খোলা বাজার২৪, বুধবার, ২৭ জুলাই ২০১৬: দেশের বিভিন্ন স্থানে শিল্পাঞ্চল প্রতিষ্ঠায় নতুন আরও ৩১টি প্রস্তাব পেয়েছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চূড়ান্ত সায় পেলে চলতি বছরই পর্যায়ক্রমে এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রাক যোগ্যতা সনদ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী।
বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বেজার গর্ভনিং বোর্ডের সভা হওয়ার কথা, যেখানে ৩১টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রস্তাবসহ আরও ১৩টি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে।
এর মধ্যে সরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল রয়েছে ১৯টি, বাকি ১২টি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল।
পবন চৌধুরী বলেন, “গভর্নিং বোর্ডের সভায় ৩১টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রস্তাব ও তাদের নির্বাচন করার যৌক্তিকতা তুলে ধরা হবে। কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দিলেই কেবল এসব বিষয়ে পরবর্তী চিন্তা করা হবে।”
২০১০ সালে প্রতিষ্ঠার পর ইতোমধ্যে সরকারি, বেসরকারি ও বিদেশি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ৪৭টি অর্থনৈতিক অঞ্চলকে অনুমোদন দিয়েছে বেজা।
অনুমোদন পাওয়া দেশীয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে আমান গ্রুপ, বে গ্রুপ, আরিশা গ্রুপ, আব্দুল মোনেম গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপের অর্থনৈতিক অঞ্চল। দেশীয় বসুন্ধরা গ্রুপ ও ইউনাইডেট গ্রুপের একাধিক শিল্পাঞ্চল রয়েছে অনুমোদনের অপেক্ষায়।
এছাড়া যুক্ত হয়েছে প্রতিবেশী ভারত, চীন, জাপান, মালয়েশিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশের প্রস্তাব।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী মোট ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা ও এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দেশকে মধ্যম আয়ের পর্যায়ে উন্নীত করার প্রচেষ্টায় যুক্ত রয়েছে বেজা।
পাশাপাশি ফসলি জমিতে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন বন্ধ করা ও বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে রপ্তানি বৃদ্ধিও বেজার লক্ষ্য বলে কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন।
প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চল
জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য যেসব প্রস্তাব পাওয়া গেছে সেখান থেকে যাচাই-বাছাই করে ৩১টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রস্তাব বেজার গভর্নিং বোর্ডের সভায় তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানান।
এর মধ্যে শিল্প-কারখানা ছাড়াও পর্যটন অঞ্চলের প্রস্তাবও রয়েছে।
>> গোপালগঞ্জ সদরের গোবরা মৌজায় ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রায় ২০০ একর জমির ওপর গোপালগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চল-২।
>> চট্টগ্রামের পটিয়ায় একটি পরিত্যক্ত চা বাগানের ৭৭৪ একর জমিতে পটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল।
>> মহেশখালী বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (ঘটিভাঙা-সোনাদিয়া)। সেখানে মোট জমির পরিমাণ ১২ হাজার একর।
>> বাগেরহাটে ১ হাজার ৫৪৬ একর জমিতে সুন্দরবন ট্যুরিজম পার্ক।
>>বগুড়ার শাজাহানপুরে ২৫১ একর জমিতে বগুড়া অর্থনৈতিক অঞ্চল-১।
>> খুলনার বটিয়াঘাটায় ৫৯৩ একর জমিতে খুলনা অর্থনৈতিক অঞ্চল-১।
>> খুলনাল তেরখাদায় ৭০০ একর জমিতে খুলনা অর্থনৈতিক অঞ্চল-২।
>> সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় ২৫৫ একর জমিতে সিলেট বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল।
>> সিলেটের জৈন্তাপুরে ১৩৩ একর জমিতে স্টোন ক্রাশিং জোন।
>> কুড়িগ্রাম সদরে ২১৯ একর জমিতে কুড়িগ্রাম অর্থনৈতিক অঞ্চল-১।
>> নেত্রকোনা সদরে ২৬৬ একর জমিতে নেত্রকোনা অর্থনৈতিক অঞ্চল-১।
>> কক্সবাজারে ৩ হাজার ৯৮০ একর জমিতে মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চল।
>> ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ১৭৭ একর জমিতে ঈশ্বরগঞ্জ, ময়মনসিংহ অর্থনৈতিক অঞ্চল।
>> খাগড়াছড়িতে ৬৪০ একর জমির ওপর আলুটিলা বিশেষ পর্যটন জোন।
>> নারায়ণগঞ্জে ৪০০ একর জমিতে আড়াইহাজার-২ অর্থনৈতিক অঞ্চল।
>> জামালপুর সদরে ২৬৩ একর জমিতে জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল-২।
>> বাগেরহাটে ৩০০ একর জমিতে রামপাল অর্থনৈতিক অঞ্চল।
>> মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ৯৭ একর সরকারি খাস জমিতে মুন্সীগঞ্জ, গজারিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল।
প্রস্তাবিত বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর মধ্যে রয়েছে-
>> ঢাকা থেকে ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণে হাজারীবাগ এলাকায় ১৫ একর জমির ওপর বসুন্ধরা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল
>> কেরানীগঞ্জে ৫৪ একর জমির ওপর ইস্ট ওয়েস্ট বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল
>> কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায় ১০০ একর জমির ওপর অ্যালায়েন্স অর্থনৈতিক অঞ্চল
>> সিলেটে ৫০ একর জমির ওপর ফখরুল ইসলাম চৌধুরী অর্থনৈতিক অঞ্চল।