খোলা বাজার২৪ ॥ শনিবার, ২১ নভেম্বর ২০১৫ : পরমাণু বিজ্ঞানী ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা চৌধুরী সাজ্জাদুল করিম আর নেই।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাতে তার মৃত্যু হয় বলে প্রয়াতের ভাতিজা সৈয়দ মিনহাজ জানান।
আনবিক শক্তি কমিশনের সাবেক এই চেয়ারম্যানের বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। তিনি পরিচিত ছিলেন সিএস করিম নামে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, জ্বর নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে চিকিৎসকের কাছে গেলে নিউমোনিয়া হয়েছে জানিয়ে সিএস করিমকে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে আইসিইউতে রাখা হয় তাকে।
শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার দুপুরে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। রাত ১০টা ৪০ মিনিটে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শনিবার সকাল ১১টায় বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গনে সিএস করিমের জানাজা হবে বলে তার একমাত্র সন্তান শাবাব করিম জানান।
এরপর বেলা ১২টায় আগারগাঁওয়ে আনবিক শক্তি কমিশনে এবং জোহরের পর শ্যামলীর রিং রোডের বাসার কাছে একটি মসজিদে জানাজার পরে বনানী কবরস্থানে সিএস করিমকে দাফন করা হবে বলে জানান তিনি।
চৌধুরী সাজ্জাদুল করিম চৌধুরী সাজ্জাদুল করিম সিএস করিমের জন্ম ১৯৪৮ সালের ৭ জানুয়ারি নানা বাড়ি চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ের চিনকি আস্তানার তাকিয়া বাড়িতে। বাবা বিচারক ছিলেন বলে মাধ্যমিক পর্যন্ত তার শিক্ষাজীবন কেটেছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।
১৯৬৪ সালে এসএসসি পাস করা সিএস করিম পদার্থ বিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। পরে রাশিয়ায় তিনি নিউক্লিয়ার ফিজিক্সে পিএইচডি ও পোস্ট ডক্টরেট করেন।
বাংলাদেশ আনবিক শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন ছাড়াও আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থার সদস্য ছিলেন তিনি। কর্মজীবনে পেশাদারি দক্ষতার জন্য সহকর্মীদের মধ্যে তিনি ছিলেন প্রশংসিত।
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলার ওপর সব সময় জোর দিতেন সিএস করিম। তিনি ছিলেন পরমাণু নিরাপত্তা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ।
২০০৭ সালের জানুয়ারিতে ফখরুদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন উপদেষ্টা পরিষদ বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্ব নিলে তাতে কৃষি ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান সিএস করিম। সে সময় শস্য ফলন বাড়াতে তিনি সারা দেশ চষে বেড়ান, যা প্রশংসিত হয়।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব পালনের আগে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের নীতি-নির্ধারণী বিভিন্ন কমিটিতে দায়িত্ব পালন করেন সিএস করিম। তিনি বাংলাদেশ ফিজিক্যাল সোসাইটিরও সভাপতি ছিলেন।