খােলা বাজার২৪। মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিএনপি। প্রশ্নপত্র ফাঁস, বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখা, খালেদা জিয়ার রায়, প্রধানমন্ত্রীর মামলা প্রত্যাহার, ওয়ান ইলেভেনে আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যসহ চলমান আন্দোলনে দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে দলটি।
মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষে এই প্রতিক্রিয়া দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী।
প্রশ্নফাঁস নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ঐতিহাসিকভাবেই কোয়ালিটি এডুকেশনের বিরোধী। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে ’৭২ সালের অটো প্রমোশন ও পরীক্ষায় গণটোকাটুকি, তোফায়েল বিসিএস এর কথা। আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যই হচ্ছে জাতিকে মেধাহীন করে অন্য একটি দেশের সুবিধার্থে দেশের সন্তান’রা যাতে কোয়ালিটিপূর্ণ শিক্ষায় ঐরময চধরফ ঔড়ন না পেয়ে জাতি পিছিয়ে পড়ে। প্রধানমন্ত্রীর কথায় এটাও পরিস্কার হয়েছে যে, সকল প্রশ্নফাঁসের সাথে সরকারের মদদ আছে।
নির্বাচনে কোন দল অংশ নেবে, কোন দল নেবে না, সেটা সিদ্ধান্ত তাদের প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, তার বক্তব্য একটি গণতন্ত্রহীন দেশের প্রধানমন্ত্রীর ভাষা, নির্দয় একনায়কতন্ত্রের ভাষা। তার বক্তব্যে গোটা জাতিকে হতাশ করেছে, বিক্ষুদ্ধ করেছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, সাংবাদিকরা অপকর্ম নয়, ভাল কাজ করলেই ৩২ ধারায় বিপদের আশঙ্কা আছে। কারণ ৩২ ধারা করাই হচ্ছে মন্ত্রী-এমপিদের দুর্নীতি ও অপকর্ম ধামাচাপা দেয়ার জন্য। এজন্যই তিনি সাংবাদিকদের হাত-পা বেঁধে রাখতেই ৩২ ধারার মতো ভয়ঙ্কর ধারা করতে যাচ্ছেন।
বিএনপির হাল ফেরারী আসামীর হাতে প্রধানমন্ত্রী এই বক্তব্যের উত্তরে রিজভী বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রীর ক্রোধের আসামী, একদলীয় দু:শাসনের সাজানো মামলার আসামী। প্রকৃত আইনের শাসন আর গণতন্ত্র থাকলে আওয়ামী সরকারই সাজাপ্রাপ্ত আসামী হয়ে কারাগারে থাকতো।
১/১১ এর সময় জলিল সাহেব, কাদের সাহেব, শেখ সেলিম সাহেবসহ অন্য নেতারা প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতি নিয়ে কী জবানবন্দী দিয়েছিলেন তা জনগণ এখনও ভুলে যায়নি। প্রধানমন্ত্রীর যদি এতো সাহস তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া দুর্নীতির ১৫টি মামলা মোকাবেলা না করে রাষ্ট্রশক্তি ব্যবহার করে সেগুলো প্রত্যাহার করে নিলেন কেন ? এসব প্রশ্নও জনগণের।
বিএনপিতে কি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হওয়ার মতো কেউ দেশে ছিল না প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য প্রসঙ্গে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনকে কারাগারে ঢুকিয়ে বিএনপি-কে ষড়যন্ত্রের ফাঁদে ফেলতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তারেক রহমান দলের হাল ধরায় আপনার সেই ষড়যন্ত্র ভেস্তে গেছে। ৩০ জানুয়ারি থেকে আজ ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৪৮০০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী।