Wed. Mar 12th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

74খােলা বাজার২৪, রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭: ব্যাংকিং খাতে বিতরণ করা মোট ঋণের ৯ দশমিক ২৩ শতাংশ এখন খেলাপি ঋণ। টাকার অংকে এর পরিমাণ ৬২ হাজার ১৭২ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তৈরি করা সর্বশেষ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত, বেসরকারি ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর প্রতি তিন মাস অন্তর বিতরণ করা ও খেলাপি ঋণের তথ্য-উপাত্ত নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর মোট ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৭৩ হাজার ৯২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিশেষ সুবিধা নিয়ে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকারও বেশি পরিমাণ ঋণ পুনঃতফসিল ও পুনর্গঠন করা হয়েছে। আর পুনঃতফসিল হওয়া ঋণের মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা আবারও খেলাপি হয়ে পড়েছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিশেষ সুবিধা দেওয়াটাই ব্যাংকিং খাতের জন্য সর্বনাশ ডেকে এনেছে। ‘ তিনি বলেন, ‘ব্যাংক খাতে বিশেষ সুবিধা নেওয়াটা এখন কালচার বা সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুযোগ দিতে দিতে এমন পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে, যারা ভালো গ্রাহক ছিল, তারাও এখন টাকা ফেরত দিতে চায় না। এ কারণে এই খারাপ সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারের এই বিষয়ে আরও কঠোর হওয়া জরুরি বলেও মনে করেন তিনি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৫১ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা। এই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১০ হাজার ৮০১ কোটি টাকা। আগের বছরে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫ লাখ ৮৪ হাজার ৬১৫ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপি ঋণ ছিল ৫১ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা।
অবশ্য তিন মাস আগে সেপ্টেম্বরে ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ ছিল ৬৫ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ১০ দশমিক ৩৪ শতাংশ। সে বিবেচনায় তিন মাসের ব্যবধানে খেলাপি কমেছে তিন হাজার ৫৫৯ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় খাতের ৬ বাণিজ্যিক ব্যাংকে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ১২৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১০ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা, বেসিকের ছয় হাজার ৩১১ কোটি টাকা, অগ্রণী ব্যাংকের পাঁচ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা, জনতার চার হাজার ১৯৩ কোটি টাকা, রূপালীর দুই হাজার ৭৯৪ কোটি টাকা এবং বিডিবিএলের ৭৩৪ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৩ সালের ১ জুলাই থেকে ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে শিথিল নীতিমালায় বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে ৫০ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বিশেষ সুবিধায় পাওয়া রাষ্ট্রীয় খাতের ৬ বাণিজ্যিক ব্যাংকে পুনঃতফসিলকৃত ঋণের প্রায় ৪০ শতাংশ খেলাপি হয়ে গেছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বি আইডিএস) গবেষক ও অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ভালো উদ্দেশ্যে বেশ কিছু গ্রাহককে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিশেষ সুবিধা দিয়েছিল। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, সেই সুবিধা তারা কাজে লাগায়নি। এ কারণে পুনঃতফসিল করা ঋণের একটা বড় অংশ এখন খেলাপি হয়ে গেছে।