খোলা বাজার২৪,বুধবার, ১৬ মার্চ ২০১৬: বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় দেশে চলতি বছরে ২০১৬ সালের প্রথম দুই মাসে মোবাইল ফোন গ্রাহক কমেছে প্রায় ২৭ লাখ। সম্পতি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) দেয়া এক বিবৃতিতে এমন তথ্য উঠে আসে। তথ্য দেখা গেছে, নিবন্ধন প্রক্রিয়ার কারণে গত ফেব্র“য়ারি মাসে প্রায় ৮ লাখ ৭১ হাজার এবং জানুয়ারি মাসে ১৭ লাখ ৬৪ হাজার বিভিন্ন মোবাইল অপারেটরের গ্রাহক কমেছে।
তবে এ দুই মাসে যে পরিমাণ গ্রাহক কমেছে তাতে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন প্রক্রিয়াকে দায়ী কর সংশ্লিষ্টরা। কোম্পানিগুলো বলছে, আগে যার তিন বা চারটি সিম ছিলো তিনি এখন একটি বা দুইটি সিম বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধন করছেন। ফলে তার অন্য সিমগুলো অনিবন্ধিত থেকে যাচ্ছে। বিটিআরসিও এই বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছে। আবার বিটিআরসির তথ্য মতে, গত জানুয়ারি মাসে দেশে মোট মোবাইল গ্রাহকের সংখ্যা ছিলো ১৩ কোটি ১৯ লাখ।
অথচ ফেব্র“য়ারি মাসে এই সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ১৩ কোটি ১০ লাখের কাছাকাছিতে। প্রায় ৮ লাখের বেশি গ্রাহক কমে গেছে বলে জানানো হয়। আবার ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসের মোট মোবাইল অপারেটরের গ্রাহক সংখ্যা ছিল ১৩ কোটি ৩১ লাখ ৬৩ হাজার। ডিসেম্বরে এই সংখ্যা বেড়ে হয় ১৩ কোটি ৩৭ লাখ ২০ হাজার। কিন্তু ডিসেম্বরের ১৬ তারিখ থেকে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন শুরু হলে এক ধাপে কমে এসে গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়ায় ১৩ কোটি ১৯ লাখ ৫৬ হাজারে। আর ফেব্র“য়ারিতে তা কমে দাঁড়ায় ১৩ কোটি ১০ লাখ ৮৫ হাজারে।
বিটিআরসির হিসাবে এই সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গ্রাহক কমেছে বাংলালিংক এর। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির গ্রাহক কমেছে প্রায় ৪ লাখ। জানুয়ারিতে কোম্পানিটির গ্রাহক সংখ্যা ছিলো ৩ কোটি ২৩ লাখ ৬৮ হাজার। ফেব্র“য়ারিতে তা কমে দাঁড়ায় ৩ কোটি ১৯ লাখ ৬০ হাজারে। চলতি বছরের ফেব্র“য়ারিতে গ্রামীণফোনের গ্রাহকসংখ্যা হয়েছে ৫ কোটি ৬১ লাখ, জানুয়ারিতে যা ছিল ৫ কোটি ৬২ লাখ ৪ হাজার। রবির গ্রাহকসংখ্যা জানুয়ারিতে ২ কোটি ৭৭ লাখ ৯৫ হাজার থাকলেও ফেব্র“য়ারিতে ২ লাখ কমে ২ কোটি ৭৫ লাখ ৫৩ হাজার হয়েছে।
একই সময়ে এয়ারটেলের গ্রাহকসংখ্যা ১ কোটি পাঁচ লাখ ১০ হাজার থেকে কমে ১ কোটি ৩ লাখ ৫১ হাজার হয়েছে। সিটিসেলের গ্রাহক ৮ লাখ ৬৭ হাজার থেকে আরও কমে হয়েছে ৮ লাখ ৩৩ হাজার। সরকারি মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটকের গ্রাহক আগের চেয়ে ৪৬ হাজার বেড়ে বর্তমানে ৪২ লাখ ৫৭ হাজার হয়েছে। তবে গ্রাহক কমে যাওয়ার এই ঘটনায় রাজস্বের কোনো ক্ষতি হবে না বলে বিটিআরসির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
বিটিআরসির সূত্রে জানা যায়, মানুষ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার ভিত্তিতে একাধিক সিম ক্রয় করে। কিন্তু বর্তমান বায়োমেট্রিক পদ্ধতি আসাতে অনেকেই প্রয়োজনীয় সিমটি রেজিস্ট্রেশন করে বাকিগুলো করছে না। যার কারণে গ্রাহক সংখ্যা কমে যাচ্ছে। তবে এতে রাজস্ব আয়ে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।