Thu. May 1st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

19kখোলা বাজার২৪, বুধবার, ২৭ জুলাই ২০১৬: একটি ইস্যু শেষ হতে না হতেই সামনে চলে আসছে আরও একটি বড় ইস্যু। কোনটা রেখে কোনটি মোকাবেলা করবে তা ঠাহর করতে না করতে আরেক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে বিএনপি। তারেক রহমানের সাজার প্রতিবাদে দলটি দু’দফা বিক্ষোভ কর্মসূচি দেয়ায় ঝিমিয়ে পড়েছে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবিরোধী জাতীয় ঐক্য গঠন। এরপর সামনে আসছে বিএনপির গুলশানের অফিস ও জিয়ার কবর সরানোর ইস্যু।
জঙ্গি ও সন্ত্রাসবিরোধী জাতীয় ঐক্য গঠন এবং কর্মসূচির প্রস্তুতির মধ্যেই দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাজা বড় ইস্যু হিসেবে হাজির হয়েছে বিএনপির সামনে। এ ইস্যুতে এরই মধ্যে রাজধানীসহ সারা দেশে নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী কর্মসূচি পালন করছে দলটি।
তারেক রহমানের সাজার পর আরো দু’টি বড় ইস্যু অপেক্ষা করছে বিএনপির জন্য। ওই দু’টি ইস্যু সামনে চলে এলে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবিরোধী জাতীয় ঐক্য গঠন এবং কর্মসূচি পালন কোনো অবস্থাতেই সম্ভব হবে না দলটির পক্ষে।
গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষিতে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, গুলশান-বনানী-বারিধারার আবাসিক ও কূটনৈতিক এলাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, রেস্তোরাঁ ও রাজনৈতিক কার্যালয় থাকবে না। এরই মধ্যে এসব এলাকায় থাকা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দেওয়া হয়েছে অফিস সরিয়ে নেওয়ার জন্য।
এ উচ্ছেদ প্রক্রিয়ার আওতায় গুলশান ২নং সার্কেলের ৮৬ নম্বর সড়কে অবস্থিত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয় অনিবার্যভাবেই পড়ছে। খুব শিগগিরই হয়তো এটি উচ্ছেদ প্রক্রিয়া শুরু করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
ওয়ান ইলেভেনের পর বনানীর হাওয়া ভবন থেকে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয় গুলশানের কূটনৈতিক পাড়ায় স্থানান্তর করা হয়। ২০১০ সালে ক্যান্টনমেন্টের বাসা থেকে উচ্ছেদের পর নিজের রাজনৈতিক কার্যালয়ের অদূরে গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কে বাসা ভাড়া নেন খালেদা।
সূত্র মতে, যাতায়াতের সুবিধা ও সার্বিক নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করেই বিএনপির চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া নিজের রাজনৈতিক কার্যালয় ও বাসা নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা গুলশানের কূটনৈতিক পাড়ার মধ্যে নেন।
তবে গত বছরের ৩ জানুয়ারি গুলশান কার্যালয়ে অবস্থান নিয়ে ‘অবরুদ্ধ’ হয়ে পড়লে চারদিকে গুঞ্জন ওঠে, কূটনৈতিক পাড়ায় খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয় আর থাকছে না। বিদেশি কূটনীতিক ও নাগরিকদের নিরাপত্তার খাতিরে কূটনৈতিক পাড়া থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে এ কার্যালয়। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি আলোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।
কিন্তু, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামান্য দূরে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলার পর সরকার সিদ্ধান্ত নেয়- এসব এলাকায় থাকা অননুমোদিত সব রেস্তোরাঁ উচ্ছেদ করা হবে। পরে আরেক ধাপ এগিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়, কোনো ব্যবসায়িক ও রাজনৈতিক কার্যালয় থাকতে পারবে না গুলশান-বনানী-বারিধারার কূটনৈতিক পাড়ায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, গুলশান থেকে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয় উচ্ছেদের পর আরেকটি বড় ইস্যু চলে আসবে বিএনপির সামনে। সংসদ ভবন এলাকা থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিসৌধ।
এরই মধ্যে লুই আইকানের নকশা ফেরত আনার সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে সরকার। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ওই নকশা সরকারের হাতে এসে পড়বে।
জানা গেছে, নকশা হাতে পাওয়ার পর লুই আইকানের নকশা বহির্ভূত কোনো স্থাপনা সংসদ ভবন এলাকায় রাখবে না সরকার। এক্ষেত্রে প্রথমেই উচ্ছেদ করা হবে জিয়াউর রহমানের সমাধি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী ২/৩ মাস এ দু’টি ইস্যু নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হবে বিএনপিকে। ফলে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবিরোধী জাতীয় ঐক্য গঠন ও কর্মসূচি পালনের সুযোগই পাবে না বিএনপি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণমাধ্যমকে বলেন, মূল জায়গা থেকে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে সরাতেই সরকার পরিকল্পিতভাবে এসব করছে। বিষয়টি জনগণের কাছে এখন পরিস্কার। সুতরাং, জনগণই জবাব দিতে শুরু করবে।