খোলা বাজার২৪, শনিবার, ১৪ জানুয়ারি ২০১৭: হিন্দু পুরোহিত ও বিদেশি নাগরিক হত্যাসহ ২২ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত গুলশানে হলি আর্টিজান হামলার অন্যতম ‘পরিকল্পনাকারী’ জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী।
শনিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটি) প্রধান ও ডিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, শোলাকিয়া হামলায় একজন ও গুলশান হামলায় ২ জন হামলাকারীকে রিক্রুট করার দায়িত্ব পালন করেছিলেন এই রাজীব গান্ধী।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের একটি দল টাঙ্গাইল জেলার এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধীকে গ্রেফতার করে।
মনিরুল ইসলাম বলেন, রাজীব গান্ধী নব্য জেএমবির একজন শীর্ষ নেতা। নব্য জেএমবির প্রধান সমন্বয়কারী তামিম আহমেদ চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও উত্তরবঙ্গের সামরিক কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন রাজীব গান্ধী।
মনিরুল ইসলাম বলেন, রংপুরে জাপানি নাগরিক হোসিও কোনিও হত্যা, টাঙ্গাইলের দর্জি নিখিল হত্যা, পাবনার পুরোহিত নিত্তারঞ্জন পান্ডে হত্যা, রংপুরের মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা, কুষ্টিয়ার হোমিও ডাক্তার সানাউর হত্যা, পঞ্চগড়ের পুরোহিত যুগেস্বর হত্যা, দিনাজপুরের হোমিও চিকিৎসক ধীরেন্দ্রনাথ হত্যা এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিকীর হত্যাসহ ২২টি হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিয়েছেন রাজীব গান্ধী।
সিটি প্রধান বলেন, তামিম চৌধুরী ও নুরুল ইসলাম মারজানের সঙ্গে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা পরিকল্পনা করেছিলেন রাজীব গান্ধী। গুলশান হামলায় অংশগ্রহণকারী খায়রুল ইসলাম পায়েল ওরফে বাঁধন এবং শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল ওরফে বিকাশকে নব্য জেএমবিতে পরিকল্পিতভাবে রিক্রুট করে।
মনিরুল আরো বলেন, গুলশান হামলার জন্য জঙ্গিদের নির্বাচিত করে তাদের ঢাকায় পাঠায় রাজীব। পরবর্তী সময়ে গুলশান হামলার জন্য অপারেশনাল হাউস হিসেবে ব্যবহৃত বসুন্ধরার বাসায় এক সপ্তাহ অবস্থান করে অংশগ্রহনকারী দলের সবাইকে রাজীব হামলায় অংশগ্রহণের জন্য চূড়ান্তভাবে প্রস্তুত করেন। একইভাবে শোলাকিয়া হামলায় জড়িত শফিউল ইসলাম ওরফে ডনকেও তিনি হামলার জন্য প্রস্তুত করেন এবং তামিমের কাছে হস্তান্তর করেন।
নব্য জেএমবিতে যোগদানের পূর্বে রাজীব গান্ধী জেএমবির সূরা সদস্য ডা. নজরুল ইসলাম এর সহযোগী হিসেবে জেএমবি’র কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। গুলশান হামলার পর গ্রেফতার এড়াতে দেশের বিভিন্ন স্থানে তিনি আত্মগোপনে থাকেন। তার দেয়া তথ্য যাচাইবাছাই চলছে। আদালতে নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হবে বলে জানান মনিরুল ইসলাম।