খোলা বাজার২৪, সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ : রাজধানীতে পেশাদার সন্ত্রাসীর সংখ্যা কত?Ñ এ প্রশ্নের জবাব নেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে। পাঁচ বছর ধরে রাজধানীর থানাভিত্তিক সন্ত্রাসীদের তালিকা হালনাগাদ করা হচ্ছে না।
পুলিশ অপরাধ দমন কার্যক্রম চালাচ্ছে পুরনো তালিকার ওপর ভর করেই। বাহিনীর বিভিন্ন বিভাগের নথিতে রাজধানীতে প্রায় চার হাজার অপরাধী সক্রিয় আছে বলে তথ্য থাকলেও অপরাধ পরিসংখ্যানসহ তাদের সন্ত্রাসী হিসেবে শনাক্ত করা নেই। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, থানাভিত্তিক হালনাগাদ তালিকা না হলেও গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে সন্ত্রাস দমনের কাজ করছে পুলিশ ও র্যাব। শীর্ষ সন্ত্রাসীদের হয়ে মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে উঠতি সন্ত্রাসীরা। তিনবছর আগে ঢাকা মহানগর পুলিশ ডিএমপি ৫০০ উঠতি বা তরুণ সন্ত্রাসীর তালিকা করে। ওই তালিকাও আর হালনাগাদ হয়নি।
ডিএমপির মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে বিভিন্ন থানা এলাকার নতুন অপরাধীদের নাম থানার তালিকায় এখনও ওঠেনি। তালিকা সংশোধন করে নতুন সন্ত্রাসীদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা না হলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন।
সূত্র জানায়, পুলিশ সদর দফতরে রাজধানীর ৪৯টি থানার প্রায় চার হাজার অপরাধীর নাম আছে। তবে সেখানে নেই তাদের অবস্থান, পরিবার ও কার্যকলাপের বিবরণ। রাজধানীতে যখন ৩৫টি থানা ছিল তখন অপরাধীর সংখ্যা ছিল তিন হাজার ৮৩ জন। ২৬টি থানা যখন ছিল তখন তালিকায় ছিল দুই হাজার ২২ জন।
জানা গেছে, ২০০৯ সালে সন্ত্রাসীদের তালিকা হালনাগাদের পর ২০১০ সালের ১৫ মার্চ তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন জাতীয় সংসদে ৪২ শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম প্রকাশ করেন। ওই তালিকায় আগের তালিকার ২২ শীর্ষ সন্ত্রাসীসহ রাজধানীর কিছু সন্ত্রাসীর নাম প্রকাশ পায়। তবে সেখানেও নিহত ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের নাম ছিল। ২০১০ সালেই ডিএমপি ৪১ থানার ৫১৫ জন উঠতি সন্ত্রাসীর নাম তালিকাভুক্ত করে। তবে গত দুই বছরে ওই তালিকা আর হালনাগাদ হয়নি।
মিরপুর থানায় ১৫৪ সন্ত্রাসী সক্রিয়। দ্বিতীয় স্থানে আছে বাড্ডা থানা। এ থানায় সক্রিয় আছে ৯৮ জন। তালিকা অনুযায়ী গুলশান থানায় সক্রিয় ৭২ জন, তেজগাঁও থানায় ৫৪, শিল্পাঞ্চল থানায় ৪৬, কোতোয়ালিতে চার, হাজারীবাগে ৪১, নিউ মার্কেটে ৯, লালবাগে ৩৯, কলাবাগানে ১২, সূত্রাপুরে ১৯, রামপুরা-সবুজবাগ-খিলগাঁওয়ে ১৮, পল্লবীতে ৮, রমনায় ৭, মতিঝিলে ২২, মোহাম্মদপুরে ১১, যাত্রাবাড়ী-ডেমরা-শ্যামপুরে ৩৩, কদমতলীতে ২০ ও আশুলিয়ায় ৪৪ জন সন্ত্রাসী সক্রিয়।
ডিএমপির এক কর্মকর্তা জানান, অতীতে শীর্ষ সন্ত্রাসী বা থানাভিত্তিক সন্ত্রাসীদের তালিকা প্রকাশ করে সুফল মেলেনি। তাই গোয়েন্দাদের মাধ্যমে গোপনে তালিকা করে অভিযান চালানোর কৌশল গ্রহণ করেছে ডিএমপি। এসব তালিকা মাঠ পর্যায়ে পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।
ডিএমপির আরেক কর্মকর্তা বলেন, সাধারণত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই তালিকা করে থানায় পাঠায়। এরপর তা ঝুলিয়ে রাখা হয়। কিন্তু গত কয়েকবছর ধরে কোনো তালিকা করা হচ্ছে না বলে জানান তিনি। সম্পাদনা : মাহমুদুল আলম