নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার বালাপাড়া সীমান্তবর্তী প্রত্যন্ত বালাপাড়া গ্রামে শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে দিয়ে একজন শিক্ষিত ও দক্ষ কর্মী হয়ে উঠেছে বানু নামের এক যুবতী। কিন্তু পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে তার অর্জিত কর্মক্ষমতার পূর্ণ ব্যবহার হচ্ছে না। বানুর দাবী কর্মক্ষেত্রে যে কোন সুস্থ শ্রমিকের চেয়ে সে কাজে কোন অংশে কম না। শারীরিক প্রবিন্ধীতা থাকা সত্ত্বেও সমাজের স্বাভাবিক দশটা মেয়েকে হার মানিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলছে সে।
করুনা কিংবা অন্যের দয়ায় নয় বরং নিজের যোগ্যতায় সে পাপোস, ওয়ালম্যাট জায়নামাজ, নকশীকাথা সহ নারী ও শিশুদের রকমারী পোশাক তৈরি করে উপার্যন করছে। কিন্তু তার প্রতিবন্ধীতার প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির কারনে সে উপার্জন সামান্যই। ১৯৮৭ সালে ডিমলা উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নে এক দরিদ্র পরিবারে বানুর জন্ম হয়। জন্মগতভাবে তার দু, হাত নেই বানুর আর স্বাভাবিক উচ্চতাও কম। নিজের ইচ্ছা শক্তির জোরে বানু ১০ম শ্যেনী পর্যন্ত লেখাপড়া করে।কাজের সদইচ্ছা ও মনের উদ্যম শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বানু পা দিয়ে সেলাইমেশিনের কাজ,সুইসুতারকাজ সহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করে গোটা সমাজকে হতবাক করে দিয়েছে।
বানুর জন্ম হবার পর থেকে দরিদ্র পিতা-মাতা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে তাকে হাটা শেখায়। তার বাবা আব্দুল ছাত্তার বলেন অনেকে বলেছিল এই প্রতিবন্ধী শিশু ফেলে দিতে।আমার মেয়েকে আমি ফেলে দেইনি প্রতিবন্ধী হলেও আমার মেয়ে। তার কর্মক্ষমতার দিকে তাকিয়ে অবাক আশেপাশের অনেকেই। বানু পা দিয়ে দর্জির কাজ,নকশার কাজ, হাত পাখা তৈরী,ভেনেটিব্যাগ তৈরী, সহ বিভিন্ন রকমারী কাজ করে।।সে চায় সমাজের বিত্তবান কেউ বা সরকারের সাহায্য সহযোগিতা।
বানু বলেন.আমার বড় বোনের কাছে হাতের কাজ ও লেখা-পড়া শিখেছি। সমাজের১০/১২টা মেয়ে পাওে না তা প্রতিবন্ধী বানু আপা পারে। আল্লাহতালা তার হাত দেয়নি কিন্ত পা দিয়ে সে রান্না থেকে শুরু করে অনেক কাজ করে।জীবনের নির্মম পরিহাস বানুকে ঘর সংসারের দিকে ঠেলে দেয় বানুর একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
এ বিষয়ে বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ, চেয়ারম্যান মোঃ জহুরুল ইসলাম জানান, বানুর জীবনে আমরা দেখেছি সব সময় সে চেষ্টা করে, যেটা পারবোনা সেটাকে তৈরী করা। প্রতিবন্ধী জীবনে সবচেয়ে বড় হলো তার মনের সাহস। সবকিছু তার মনের সাহসে সে নিজেকে তৈরী করেছে। আমরা বানুর মঙ্গল কামনা করি।