খোলা বাজার২৪ ॥ মঙ্গলবার, ১৩ অক্টোবর ২০১৫, পাইকগাছা, খুলনা : শয্যা ৫০টি, আর রোগী তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশী। আর শয্যা সংকটে খুলনার পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা পড়ছেন চরম ভোগান্তিতে। বারান্দায় (ফ্লোরে) থাকা রোগীদের চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি খাবারের সমস্যাও দেখা দিয়েছে। হাসপাতালে রোগী থাকে শয্যার কয়েক গুণ বেশী অথচ খাবার সরবরাহ করা হয় নির্ধারিত ৫০ জন রোগীর জন্য। আর সারাদিন বারান্দা দিয়ে রোগীর স্বজনদের হাঁটাচলাফেরা করায় দুর্ভোগে পড়তে হয় ওইসব রোগীদের। এদিকে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরী বিভাগ রয়েছে, তবে জরুরী স্বাস্থ্য সেবা নেই! আশ্চার্য্যজনক মনে হলেও সত্যি যে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে মেডিকেল অফিসারের কোনো সৃষ্টপদ’ই নেই। একজন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারই ভরসা। যখন একসঙ্গে একের অধিক রোগী আসে তখন আন্তঃ বা বর্হিবিভাগ থেকে মেডিকেল অফিসারকে ডেকে আনতে হয়। আর যদি ওই সময় ডাক্তার রাউন্ডে বা অপারেশন থিয়েটারে থেকে থাকেন ততক্ষণে রোগীর অবস্থাটা যে কি হয় তা সহজেই অনুমেয়। ওদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট (রেডিওগ্রাফার ও ল্যাব) এর পদগুলো দীর্ঘ বছর যাবৎ শূন্য থাকায় এক্স-রে ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। হাসাপাতালে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন উন্নতমানের একটিএক্স-রে মেশিন থাকলেও তার সুফল পাচ্ছে না অসহায় দরিদ্র রোগীরা। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বেশিরভাগ সময়ই এক্স-রে কার্যক্রম থেকেছে বন্ধ। বর্তমানে এক্স-রে মেশিনটি সচল থাকলেও টেকনোলজিষ্ট (রেডিওগ্রাফার প্রেষণে ঢাকায় কর্মরত) না থাকায় এক্স-রে কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এক্স-রে মেশিন স্থাপনের পর থেকে (প্রায় দশ বছরে) এ পর্যন্ত এক্স-রে সুবিধা পেয়েছেন মাত্র ৪০ জন রোগী। অপরদিকে মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট (ল্যাব) এর ৩টি পদই দীর্ঘদিন যাবৎ শূন্য থাকায় হাসপাতালে রোগীদের পরীক্ষা নিরীক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে রোগীদের বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে চড়ামূল্যে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করাতে হচ্ছে। আর অর্থাভাবে দরিদ্র রোগীদের বেশিরভাগই রোগ নির্ণয় করাতে ব্যর্থ হয়ে ধুকে ধুকে মরছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অবকাঠামো নির্মাণের পর ২০০৯ সালের ২ ডিসেম্বর ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রশাসনিক অনুমোদন দেয়া হয়। তবে প্রয়োজনীয় জনবল বৃদ্ধি করা হয়নি অদ্যবধি। তৎকালীন ৩১ শয্যার জন্য প্রয়োজনীয় জনবলই ছিল সংকট। সেক্ষেত্রে সেই স্বল্প সংখ্যক ডাক্তার-নার্স (জনবল) দিয়েই বর্তমান ৫০ শয্যার চিকিৎসা সেবাপ্রদানে কর্মরত ডাক্তাররাই রীতিমত হিমশিম খাচ্ছেন। ডাক্তার সংকটরে পাশাপাশি অন্যান্য জনবল সংকটও রয়েছে মারাত্মক। ৩ জন ওয়ার্ড বয় এর স্থলে রয়েছে মাত্র ১ জন। এমএলএসএস ৪ জনের মধ্যে রয়েছে মাত্র ১ জন। আর সুইপার ৫ জনের মধ্যে মাত্র দু’জন থাকলেও কর্মরত রয়েছে মাত্র ১ জন। বিধায় হাসপাতাল অভ্যন্তরে টয়েলেটের গন্ধে রোগীদের বেডে থাকা দায় হয়ে পড়েছে।