Sun. May 11th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪। মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮:  জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারম্নজ্জামান বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ মামলার ছয়জন আসামি প্রত্যেকেই কোনো না কোনোভাবে লাভবান হয়েছেন। তারা রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক অপরাধী হিসেবে গণ্য হবেন। অর্থনৈতিক দুর্নীতি রাষ্ট্রের অর্থনীতির স্বাভাবিক গতিকে ব্যাহত করে এবং এর বাজে প্রভাব সমাজের প্রতিটি স্ত্মরে সংক্রমিত হয়। রায় ঘোষণার ১২ দিন পর সোমবার বিকাল ৪টার দিকে মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন বিচারক। এরপর খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের হাতে ৪-২৫ মিনিটে মামলার রায়ের কপি হাতে তুলে দেন আদালতের পেশকার মোকাররম হোসেন। এরপর পরই দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজলের হাতেও মামলার রায়ের কপি তুলে দেয়া হয়।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, নথি পর্যালোচনায় প্রমাণিত হয় খালেদা জিয়া এ দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তিনি স্বীকৃত মতেই সরকারি কর্মচারী। বাকি উপাদানগুলো এই মামলায় উপস্থিত আছে বলে ইতোমধ্যেই লক্ষ্য করা গেছে। ফলে খালেদা জিয়ার পক্ষে যে সমস্ত্ম যুক্তি উপস্থাপন করা হয়েছে, সেটা বাস্ত্মবতার নিরিখে গ্রহণ করার কোনো কারণ নেই।

এ ছাড়াও আসামিদের পক্ষে দাবি করা হয়েছে, তিনি (খালেদা জিয়া) আইনের বিধান লঙ্ঘন করেন নাই এবং সে দুটি ট্রাস্টের অর্থ প্রদান করেছেন সেটাও সঠিক আছে। কিন্তু নথির পর্যালোচনায় আসামিপক্ষ উপস্থাপিত যুক্তি গ্রহণযোগ্য হয়নি। কেননা, সরকারি এতিম তহবিলের টাকা বিধিমোতাবেক এতিমদের কল্যাণে ব্যয় করা উচিত ছিল। কিন্তু খালেদা জিয়া তার ব্যত্যয় ঘটিয়ে নাম সর্বস্ব জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট্রের অনুকূলে দুই কোটি ৩৩ লাখ ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা স্থানান্ত্মর করেন।

মামলার আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে এতিম তহবিলের ২ কোটি ৭১ লাখ ৬৩৪ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। পরিমাণের দিক থেকে এর বর্তমানমূল্য অধিক না হলেও ঘটনার সময়ে ওই টাকার পরিমাণ অনেক বেশি ছিল। জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট নামে কোনো এতিমখানার অস্ত্মিত্ব পাওয়া যায়নি। সেখানে কোনো এতিম বসবাস করে না। এতিম খানার কোনো দালান-কোঠা বা স্থাপনা নেই। ফলে আসামিদের কোনো যুক্তি গ্রহণ যোগ্য নয়। রাষ্ট্রের যুক্তি গ্রহণযোগ্য।

সব কিছু বিবেচনা করে এটা প্রতীয়মান হয় যে, আসামিদের বিরম্নদ্ধে দ-বিধি ৪০৯ ও ১০৯ এবং দুদকের আইনের ৫ (২) ধারা প্রমাণিত হয়েছে। ৪০৯ ধারার বিধান মতে সর্বোচ্চ শাস্ত্মি যাবজ্জীবন কারাদ- অথবা যে কোনো বর্ণনায় কারাদ-ের মেয়াদ ১০ বছর পর্যন্ত্ম হতে পারে। আসামিরা একে অপরের সহযোগিতায় অর্থনৈতিক অপরাধ করেছেন এবং সে কারণে তাদের সর্বোচ্চ সাজা দিয়ে দৃষ্টান্ত্ম স্থাপন করা প্রয়োজন। তবে আসামিদের বয়স ও সামাজিকতা অবস্থান এবং আত্মসাৎকৃত টাকার পরিমাণ বিবেচনায় গ্রহণ করে তাদের যাবজ্জীবন কারাদ- প্রদান করা সমীচীন হবে না মর্মে আদালত মনে করেন। আসামি খালেদা জিয়া এ দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। রাজনৈতিক দলের কর্ণধার, বয়স্ক মহিলা, শারীরিক ও সামাজিকতা বিবেচনায় তাকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদ- এবং তারেক রহমানসহ বাকিদের ১০ বছরের সশ্রম কারাদ- প্রদান করেন।

অন্যদিকে ১৮৯৭ সালের জেনারেল ক্লজেস অ্যাক্ট এর ২৬ ধারায় বিধান বিবেচনায় আসামিদের যে কোনো একটি আইনে দ-িত করে আদেশ প্রচার করা বিধান বলে আদালত মনে করেন। যাযাদি