছরের তুলনায় দ্বিগুন হারে এ পদ্ধতি অনুসরন করেছেন। ফলে আর্থিক ক্ষতি, পরিবেশ ও বায়ু দুষণ এবং নানা ধরনের রোগ বালাই থেকে নিজে ও জাতিকে রক্ষা করতে পেরেছেন।