খােলা বাজার২৪। সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮: ফারমার্স ব্যাংকের ঋণ বিতরণ ও নিয়োগ অনিয়মের সঙ্গে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সংশ্নিষ্টতা খতিয়ে দেখছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে উঠে আসা অনিয়মের বিষয়ে সম্প্রতি ফারমার্স ব্যাংক থেকে বিস্তারিত তথ্য নিয়েছে সংস্থাটি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক পরিদর্শনে একজন ঋণ গ্রহীতার অ্যাকাউন্ট থেকে পে-অর্ডারের মাধ্যমে সাবেক চেয়ারম্যান মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও অডিট কমিটির তখনকার চেয়ারম্যান মাহাবুবুল হক চিশতীর (বাবুল চিশতী) হিসাবে টাকা স্থানান্তরের তথ্য উঠে আসে। তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে গতকাল সমকালে ‘ঋণের কমিশন নিয়েছেন মহীউদ্দীন আলমগীর’ শিরোনামে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। অনিয়মের এ তথ্য ব্যাংক খাতসহ বিভিন্ন মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ফারমার্স ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. এহসান খসরু গতকাল বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শনে উঠে আসা অনিয়মের বিষয়ে দুদক বিস্তারিত তথ্য নিয়েছে। সংস্থাটির পক্ষ থেকে যেসব তথ্য চাওয়া হচ্ছে ব্যাংক তা সরবরাহ করছে। অবশ্য দুদকের পক্ষ থেকে সরেজমিন এখনও কেউ ব্যাংকে গিয়ে তদন্ত করেনি।
ফারমার্স ব্যাংকের বিভিন্ন অনিয়মের ওপর পরিচালিত পরিদর্শনের আলোকে আরও বিস্তারিত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রতিবেদনটি দুদকে পাঠায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিস বিভাগ। মানি লন্ডারিংয়ের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে প্রতিবেদনটি দেওয়া হয় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে (বিএফআইইউতে)। এ ছাড়া ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালে যেসব ঋণ দেওয়া হয়েছে তার অনুমোদন প্রক্রিয়া, ঋণের সদ্ব্যবহার, সহায়ক জামানত, ঋণ গ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব যাচাইসহ সার্বিক অনিয়মের সঙ্গে জড়িত সব পক্ষকে চিহ্নিত করে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বহিঃনিরীক্ষক দিয়ে বিষদ পরিদর্শন করানোর জন্য ফারমার্স ব্যাংকের বর্তমান কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চরম তারল্য সংকট এবং বিভিন্ন অনিয়ম প্রতিরোধে ব্যর্থতার দায়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপে গত ২৭ নভেম্বর ফারমার্স ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ এবং চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য হন মহীউদ্দীন খান আলমগীর। একই দিন অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মাহাবুবুল হক চিশতীও পদত্যাগ করেন। বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে গত ১৯ ডিসেম্বর একেএম শামীমকে এমডি পদ থেকে অপসারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকটিতে চলমান তারল্য সংকট কাটিয়ে উঠতে নতুন করে ১১শ’ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া আমানত বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে বর্তমান কর্তৃপক্ষ। সমকাল