Tue. Apr 29th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

30খোলা বাজার২৪, রবিবার, ২ অক্টোবর, ২০১৬ : জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) স্মার্টকার্ডের জন্য ১০ আঙুলের ছাপ ও চোখের মণির ছবি দিতে হবে। এই কার্ডের চিপে (তথ্যভান্ডার) নতুন এই দুই তথ্য ছাড়াও ভোটার হওয়ার সময় প্রত্যেক নাগরিকের দেওয়া কমপক্ষে আরও ১৬টি তথ্যও সংরক্ষিত থাকবে।

পুরোনো ৩১টি তথ্যের মধ্যে অবশ্যই দিতে হবে—এমন তথ্য ১৬টি। এগুলো হলো ব্যক্তির নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম, পেশা, স্থায়ী ঠিকানা, বর্তমান ঠিকানা, বয়স, বৈবাহিক অবস্থা, জন্মতারিখ, রক্তের গ্রুপ, জন্ম নিবন্ধন সনদ, লিঙ্গ, জন্মস্থান, শিক্ষাগত যোগ্যতা, দৃশ্যমান শনাক্তকরণ চিহ্ন, ধর্ম। এ ছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্ট নম্বর, আয়কর সনদ নম্বর, টেলিফোন ও মোবাইল নম্বর, মা-বাবার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, স্বামী বা স্ত্রীর নাম ও পরিচয়পত্র নম্বর থাকলে এবং মা-বাবা, স্বামী বা স্ত্রী মৃত হলে সে-সংক্রান্ত তথ্য, অসামর্থ্য বা প্রতিবন্ধী হলে সেই তথ্যও উল্লেখ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এসব তথ্যই স্মার্টকার্ডে থাকবে।
কাগজের তৈরি লেমিনেটেড জাতীয় পরিচয়পত্রের ওপরে ছয়টি তথ্য লেখা থাকে। এটি সবাই দেখতে পারে। কিন্তু স্মার্টকার্ডে আটটি তথ্য থাকবে। এখানে জন্মস্থান ও কার্ড প্রদানের সময়টি লেখা থাকবে।
বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যে আজ রোববার থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডির স্মার্টকার্ড বিতরণ শুরু হচ্ছে। চলবে পরবর্তী ৪০০ দিন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আজ সকালে স্মার্টকার্ড বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। নয় কোটিরও বেশি ভোটার, অর্থাৎ যাঁদের বয়স ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে, তাঁরাই এই কার্ড পাবেন।
অবশ্য জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০১০-এ বলা আছে, জাতীয় পরিচয়ের জন্য একজন নাগরিকের বায়োমেট্রিকস ফিচার, যেমন: আঙুলের ছাপ, হাতের ছাপ, তালুর ছাপ, আইরিশ বা চোখের মণির ছবি, মুখমণ্ডলের ছবি, ডিএনএ, স্বাক্ষর এবং কণ্ঠস্বর সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে হবে। এই স্মার্টকার্ডে আইনে উল্লেখিত দুটি তথ্য (আঙুলের ছাপ ও চোখের মণির ছবি) থাকছে। তাই নতুন করে আঙুলের ছাপ, চোখের মণির ছবি নেওয়া হলেও নিবন্ধন আইন পুরোপুরি বাস্তবায়নের এখনো অনেক তথ্য সংগ্রহই বাকি থেকে যাচ্ছে।
স্মার্ট পরিচয়পত্র দিতে ব্যয় হবে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা। এর বাইরে কার্ড বিতরণের জন্য আরও ৮৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। অর্থাৎ প্রায় ৯০০ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পে অতিরিক্ত কী সুবিধা থাকছে, যা আগের পরিচয়পত্র থেকে পাওয়া যাচ্ছিল না?—জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের একজন বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তা বলেন, এই কার্ডের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এটি নকল করা যাবে না। কেউ করলে সহজেই ধরা পড়ে যাবেন। দ্বিতীয়ত, আগের কার্ডে কেবল তর্জনী ও বৃদ্ধাঙ্গুলের ছাপ ছিল। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, এ দুটি আঙুলের সঙ্গে পরে আর ছাপ মিলছে না। কিন্তু এখন ১০ আঙুলের ছাপ থাকায় একটা না একটা মিলবেই। চোখের মণির ছবি নেওয়াও ব্যক্তির পরিচয় সঠিকভাবে দেবে। তৃতীয়ত, চিপ থেকে ব্যক্তি নিজের তথ্য দেখতে পারবেন। তবে তাঁর তথ্য অন্যরা কোনোভাবেই জানতে পারবেন না।
নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক আসাদুজ্জামান বলেন, প্রাথমিকভাবে প্রায় ৫০ লাখ স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হবে। প্রথমে ঢাকার রমনা ও উত্তরা থানা এবং বিলুপ্ত ছিটমহলে কার্ড বিতরণ হবে। এরপর সারা দেশে দেওয়া হবে।
জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যখন, যেখানে এই কার্ড বিতরণ হবে, তখন সেখানে মাইকিং করে, প্রচার চালিয়ে জনগণকে জানানো হবে। এ ছাড়া মোবাইল ফোনের মাধ্যমে একটি নম্বরে খুদে বার্তা পাঠিয়ে নাগরিকেরা কার্ড দেওয়ার সময় ও স্থান সম্পর্কে জানতে পারবেন। ২০১৭ সালের শেষে এই প্রকল্পের অধীনে ১০ কোটিরও বেশি ভোটারের মধ্যে কার্ড বিতরণ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ বলেন, বিতরণ শুরু হলে নির্দিষ্ট স্থানে নাগরিকদের ১০ আঙুলের ছাপ ও চোখের মণির ছবি দিয়ে স্মার্টকার্ড নিতে হবে। তিনি বলেন, আগে নেওয়া আঙুলের ছাপ সংগ্রহে অনেক ত্রুটি ছিল। অনেকের আঙুলের ছাপ মিলছিল না। ১০ আঙুলের ছাপ এই সমস্যার সমাধান করবে। -প্রথম আলো