Wed. May 7th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

27খোলা বাজার২৪ ॥ শনিবার, ২১ নভেম্বর ২০১৫ : বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রাম থেকে শুরু করে নারী অধিকারসহ প্রতিটি সামাজিক আন্দোলনে সামনের সারিতে থাকা কবি সুফিয়া কামালকে গান-কবিতা-কথামালায় স্মরণ করেছে তার গড়া সংগঠন ছায়ানট।
এই সঙ্গীত বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা কবির ১৬তম প্রয়ান দিবসে শুক্রবার সন্ধ্যায় শ্রদ্ধা ও প্রণতি নিবেদন করেন একালের সংস্কৃতিকর্মীরা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল আনাম শাকিল বলেন, “দেশের রাজনৈতিক-সামাজিক প্রেক্ষাপটে সুফিয়া কামাল গণতান্ত্রিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন। তাকে আমরা কেউ বলতাম খালাম্মা, কেউ আপা আবার কেউ ডাকত নানী বলে।
“ছায়ানটের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সময়ে-দুঃসময়ে তিনি আমাদের সাহস দিতেন। প্রতিদিন কি করে আমরা এগিয়ে যাব- তা নিয়ে কত যে পরামর্শ দিতেন আমাদের প্রিয় খালাম্মা!”
স্বাগত কথনের পর কবি সুফিয়া কামালের কর্মময় জীবনের বিশদ বিবরণ উঠে আসে নারীনেত্রী আয়েশা খানমের স্মারক বক্তৃতায়।
জমিদার পরিবারের মেয়ে সুফিয়া কামাল কেমন করে সমাজ-সংসারের বাধা-নিষেধ উপেক্ষা করে নারী আন্দোলন তথা সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছিলেন- তার বিবরণও উঠে আসে।
বাংলার নারী আন্দোলনের পথিকৃৎ রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের সমাজ সংস্কারমূলক নানা কাজের সঙ্গে সুফিয়া কামালের সংযোগের বিষয়টি তুলে ধরেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভানেত্রী আয়েশা খানম।
“আবর্জনা কেটে নারী প্রগতিবাদীদের এগিয়ে যাওয়ার পথ তৈরিতে কবি সুফিয়া কামাল পালন করেছেন অগ্রণী ভূমিকা। পূর্ব থেকে পশ্চিমে বাংলার নারীর এগিয়ে যাওয়ার এই যে জয়গান, গ্রামীণ অনগ্রসর জনপদের নারীরা যে বাধা কাটিয়ে সৃজনশীল নানা কাজে মুখর হয়ে উঠেছে, সে কৃতিত্ব সুফিয়া কামালকে দিতেই হবে।”
ষাট-সত্তর দশকে সামাজিক আন্দোলনের পাশাপাশি বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনে কবি সুফিয়া কামালের অগ্রণী ভূমিকা, স্বাধীনতাউত্তর বাংলাদেশে নারী আন্দোলনের পুনর্জাগরণ ও নারীদের দাবি-দাওয়া আদায়ে তার সাহসী ভূমিকার কথাও উঠে আসে তার বক্তৃতায়।
“নারীদের অধিকার আদায়ে শাসক গোষ্ঠীর সঙ্গে লবিং করা, তাদের চাপে রেখে দাবি আদায়ে তার সাহসী ভাবমূর্তি, তার বহুমুখী কর্মপ্রতিভার পরিচয় দেয়। তার কর্মপ্রতিভায় নারী আন্দোলনের ভাবনা আরও বিস্তৃত হয়েছে। তার কর্মস্পৃহাতেই জেগে উঠেছে বাংলার নারী। তাই তো তিনি জননী সাহসিকা।”
ছায়ানটের সহ-সভাপতি সারওয়ার আলী বলেন, “কবি সুফিয়া কামাল একাধারে কাজ করেছেন নারী-শিশু-যৌনকর্মীসহ সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য। সর্বজনশ্রদ্ধেয় কবি কখনও তার নীতি থেকে এতটুকু বিচ্যুত হননি।”
এর পর রজনীকান্ত সেনের গান ‘আমরা এমনি এসে ভেসে যাই’ সম্মিলিত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সাংস্কৃতিক পর্ব শুরু হয়।
একে একে সঙ্গীত পরিবেশনা নিয়ে আসেন অদিতি মহসিন, সুমন চৌধুরী, লাইসা আহমেদ লিসা, কল্পনা আনাম, তৃপ্তি খান, আজিজুর রহমান তুহিনসহ ছায়ানটের শিক্ষকরা।
তারা রজন্তীকান্ত, দ্বিজেন্দ্রলাল রায় ও অতুল প্রসাদ সেনের গান পরিবেশন করেন।