খোলা বাজার২৪,বুধবার,০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬: ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেফতার হওয়া নব্য জেএমবির সদস্য দুই দম্পতি প্রশিক্ষণ নিতে পাকিস্তানে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিল বলে জানিয়েছে র্যাব। বুধবার দুপুরে র্যাব-২ এর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, জেএমবির বেশ কয়েকজন সদস্য জিহাদের প্রস্তুতি নিচ্ছে-এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টায় ফার্মগেটের আনন্দ সিনেমা হলের বিপরীতে একটি রেস্টুরেন্টে অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে মারজিয়া আক্তার সুমি (১৯), মো. শরিফুল ইসলাম ওরফে সুলতান মাহমুদ ওরফে মাহমুদ (১৮), মো. আমিনুল ইসলাম ওরফে আমিনুলকে (৩৪) গ্রেফতার করা হয়।
মুফতি মাহমুদ বলেন, গ্রেফতারকৃতদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাত ৩টায় নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় অভিযান চালিয়ে নাহিৎধন হবি লসন ৩দা সুলতানা (৩০) নামে অপর এক নারীকেও আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে জিহাদি বই, লিফলেট, সিডি ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
মারজিয়া আক্তার সুমি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবকে জানায়, সে ফেসবুকের মাধ্যমে জেএমবির সঙ্গে যুক্ত হয়। পরে তাকে থ্রিমা ও টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত করা হয়। এই গ্রুপের কাজ হলো বাছাইকৃত সদস্যদের বাংলাদেশের ভেতরে একটি করে অভিযানের দায়িত্ব দেওয়া এবং অভিযান সফল হলে বিদেশে নিরাপদ স্থানে পাঠানোর ব্যবস্থা করা। এই গ্রুপ থেকেই আফিফ, কাইফ, জাইশান ও মফিজ নামে আরও অনেকের সঙ্গে সুমির কথা হয়। এভাবে সে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ে। এরপর ২০ আগস্ট বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় সে। পরে সংগঠনের সিদ্ধান্তে সুলতান মাহমুদের সঙ্গে তার বিয়ে হয় এবং তারা দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করছিল।
গ্রেফতারকৃত মো. শরিফুল ইসলাম ওরফে সুলতান মাহমুদ জানায়, সে জেএমবির একজন সক্রিয় সদস্য। সে থ্রিমা/টেলিগ্রাম অ্যাপসে জেএমবির অফিসিয়াল গ্রুপে কাজ করতো এবং সংগঠনের জন্য হিযরতের সদস্য সংগ্রহ করতো। বর্তমানে দেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি এড়াতে তাকে দেশ ত্যাগের নির্দেশনা দেয়া হয়।
মোঃ আমিনুল ইসলাম প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, সে এবং নাহিদা সুলতানাও জেএমবির সক্রিয় সদস্য। আমিনুল সরাসরি সংগঠনের উপরের সারির নেতাদের নির্দেশ অনুসারে বিভিন্ন অপারেশনাল কর্মকাণ্ডের জন্য লোক সংগ্রহ এবং মোটিভেট করে থাকে। ব্যক্তি জীবনে সে বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক। কিন্তু শুধুমাত্র জঙ্গি গ্রুপে নিজেকে অর্ন্তভুক্ত করার ফলে সে তাদেরই জঙ্গি দলের অনুসারী নাহিদাকে সংগঠনের সিদ্ধান্তে বিবাহ করে হিযরতের উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগের পরিকল্পনা করে।
নাহিদা জানায়, সে ফেসবুকের মাধ্যমে জঙ্গি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হয়। পরবর্তীতে সে প্রশিক্ষণের জন্য দাওলাতুল ইসলামের অ্যাপস ব্যবহার করতো। সে নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজ থেকে উদ্ভিদ বিজ্ঞানে অনার্স মাস্টার্স সম্পন্ন করেছে সংগঠনের সিদ্ধান্তে গত ২২ মে সে আমিনুলকে বিয়ে করে।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরো জানিয়েছে, দেশে নব্য জেএমবির চার-পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কয়েকটি সক্রিয় গ্রুপ রয়েছে। তারা হত্যাসহ আত্মঘাতী হামলার পরিকল্পনা করছে।