খোলা বাজার২৪, শনিবার, ১৬ জুলাই ২০১৬ জঙ্গিরা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে মন্তব্য করে তাদের প্রতিরোধে পাল্টাযুদ্ধ ঘোষণা করে রাস্তায় থাকার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখাপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার।
শুক্রবার বিকালে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক নাগরিক সমাবেশে এ আহ্বান জানান তিনি।
সমাবেশ থেকে জঙ্গিবাদমুক্ত নিরাপদ বাংলাদেশ গড়তে সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
কর্মসূচির মধ্য রয়েছে- আগামী ১৮ জুলাই থেকে ‘প্রতিরোধ ঘরে ঘরে’ নামে শাহবাগসহ সারা দেশে এক যোগে জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে গণসংযোগ কর্মসূচি, ২০ জুলাই দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ মিছিল এবং ২২ জুলাই শাহবাগে গণমিছিল।
এ সময় গুলশানের হামলাকারীদের একাত্তরের ঘাতকদের উত্তরসূরী মন্তব্য করে ডা. ইমরান বলেন, ‘আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। পুরোনো বিভাজন মাথায় রেখে খাদের কিনার থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব নয়।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘একাধারে একের পর এক লেখক, প্রকাশক, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, ধর্মযাজক ও পুরোহিতদের হত্যা করা হচ্ছে। যখন আমরা বলছি- এসব হত্যার বিচার করতে হবে, তখন আমরা দেখলাম- হত্যাকারীদের বিচারে আওতায় আনা হচ্ছে না।’
ডা. ইমরান দাবি করেন, ‘যারা বিচারে ব্যাপারে কথা বলছে, উল্টো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তাদের গৃহবন্দি করে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। আজকে এই পরিস্থিতি তৈরির জন্য কিভাবে এই গণজাগরণ মঞ্চকে থামানো হয়েছে আপনার দেখেছেন।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ যে অবস্থায় এসে দাঁড়িছে শুধু নাগরিক সমাবেশ করে এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব নয়। জঙ্গিরা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে, আমাদেরকে তাদের বিরুদ্ধে পাল্টাযুদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। প্রতিরোধে ডাকে রাস্তায় থাকতে হবে।’
সমাবেশে মানবাধিকার নেত্রী সুলতানা কামাল বলেন, ‘বিভিন্ন হামলায় আমরা স্বামী হারাচ্ছি, সন্তানহারা হচ্ছি। এরকম আতংকের মধ্যে বেঁচে থাকার জন্য আমরা তো মুক্তিযুদ্ধ করিনি।’
ব্লগার-লেখক অভিজিৎ রায়ের বাবা প্রবীণ শিক্ষক অধ্যাপক অজয় রায় বলেন, ‘গুলশানের হামলার আগে আমি নিজেই মাদ্রাসা ও কওমী মাদ্রাসা কী পড়ানো হয় তা নিয়ে সমালোচনা করেছিলাম। কিন্তু এখন আমি নিজেই দ্বিধায় পড়েছি। বর্তমানে তথাকথিত সেক্যুলার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জঙ্গিবাদে জড়িত।’
গণজাগরণ মঞ্চের ব্যানারে সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদমুক্ত নিরাপদ বাংলাদেশ চাই এই নাগরিক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশ শেষে জাতীয় পতাকা মিছিল বের করে মঞ্চের নেতাকর্মীরা।