খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ২৮ অক্টোবর ২০১৫ : আন্দোলনের নামে ‘মানুষ পুড়িয়ে সরকার উৎখাতে ব্যর্থরাই’ বিদেশি নাগরিক হত্যা করে দেশের ‘ভাবমূর্তি নষ্টের’ অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশি হত্যা ও ইমামবাড়ায় তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলার পেছনে কারা ছিল- তা ‘ধীরে ধীরে’ বেরিয়ে আসছে।
বছরের শুরুতে বিএনপি-জামায়াতের টানা অবরোধ-হরতালে নাশকতার কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “দেশের ভিতরে মানুষ পুড়িয়ে যখন দেখল যে, সরকারকে উৎখাত করা যাচ্ছে নাৃএখন বিদেশিদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে তারা।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল আগের দিন গণমাধ্যমকে বলেন, গুলশানে ইতালীয় নাগরিক চেজারে তাভেল্লাকে হত্যা করা হয় বিএনপি নেতা এম এ কাইয়ুমের ‘নির্দেশে’।
আর বুধবার প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশ ‘উন্নয়নের রোল মডেল’ হিসাবে স্বীকৃত হচ্ছে, তখনই দেশের ‘ভাবমূর্তি নষ্ট করতে’ বিদেশি খুন ও তাজিয়া মিছিলে হামলার মত নাশকতা ঘটানো হচ্ছে।
“ইমামবাড়ায় বোমা হামলায় কারা আহত, কে মারা গেছে? যে ছেলেটা মারা গেছে সে কিন্তু শিয়া না, সে সুন্নি। যে কয়জন আহত- তারা প্রত্যেকে কিন্তু সুন্নি মুসলমান। যে অনুষ্ঠানটি সবাই মিলিতভাবে করে, তাতে এই হামলার কী অর্থ থাকতে পারে? কারা করল? এটা ধীরে ধীরে মানুষের কাছে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে,” বলেন তিনি।
গত ২৩ অক্টোবর পুরান ঢাকার হোসাইনী দালানে আশুরার তাজিয়া মিছিলে প্রস্তুতির সময় ওই বোমা হামলায় এক কিশোর নিহত হয়, আহত হন অন্তত ৭৫ জন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দুইটা বোমা আর পাঁচটা ডিম মেরে সরকারের উন্নয়নের গতিধারাকে বন্ধ করা যাবে না। যারা এটা চিন্তা করছেন, তারা ভুল।”
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকারের দৃঢ় অবস্থানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা অন্যায়কে প্রশ্রয় দেইনি, দেব না। একটা কথা আমি স্পষ্ট বলতে চাই, বাংলাদেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের কোনো স্থান হবে না।”
সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধের দেশের সর্বস্তরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়াও আহবান জানান তিনি।
ঢাকার একটি হোটেলে এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ভিডিও কনফারেন্সে মুন্সীগঞ্জের একটি পানি শোধনাগারের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
ওয়াসার পানির অপচয় রোধে সবাইকে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, পানি পরিশোধন একটি ব্যয়বহুল কাজ। তাছাড়া ভূগর্ভ থেকে পানি তুলতে থাকলে পানির স্তর নিচে নেমে যায়। এতে ‘ভূমিকম্পের আশঙ্কাও’ বাড়ে।
ঢাকার চারপাশে বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, শীতলক্ষ্যা ও বংশী নদীর করুণ অবস্থার কথা তুলে ধরে এসব নদীর সংস্কারে সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “বুড়িগঙ্গায় কয়টি স্যুয়ারেজ লাইন যুক্ত হয়েছে তার খবর নিতে আমি নির্দেশ দিয়েছি। প্রতিটি স্যুয়ারেজ লাইনে একটি পানি শোধনাগার নির্মাণ করা হবে।”
নতুন স্থাপনা নির্মাণের সময় কোনো জলাধার যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়- সেদিকেও খেয়াল রাখার তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “খাল, নদী, জলাধার ভরাট করে বাড়ি-ঘর-স্থাপনা নির্মাণ করা চলবে না।