Tue. Oct 21st, 2025
Advertisements

14kখোলা বাজার২৪, সোমবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৬ : মিরপুরের কালশির বিহারী ক্যাম্পে পুলিশের সঙ্গে সাদা পোশাকের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গুলি ও আগুনে ১১ জন নিহতের ঘটনা আড়ালেই থেকে গেল।
ঘটনার পর তা-বে জড়িত বেশকজন ভিডিও ফুটেজে শনাক্ত হয়েছে বলে দাবি করেছিল পুলিশ। এছাড়া প্রায় আড়াই বছর ধরে এ ঘটনার তদন্ত চলছে। কবে শেষ হবে তা জানেননা তদন্ত সংশ্লিষ্টরাই।
ওই সময়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে থানা পুলিশের পাশাপাশি তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে ডিবি পুলিশ। এছাড়া একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা ঘটনাস্থল এবং আশপাশ এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে বেশকিছু তথ্য সংগ্রহ করেন। কিন্তু এ তদন্ত আর আলোর মুখ দেখেনি।
এ ব্যাপারে ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা হচ্ছে। এখনো কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। বিশেষ করে ক্যাম্পে আগুন দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন তারা। এ ঘটনায় জড়িতরা শিগগিরই ধরা পড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এদিকে কালশির একাধিক বিহারী অভিযোগ করেন, তাদের ক্যাম্পে হামলাকারীরা প্রকাশ্যেই ঘুরছে। রাজনৈতিক কারণেই তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না। বিহারীদের ওই জায়গায় সন্ত্রাসীদের আস্তানা বানাতে চাচ্ছে একটি মহল। যাদের দিয়ে এই হামলা চালানো হয়েছিল। তাদের উচ্ছেদের জন্যই এই হামলা ও খুন। কালশীর বিহারীরা এখনও বিচারের আশায় বুক বেঁধে আছেন। আর স্থানীয় সন্ত্রাসীদের অব্যাহত হুমকিতে নিরাপত্তার কথা ভেবে অনেক পরিবার তাদের প্রিয় বিহারী পল্লী ছেড়ে গেছে বলে জানা গেছে।
স্ট্রেন্ডেড পাকিস্তানিস রিপেট্রিয়েশন কমিটি (এসপিজিআরসি) এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এম. শওকত আলী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, নির্যাতিত হলাম আমরা, আর আমরাই মামলা-গ্রেফতার-রিমান্ড দিয়ে হয়রানি হচ্ছি। অথচ যারা ঘটনার নায়ক তাদের গ্রেফতার করা হয়নি। ভবিষ্যতে যাতে কালশীর মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় সে ব্যবস্থা গ্রহণ, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন, তদন্ত সাপেক্ষে কালশীর ঘটনার নায়কদের চিহ্নিত করে বিচার করা, দেশের সব বিহারী ক্যাম্পে পুলিশি প্রহরার ব্যবস্থা করে নিরাপত্তা জোরদার করা ও মানুষ হিসেবে ন্যায্য অধিকার পাওয়ার দাবি জানান তিনি।
অপরদিকে বিহারীদের সংগঠন উর্দূ স্পিকিং পিপলস ইয়ুথ রিহাবিলিটেশন ফর মুভমেন্টের সেক্রেটারি সাইদ আলি জানান, এতগুলো মানুষকে পুড়িয়ে মারা হল। কেউ গ্রেফতার হলো না। পুলিশ কেন তাদের গ্রেফতারে গড়িমসি করছে তা বোধগম্য নয়। তিনি অবিলম্বে কালশীর ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও প্রকৃত হামলাকারী ও ইন্ধনদাতাকে চিহ্নিত করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ১৪ জুন কালশীর বিহারী ক্যাম্পের বাইরে থেকে ঘরের দরজায় তালা দিয়ে আগুন দিলে একই পরিবারের আটজনসহ ৯ জন দগ্ধ এবং গুলিতে একজন (কারচুপি শ্রমিক আজাদ) নিহত হন।