খোলা বাজার২৪ ॥ সোমবার, ১২ অক্টোবর ২০১৫, রাজশাহী : এলজিইডি’র বরাদ্দকৃত কাজ না করেই প্রায় ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে। স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়নের আওতায় (স্মারক নং ৪৬.০৪৫.০২০.০৯.০৩.০০৩.২০১৩.১৭১ তাং ২১ মার্চ ২০১৪ইং) বাগমারা উপজেলার কয়েকটি এলাকায় রিং পাইপ সরবরাহের নামে এ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এ বিষয়ে দূর্নীতি দমন কমিশন ঢাকা ও রাজশাহী বরাবরে অভিযোগ দাখিল করেছেন ওই এলাকার ওয়ারেশ আলী নামের এক ব্যাক্তি।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, প্রকৌশলী সানোয়ার হোসেন বাগমারা উপজেলা এলজিইডি অফিসে যোগদানের পর ২২ লাখ টাকার ৩টি প্রকল্প তৈরি করেন। এরপর নিয়ম বহির্ভুতভাবে তার পছন্দের তিন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এলিজা ও মেসার্স মোবারক এন্টার প্রাইজ এবং আহাদ আলীকে কাজটি দেন। এরমধ্যে এলিজা এন্টার প্রাইজ শ্রীপুর, বাসুপাড়া, কাচারীকোয়ালী পাড়া, শুভডাঙ্গা ও মাড়িয়া ইউনিয়নে রিং পাইপ সরবরাহের নামে বরাদ্দ পান ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৭শ’ ৯২টাকা, মোবারক এন্টার প্রাইজ গোবিন্দপুর, নরদাশ, দ্বীবপুর বড়বিহানালী ও আউচপাড়া ইউপির জন্য ৬ লাখ ৯৭ হাজার ৬শ’ ৩টাকা এবং আহাদ আলীর নামে গনিপুর, ঝিকড়া, গোয়ালকান্দি, হামিরকুৎসা, যোগীপাড়া ও সোনাডাঙ্গা এলাকায় বরাদ্দ পান ৭ লাখ ৯৯ হাজার ১শ’ ৩৭টাকা।
কিন্তু তাদের নামে কাজ বরাদ্দ দিলেও প্রকৌশলী সানোয়ার হোসেনই সবকিছু করেছেন। আর ওই তিনজন ঠিকাদারকে নামমাত্র টাকা দিয়ে কাজ না করেই তার অধিনস্থ কর্মকর্তা এসওকে দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়ে বেয়ারার চেক ইস্যু করে সব টাকা আত্মসাৎ করেছেন। বাস্তবে ওই তিন প্রকল্পের কোন অস্তিত্ব নেই বলেও দাবী করেছেন ঠিকাদাররা। এ ঘটনায় প্রকৌশলী সানোয়ার হোসেন, উপ-সহকারী প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার সিংহ ও তোফজ্জাল হোসেনকে বিবাদী করে দূর্নীতি দমন কমিশন ঢাকা ও রাজশাহী বরাবরে পৃথকভাবে গত ৭ অক্টোবর ও ১১ সেপ্টেম্বর’১৫ইং তারিখে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
এছাড়াও ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে এডিপি’র বরাদ্দ থেকে বাসাবাড়ি মেরামতের নামে রুপালী ভবনের সাড়ে ৭ লাখ, পূবালী ভবনের ৪লাখ ৮৬ হাজার এবং ডরমেটরীতে ৮লাখ টাকা প্রাক্কলন দেখিয়ে টেন্ডার নোটিশের আগেই ২ লাখ টাকা কোটেশনের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে স্থানীয় ঠিকাদারদের কাছে জানতে চাইলে বলেন, এ উপজেলায় প্রায় ২ কোটি টাকার কাজ রয়েছে। কিন্তু প্রকৌশলী সানোয়ারকে তাঁর দাবীকৃত ৭ লাখ টাকা না দেওয়ায় কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনেরও দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় ঠিকাদাররা।
বাগমারা উপজেলা ঠিকাদার ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুস সামাদ এফএনএস কে বলেন, বিধিবহির্ভূতভাবে অতি গোঁপনে পছন্দের ব্যাক্তির নামে টেন্ডার পাশ করান প্রকৌশলী সানোয়ার। আমার জানামতে ওই তিন প্রকল্পের কোন কাজই বাস্তবায়ন হয়নি। এলিজা এন্টার প্রাইজের স্বত্বাধিকারী আসাদুজ্জামানও তার নামে বরাদ্দকৃত কাজ পাওয়ার বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবী করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে প্রকৌশলী সানোয়ার এফএনএস কে জানান, অভিযোগকারীরা সুবিধা না পাওয়ায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দাখিল করেছেন।