বিমানবন্দর থেকে মোটর শোভাযাত্রা করে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় ম্যানহাটানের হোটেল ওয়ার্ল্ডোফ এস্টোরিয়ায়। নিউ ইয়র্ক সফরে সেখানেই তিনি থাকবেন।
আগের দিন ম্যানহাটনে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিরাপত্তার কড়াকড়ি থাকলেও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে জড়ো হয়েছিলেন বিমানবন্দরের বাইরে। শেখ হাসিনার গাড়ি বহর হোটেলের দিকে যাওয়ার সময় রাস্তার পাশ দাঁড়িয়ে স্লোগান দিয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
প্রধানমন্ত্রীর নিউ ইয়র্ক আগমন উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি ‘প্রতিরোধ কর্মসূচি’ ঘোষণা করলেও বিমানবন্দরে তাদের কোনো নেতা-কর্মীকে দেখা যায়নি। বিএনপির ওই কর্মসূচির পাল্টায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোও ‘যেখানে বিএনপি-জামাত-সেখানেই প্রতিরোধ’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা এসেছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিকে স্বাগত জানাতে।
শেখ হাসিনা সোমবার জাতিসংঘের সদরদপ্তরে উদ্বাস্তু ও অভিবাসনের ওপর সাধারণ পরিষদের উচ্চ পযার্য়ের প্ল্যানারি বৈঠকে ভাষণ দেবেন। এরপর তিনি মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সাং সু চির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।
স্থানীয় সময় বিকালে জাতিসংঘে ‘গ্লোবাল কমপ্যাক্ট ফর সেইফ, রেগুলার অ্যান্ড অর্ডারলি মাইগ্রেশন: টুওয়ার্ডস রিয়ালাইজিং দ্য ২০৩০ এজেন্ডা ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড অ্যাচিভিং ফুল রেসপেক্ট ফর দ্য হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড মাইগ্র্যান্টস’ শীর্ষক গোলটেবিলে কো-চেয়ারের দায়িত্ব পালন করবেন শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনের সাধারণ আলোচনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। পরে হোটেল ম্যারিয়ট ইস্টসাইডে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে আয়োজিত কাউন্টার টেররিজমের উপর এশিয়ান লিডার্স ফোরামের বৈঠকে যোগ দেবেন।
একই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আয়োজিত উদ্বাস্তু বিষয়ক একটি বৈঠক এবং এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেও শেখ হাসিনার যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
বুধবার বিকালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনের সাধারণ আলোচনায় বক্তব্য দেবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
ওইদিন সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত গ্লোবাল ডিল ইনিশিয়েটিভের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা। এছাড়া সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ারও কথা রয়েছে।
বুধবার রাতে নিউ ইয়র্কে হোটেল গ্র্যান্ড হায়াতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এবং পরদিন নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেওয়ার সময় বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও কমনওয়েলথ মহাসচিব, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
তিনি ২২ সেপ্টেম্বর সড়কপথে ভার্জিনিয়ায় যাবেন ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের কাছে।২৫ সেপ্টেম্বর এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে তিনি দেশের উদ্দেশে ওয়াশিংটন ডিসি ত্যাগ করবেন বলে জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের প্রধান ও স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন জানান।
সফর শেষে ২৬ সেপ্টেম্বর বিকালে ঢাকায় ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।