খোলা বাজার২৪ মঙ্গলবার, ১৮অক্টোবর, ২০১৬: ডুবন্ত-ফুটবল ঘিরে অনেকদিন ধরেই যে সমালোচনার ঝড় বইছে তার কেন্দ্রবিন্দুতে তিনি। ভুটানের কাছে হেরে চূড়ান্ত ভরাডুবির পর সেটা আরো বেড়েছে। কিন্তু কয়েকদিন মুখ বন্ধই রেখেছিলেন কাজী সালাউদ্দিন আহমেদ। রোববার অবশ্য মুখ খুলেছেন। মতিঝিলে বাফুফে ভবনের বাইরে প্রতিবাদরত সমর্থকদের অবস্থান ধর্মঘটের মধ্যেই পদত্যাগের পথে না হেঁটে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সালাউদ্দিন। বাফুফে সভাপতি তাতে দেশের ফুটবলের দুর্দশায় দুঃখ প্রকাশ করে কাঠামোকে ঢেলে সাজানোর পুরনো রেকর্ডই বাজিয়েছেন।
রোববার বাফুফে ভবনে ফুটবল বাঁচাতে সার্বিক পরিকল্পনা তুলে ধরে সালাউদ্দিন বলেছেন, দেশের ফুটবল কাঠামো ঢেলে সাজিয়ে আধুনিক ও কার্যকরী রূপ দিতে সমন্বিত একটি উন্নয়ন পরিকল্পনা হাতে নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। সেই পরিকল্পনার রূপরেখা বাস্তবায়নের পথে হাঁটবে আগামী জানুয়ারি মাস থেকে।
সালাউদ্দিন একসময় বাফুফের সহ-সভাপতি ছিলেন। তখনকার কমিটি দায়িত্বশীলতার সঙ্গে ফুটবলকে এগিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়েছিলেন- এমন অভিযোগ করে সেই কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছিলেন তিনি। এখন দেশের ফুটবলে যখন নিকষ কালো অন্ধকার, তখন আর সেই পথে হাঁটলেন না এই ফুটবল কর্মকর্তা। তবে জাতীয় দলের এমন ব্যর্থতার জন্য দেশের মানুষের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন তিনি। সঙ্গে প্রকাশ করেছেন আগামী তিন বছরের ‘রূপরেখা’।
বাফুফে সভাপতি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বলেছেন, ‘ভুটানের বিপক্ষে হারের পর প্রচারমাধ্যম ও বিভিন্ন অঙ্গনে দেশের ফুটবলকে ঘিরে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। আমি এখানে আমাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করার জন্য এসেছি। বাংলাদেশের ফুটবল একটা দুঃসময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। ফুটবলের এমন দুঃসময়ে অন্যদের মত বাফুফে কর্তারাও দুঃখ পেয়েছে।’
ভরাডুবির বিষয়টি আগেই আঁচ করতে পেরেছিলেন জানিয়ে বাফুফে বস বলেছেন, ‘জাতীয় দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স, ফুটবলারদের পারফরম্যান্স ও লিগের কাঠামো দেখে আমার মনে হয়েছিল ভুটানে আমরা পারবো না। তাই কোচ, ট্রেনিং, আবাসন সুবিধা দিয়ে চেষ্টা করেছি। এগুলো নিয়ে কোনো ঘাটতি ছিল না। কিন্তু কাজ হয়নি।’
নিজের তো আর মাঠে যেয়ে খেলার সুযোগ নেই। সেটা থাকলে নিজে ও সালাম মুর্শেদি যেয়ে খেলে আসতেন বলে মন্তব্য করেছেন বাফুফে সভাপতি। পরে তৃণমূলে নজর দেওয়ার প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘আমাদের এখন তৃনমূলে নজর দেওয়ার সময় এসেছে। টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পল স্মলি এ নিয়ে একটা গাইড লাইন দিয়েছেন। আগামী তিন বছরের জন্য দেওয়া এই গাইড লাইনটি আগামী ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যেই চূড়ান্ত হয়ে যাবে। আশা করি জানুয়ারি থেকেই আমরা কাজ শুরু করতে পারবো।’
আগামী বছর থেকে ইয়ুথ ন্যাশনাল লিগ, স্কুল ফুটবল, সোহরাওয়ার্দী কাপ, শের-ই-বাংলা কাপ ফুটবল চালু করতে চায় বাফুফে। প্রতিবছর অনূর্ধ্ব-১৬ ও অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবল লিগও করার পরিকল্পনা সংস্থাটির। এজন্য অর্থের প্রয়োজনীয়তার কথা সামনে তুলে এনেছেন সালাউদ্দিন।
অর্থের সংস্থান হলেই বাফুফে মাঠে নেমে পড়বে জানিয়ে সভাপতি বলেছেন, ‘প্রতিটি দেশেরই একটি দুঃসময় আসে। আবার সেখান থেকে উতরেও যায়। আমার বিশ্বাস আগামী তিন বছরের মধ্যে আমরা আমাদের ফুটবলের সংকটময় মুহূর্ত কাটিয়ে উঠতে পারবো। আমি আশাবাদী এ নিয়ে।’