খোলা বাজার২৪, রবিবার , ১৮ অক্টোবর ২০১৫ : ইতালির নাগরিক সিজার তাবেলা হত্যায় জড়িত থাকার সন্দেহে তিন ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা। তাঁদের মধ্যে দুজনের নাম মো. রাসেল। তাঁদের বয়স যথাক্রমে ৩৫ ও ৪০ বছর। অন্যজনের নাম তামজিদ আহম্মদ ওরফে রুবেল (২৯)। মো. রাসেল নামের দুই ব্যক্তি বাড্ডা এলাকার স্থানীয় বিএনপির কর্মী বলে তদন্তের সঙ্গে সম্পৃক্ত সূত্রগুলো বলেছে। আর তামজিদ বাড্ডায় একটি মুঠোফোনের দোকান চালান। তাঁর বাড়ি মানিকগঞ্জে। এই সন্দেহভাজন তিনজনের মধ্যে দুজন মোটরসাইকেল ব্যবহার করেন বলে তদন্তকারী কর্মকর্তারা তথ্য পেয়েছেন। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘মামলার তদন্ত ইতিবাচক দিকে এগোচ্ছে। সব সন্দেহ নিয়ে কাজ চলছে। ষড়যন্ত্র হচ্ছে, এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন। একটু অপেক্ষা করেন, সব বলে দেব।’ মামলার তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, প্রথমে তদন্তকারীরা হত্যায় সরাসরি অংশ নেওয়া সন্দেহভাজন তিনজনের তালিকা করেছিলেন। পরে তদন্তকারীরা তিনজনের অধিক সন্দেহভাজনের বিষয়ে মনোযোগ দিয়ে চারটি ধাপে তদন্ত এগিয়ে নিচ্ছেন। প্রথম ধাপে হত্যায় অংশগ্রহণকারী, দ্বিতীয় ধাপে হত্যাকারীদের নিরাপদে সরে যেতে সহায়তাকারী, তৃতীয় ধাপে হত্যায় অর্থ জোগানদাতা ও শেষ ধাপে পরিকল্পনাকারী। তাঁদের সবাইকে আইনের আওতায় আনাই তদন্তকারীদের লক্ষ্য। এ লক্ষ্যে এখন অভিযান চলছে। একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, যেকোনো সময় হত্যাকারীরা ধরা পড়বে। ইতালীয় নাগরিক হত্যা মামলায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান ও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, হত্যায় অংশ নেওয়া তিন মোটরসাইকেল আরোহী গ্রেপ্তার হলে তাঁদের পরিচয় জানা যাবে। তখন মোটরসাইকেল ও হত্যায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রও উদ্ধার হবে। এর আগে গুলশান ২ নম্বরে ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে তৃতীয় পক্ষ এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। বিভিন্ন সময় তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও বলেন, সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করতে রাজনৈতিক কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া তাঁর কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে বলেন, হত্যার তদন্তে ‘প্রণিধানযোগ্য’ অগ্রগতি হয়েছে। সিজার হত্যার ঘটনা দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র। হত্যার সঙ্গে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। গত ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় গুলশান ২ নম্বরের ৯০ নম্বর সড়কের গভর্নর হাউসের সীমানাপ্রাচীরের বাইরের ফুটপাতে সিজারকে (৫১) গুলি করে হত্যা করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা দুই তরুণকে গুলি চালিয়ে অপেক্ষমাণ এক ব্যক্তির মোটরসাইকেলে করে পালাতে দেখেছেন। সিজার নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আইসিসিও কো-অপারেশন প্রুফসের (প্রফিটেবল অপরচুনিটিজ ফর ফুড সিকিউরিটি) প্রকল্প ব্যবস্থাপক ছিলেন।