Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

13kখোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর ২০১৬: সড়কের পুরোনো পিচ ও ইট-পাথর কেটে নতুন করে তা সংস্কার করতে দুটি আধুনিক যন্ত্র আমদানি করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এর মধ্যে একটি যন্ত্র দিয়ে ১২ ফুট প্রস্থের এক কিলোমিটার সড়ক কাটতে সময় লাগবে এক ঘণ্টা। আর কাটার পর বেরিয়ে আসা ইট-পাথর পুনঃপ্রক্রিয়া করা যাবে আরেকটি যন্ত্র দিয়ে। এই যন্ত্র প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে আনা হয়েছে। আর সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এসব যন্ত্রসহ অন্যান্য যন্ত্রের সাহায্যে এক কিলোমিটার সড়ক নতুন করে সংস্কার করতে সময় লাগবে সাত ঘণ্টা।

এই যন্ত্র দুটি হলো ‘কোল্ড মিলিং মেশিন’ ও ‘কোল্ড রি-সাইক্লিং প্ল্যান্ট’। যন্ত্র দুটি যথাক্রমে ইতালি ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আমদানি করা হয়েছে। এতে ডিএসসিসির প্রায় ২৯ কোটি টাকা ব্যয় হয়। ডিএসসিসি জানায়, কোল্ড মিলিং মেশিন দিয়ে নিখুঁতভাবে ১৩ ইঞ্চি গভীর করে সড়কের পিচ ও ইট-পাথর কাটা যাবে। আর কোল্ড রি-সাইক্লিং প্ল্যান্ট দিয়ে এই ইট-পাথর ঘণ্টায় ১২০ টন পুনঃপ্রক্রিয়া (রি-সাইক্লিং) করা যায়। রি-সাইক্লিং করে উপকরণগুলোর ৪০ শতাংশ ব্যবহারের উপযোগী করা যায়। এতে একটি সড়ক নির্মাণে প্রতি কিলোমিটারে প্রায় ৪৫ ভাগ খরচ কমে যাবে।

ডিএসসিসির মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, গত শনিবার এই দুটি যন্ত্রের সাহায্যে ডিএসসিসির ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের পলাশীর জহির রায়হান রোডের সংস্কারকাজের উদ্বোধন করা হয়। ওই দিন পর্যাপ্ত জনবল ও আনুষঙ্গিক যন্ত্র দিয়ে এক কিলোমিটার সড়ক সাত ঘণ্টায় সংস্কার করা সম্ভব হয়েছে। এভাবে রাজধানীর অন্যান্য সড়কও সংস্কার করা হবে।

উন্নত বিশ্বে সড়ক তৈরির কাজে এই দুটি আধুনিক যন্ত্র ব্যবহৃত হয় উল্লেখ করে মেয়র বলেন, পরিবেশবান্ধব এই যন্ত্র থেকে কোনো কার্বন নিঃসরণ হবে না। এটি থেকে কোনো ধুলোবালি ও ধোঁয়াও নির্গত হবে না। এ ছাড়া আগে যে রাস্তাটি বানাতে এক কোটি টাকা ব্যয় হতো, এখন সেটি সর্বোচ্চ ৬০ লাখ টাকায় তৈরি করা যাবে।

ডিএসসিসির ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান বলেন, কোল্ড মিলিং মেশিন দিয়ে সড়কের পিচ ও ইট-পাথর কেটে প্রথমে তা একটি ট্রাকে রাখা হয়। পরে পুনঃপ্রক্রিয়ার জন্য কোল্ড রিসাইক্লিং প্ল্যান্টে নিয়ে যাওয়া হয়। রি-সাইক্লিং করে উপকরণগুলোর ৪০ শতাংশ ব্যবহারের উপযোগী করা যায়। জহির রায়হান সড়কটির দুই ইঞ্চি পুরু পরিমাণ কাটা হয়েছিল।

ডিএসসিসির প্রকৌশল বিভাগ জানায়, বর্তমানে পুরান সড়ক সংস্কার মানে আগের সড়কের ওপরই ঘষামাজা করা। এতে করে সড়কের পুরুত্ব বেড়ে যায়। কিছু এলাকায় বাসাবাড়ির চেয়ে সড়কের উচ্চতা বেশি। বৃষ্টি হলেই সড়কের পানি বাসাবাড়িতে ঢুকে যায়। এ ছাড়া পুরোনো সড়কের ওপর নতুন করে সংস্কারের কারণে সড়কের স্থায়িত্বকালও তুলনামূলক কম হতো।

ডিএসসিসির যান্ত্রিক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনিসুর রহমান বলেন, নতুন যন্ত্রগুলোর কারণে খুব সহজেই পুরোনো আস্তর তুলে নতুন করে রাস্তা তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে সড়কের উচ্চতা বাড়বে না। এর মাধ্যমে সময় ও খরচ দুই-ই বাঁচবে।