
বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেছেন, রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে ২০ দলীয় জোট নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তথ্যভিত্তিক ও বিজ্ঞানসম্মত বক্তব্য দিয়েছেন। তার বক্তব্যের পর এ নিয়ে কেউ প্রতিবাদ করেনি, বিপক্ষে কোনো কথা আসেনি। তার মানে সবাই তার বক্তব্যকে বিশ্বাস ও যৌক্তিক মনে করেছেন।
রামপালবিরোধীদের আন্দোলনের পেছানে ষড়যন্ত্র আছে, প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে নেতৃদ্বয় গত তিন বছর ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পরিবেশবাদী সংগঠন রামপালের বিরোধিতা করে আন্দোলন করছে ষড়যন্ত্রের প্রশ্ন নয়, দেশ ও দেশের স্বার্থ রক্ষার প্রশ্ন। তাই বিএনপির নেতৃত্বাধিন ২০ দল নয়, যারা রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে পরিবেশ বিনষ্ট করতে চায়, তাদের উদ্যোগের মধ্যে ষড়যন্ত্র আছে বলেই দেশবাসী মনে করে।
নেতৃদ্বয় আরো বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য বিদ্যুতের প্রয়োজনীয়তার কথা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। কিন্তু, দেশবাসীর আপত্তি হলো জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ, মানুষের জীবন-জীবিকাকে হুমকির মধ্যে ফেলে বিদ্যুৎ হোক এটা আমরা চাই না। এখানে ভারতবিরোধিতার কোনো প্রশ্ন নেই। সরকার ভারতের সঙ্গে যদি আরও ১০টি প্রকল্প হাতে নেয় তাতে আমাদের আপত্তি নেই। আর দেশের স্বার্থে কথা বললেই যদি ভারতের বিরোধীতা হয়, তাহলে দেশপ্রেমিকরা সকল সময়ই দেশের পক্ষে কথা বলবেন।
বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রামপাল বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন জানবার পর থেকে মানুষের মনে একটু আশার সঞ্চার হয়েছিল যে হয়তো প্রধানমন্ত্রী স্বাধীন বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য এবং দেশজোড়া জনমত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবেন এবং রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করে সুন্দরবনকে নিশ্চিত ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার পথ গ্রহণ করবেন। কিন্তু এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে সমগ্র জাতির আশাহত হয়েছেন। তাঁর বক্তব্য কোম্পানির বিজ্ঞাপনী প্রচারণা দ্বারা প্রভাবিত, সে কারণে তাঁর বক্তব্যে অনেক ভুল তথ্য, অতিরঞ্জন আছে। ‘এতোসব আন্দোলনের খরচ কে যোগান দেয়?’ প্রধানমন্ত্রীর এমন অভিযোগে জাতি হতবাগ হয়েছে। তিনি হয়তো ভুলে গেছেন ভাষা আন্দোলনে মানুষ পয়সা দিয়ে আনতে হয়নি, ৬০ দশকের আন্দোলন, ৬৯এর গণঅভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধে মানুষ জীবন বাজি রেখে গেছে। পয়সা দিয়ে দালাল আসে যেমন রামপালের প্রকল্পের পক্ষে প্রচারকরা আছে। এটা খুবই হতাশাজনক যে, প্রধানমন্ত্রী তাঁদের বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি করেছেন। সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনে তরুণেরাই প্রধান শক্তি। তারা আজকের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে জমায়েত হয়েছে। তাঁদের প্রেরণা, প্রাণের টান বোঝার ক্ষমতা থাকলে সুন্দরবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার উদ্যোগ দেখা যেতো না।
তারা বলেন, রামপাল কোন গোষ্টি বা দলের ইস্যু নয়, জাতীয় ইস্যু। আর শুধু ২০ দল কেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এর তীব্র বিরোধিতা করছে। আমারা বিশ্বাস করতে চাই প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রতি দায়বোধ থেকে জনগণের স্বার্থ বুঝতে চেষ্টা করে মানুষ ও প্রকৃতি বিধ্বংসী প্রকল্প বাতিল করবেন। সরকার যদি এর পরও সুন্দরবনের ক্ষতি করে, জনমতকে উপেক্ষা করে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে তাহলে জনগণ এর বিচার করবে।