খোলা বাজার২৪, সোমবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৬ : সুনামগঞ্জের মাধবপুরের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে মাইনুল ইসলাম শামীম ওরফে সিফাত ওরফে সমির ওরফে ইমরান সম্প্রতি ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তিনি জানান, সাগর নামের (মেজর জিয়া) এক বড় ভাই, সেলিম ও শরিফুল ওরফে সাকিবের পরিকল্পনায় প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। সিলেটে লেখাপড়া করার সময় রাফি নামের একজনের সঙ্গে পরিচয় হয়, যে জিহাদের কথা বলে। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সিলেট শহরের চৌহাট্টা মোড়ের কাছে এক বড় ভাইয়ের সঙ্গে রাফি তাকে পরিচয় করিয়ে দেয়। সিফাত পরে জানতে পারেন ওই ব্যক্তির নাম সাগর।
২০১৪ সালের নভেম্বরে ওই বড় ভাইয়ের নির্দেশে ঢাকায় এলে সেলিম তাকে এয়ারপোর্টের উল্টো পাশে আশকোনার একটি মেসে নিয়ে যান। ওই মেসে সিয়াম, তাহরিক, মারুফ ও জামান নামে আরো চারজনের সঙ্গে সিফাতের পরিচয় হয়। সেখানে শরিফুল তাদের পিস্তল ও চাপাতি ব্যবহার করা শেখাত। এই দল ২০১৫ সালের প্রথম দিকে সাভারে নিয়াজ মোর্শেদ বাবুকে হত্যা করে। এরপর ছয়-সাত মাস বাড়িতে থেকে টঙ্গীর মাস্টারপাড়ার মেসে সাজ্জাদ ওরফে সিয়াম ও শরিফুলের সঙ্গে থাকেন সিফাত। এরপর টঙ্গীর চেরাগ আলী এলাকার সুজন ওরফে সামাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয় তার। তখন সেলিম তাদের জানান, শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে প্রকাশক দীপন ও লালমাটিয়ায় প্রকাশক টুটুলকে হত্যা করতে হবে। টঙ্গীর বর্ণমালা রোডে আরেকটি মারকাজ (আস্তানা) ছিল। সেখানে আকাশ, আলম, রাফি, তৈয়ব, রায়হান ওরফে রফিক ওরফে শিহাব ছিল। সেলিম তাদের মহাখালী কাঁচাবাজারে আরেকটি মারকাজ আছে বলে জানান।
ওই মারকাজে গিয়ে আকাশ, তৈয়ব, আলম ও জনিকে দেখতে পান সিয়াম। সেখানে সেলিম তাদের সবাইকে দীপনের ছবি দেখিয়ে রেকি করতে বলে। তৈয়বের মাধ্যমে তাদের সে আস্তানায় পাঁচটি চাপাতি এবং নিজে পিস্তল ও গুলি নিয়ে আসে সেলিম। কথামতো গত বছরের ৩১ অক্টোবর আসাদ, আকাশ, আলম, তৈয়ব ও জনি প্রকাশক দীপনকে হত্যা করতে আজিজ সুপারমার্কেটে যায়। তখন সিফাত তাদের নির্দেশনা দেন। একই দিন টঙ্গীর বর্ণমালা রোডের মারকাজ থেকে শরিফুল, সামাদ, সিহাব, রফিসহ কয়েকজন লালমাটিয়ায় প্রকাশক টুটুলকে হত্যা করতে যায়। পরে সিফাত আটক হলে জবানবন্দি দেন। সিফাতের ভাষ্য মতে, যেসব ব্লগার, লেখক ও প্রকাশক খুন হয়েছে তার প্রতিটি ঘটনার পরিকল্পনা থেকে বাস্তবায়ন তদারকির মূল ব্যক্তি বড় ভাই সাগর ওরফে মেজর জিয়া। তার অন্যতম সহযোগী সেলিম ওরফে হাদী।