Tue. Apr 29th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪, সোমবার, ২১ নভেম্বর ২০১৬:  বাগেরহাটের মংলায় হঠাৎ করে ডাকাতির উৎপাত শুরু হয়েছে। দুই মাসে একই এলাকায় দু’টি দুধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (২০ নভেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে পৌরসভাস্থ পশ্চিম শেহলাবুনিয়া গ্রামের মুন্সী বাড়ির একেএম শওকত আলীর ঘরের সবার হাত-মুখ বেঁধে নগদ অর্থ, স্বর্ণালঙ্কারসহ কয়েক লক্ষ টাকার মালামাল নিয়ে গেছে ৬-৭ জনের ডাকাত দল। জানালার গ্রিল কেটে ঘরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে সবাইকে জিম্মি করে তারা।

স্থানীয়রা জানান, মসজিদে মাইকিংয়ে আমরা ডাকাত পড়ার খবর জানতে পারি। লাঠিসোটা নিয়ে ছুটে এসে দেখি ডাকাতরা পালিয়ে গেছে। গত মাসেও পার্শ্ববর্তী শেহলাবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা মংলা পোর্ট পৌরসভার কর্মকর্তা বাহাদুরের বাসায় একই কায়দায় ডাকাতি হয়েছে। ওই ঘটনায় কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয় ডাকাতির ঘটনা ঘটলো।

মংলায় কখনো ডাকাতের উৎপাত ছিল না উল্লেখ করে এলাকাবাসী জানান, পরপর দুই মাসে একই কায়দায় দু’টি ডাকাতির ঘটনায় সবার মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এমন অবস্থা এখানে কখনো ছিল না। এমনকি গত এক যুগে কোন ডাকাতির ঘটনা পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। ডাকাতরা পরিচিত লোকজন বলেই মনে করছেন সবাই।

এদিকে ডাকাতির শিকার সরকারি চাকুরিজীবী শওকত আলী বলেন, আমি, আমার স্ত্রী ও ছোট ছেলে জারিফ এক রুমে ঘুমাচ্ছিলাম। পাশের রুমে ছিল বড় ছেলে জুবায়ের। গভীর রাতে হঠাৎ শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। উঠে দেখি ঘরের ভেতরে কয়েকজন। তখনই তারা ছুরি, চাপাতিসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র ধরে আমাদের জিম্মি করে। সবার হাত-পা ও মুখ বেঁধে ফেলে। পরে ঘরের সবকিছু তন্ন তন্ন করে চারটি মোবাইল হ্যান্ডসেট, দেড় লক্ষাধিক টাকা, প্রায় আট ভরি স্বর্ণালঙ্কারসহ আনুমানিক ছয় লক্ষ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। ডাকাতরা সংখ্যায় ৬-৭ জন ছিল।

তিনি বলেন, ডাকাতির সময় তারা একটার পর একটা সিগারেট টানছিল। ডাকাতরা সম্ভবত আমার ছোট ভাই সেলিমের ঘরে ঢুকতে চেয়েছিল। ভুল করে আমার ঘরে ঢুকে পড়েছে। কারণ, তারা জিজ্ঞাসা করেছিল, ‘এটা প্রফেসরের ঘর না?’ এ সময় আমার স্ত্রী পাশের ঘরের কথা বললে তারা একে অন্যকে ধমক দেয় এবং ভুল ঘরে ঢুকে পড়েছি বলে জানায়। অর্থাৎ, তাদের অন্য কোন খারাপ উদ্দেশ্যও থাকতে পারে।

স্থানীয় ইকবাল হোসেন সোহাগ বলেন, ডাকাতরা নিশ্চয়ই পরিচিত। ডাকাতরা বাহাদুরকে অস্ত্র ধরে জানতে চেয়েছিল তার মোটরসাইকেলটা কোথায়। পরিচিত না হলে তার মোটরসাইকেলের কথা জানবে কীভাবে? বিষয়টা খুবই উদ্বেগের মন্তব্য করে সোহাগ বলেন, এমন ঘটনা জন্মের পর থেকে কখনো দেখিনি। পরের দিন আমার ঘরে ডাকাতি হবে না তার নিশ্চয়তা কী? প্রথম ঘটনাটিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিলে হয়ত দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটতো না।

এ ব্যাপারে মংলা থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, বিষয়টা সত্যিই উদ্বেগজনক। দু’টি ঘটনাই একই কায়দায় হয়েছে। গত মাসের ২৮ তারিখ একটা ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে, গতরাতে ২১ নভেম্বর আরেকটি ঘটেছে। মনে হচ্ছে এটা পরিকল্পিত। আমরা টহল বাড়িয়েছি। শওকত আলীর বাড়িতে ডাকাতির খবর পেয়ে আমি রাতেই সেখানে গিয়েছিলাম। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। বাহাদুর সাহেবের ঘটনায় কোন ক্লু পাওয়া যায়নি। তবে আজকের ঘটনায় ক্লু পেয়েছি। আশা করছি শীঘ্রই ডাকাতদের ধরা সম্ভব হবে।