Thu. May 15th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements


খোলাবাজার২৪.বৃহস্পতিবার ০৯ আগস্ট , ২০১৮ঃ  নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের নবম দিনে পুলিশের উপর হামলা ও ভাংচুরের দুই মামলায় গ্রেপ্তার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ শিক্ষার্থীকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

বৃহস্পতিবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক সত্যব্রত শিকদার রাজধানীর বাড্ডা ও ভাটারা থানায় দায়ের করা মামলায় আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

বাড্ডা থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জুলহাস মিয়া ও ভাটারা থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হাসান মাসুদ দুই দিনের রিমান্ড শেষে আসামিদের আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।

সোমবারের সংঘর্ষের ঘটনার পর মঙ্গলবার ২২ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছিল। ওইদিন শিক্ষার্থীদের পক্ষে জামিন চাওয়া হলেও সেই আবেদন নাকচ হয়।

২২ শিক্ষার্থীদের পক্ষে বৃহস্পতিবার পুনরায় জামিনের আবেদন করেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান হাওলাদারসহ কয়েকজন আইনজীবী।

আইনজীবীরা বলেন, এরা সবাই শিক্ষার্থী হলেও এজাহারে সেটা উল্লেখ করা হয়নি। তাছাড়া তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই।

ঘটনার দিন ‘যারা মার খেল তারাই আসামি হল’ বলে মন্তব্য করেন আইনজীবীরা।

রাষ্ট্রপক্ষে সংশ্লিষ্ট থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই মো. আবু হানিফ শিক্ষার্থীদের জামিনের বিরোধিতা করেন। 

গত সোমবার বসুন্ধরা এলাকায় সংঘাতের চিত্র

তিনি বলেন, “আসামিরা সবাই ছাত্র, সবাই কোমলমতি। ছাত্ররা ছাত্রদের মতো চলবে। কিন্তু তারা সবাই সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। সরকারকে উৎখাত করার জন্য তারা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে।

 

“ছাত্ররা রাস্তায় আসবে, আন্দোলন করবে। কিন্তু তারা কী ধরনের আন্দোলন করেছে আমরা তা দেখেছি। পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেটসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের থামাতে পারেনি। কারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপর কীভাবে হামলা করেছে? তারা কী ধরনের ছাত্র?”

জামিন পেলে আসামিরা আবারও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে  জড়িত হতে পারেন একারণে তাদের জামিনের বিরোধিতা করেন তিনি।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত ২০ ছাত্রের জামিন আবেদন সরাসরি নাকচ করেন। দুই আসামি রেদোয়ান ও তরিকুলের জামিন শুনানির জন্য আদালত রোববার দিন ঠিক করে দিয়েছে।

এদিন এই শিক্ষার্থীদের এজলাসে তোলা  হয়নি। আগের দিন ২২ শিক্ষার্থীর অনেককেই কোমরে রশি বেঁধে এজলাসে তোলা হয়েছিল।

এই ২২ জন আফতাবনগর এলাকার ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়, বসুন্ধরা এলাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, তেজগাঁও এলাকার সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং মহাখালীর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

কারাগারে যাওয়া আসামিদের মধ্যে বাড্ডার মামলার ১৪ ছাত্র হলেন, রিসালাতুল ফেরদৌস, রেদোয়ান আহমেদ, রাশেদুল ইসলাম, বায়েজিদ, মুশফিকুর রহমান, ইফতেখার আহম্মেদ, রেজা রিফাত আখলাক, এএইচএম খালিদ রেজা, তারিকুল ইসলাম, নূর মোহাম্মাদ, সীমান্ত সরকার, ইকতিদার হোসেন, জাহিদুল হক এবং হাসান। আর ভাটারা থানার মামলার  ছাত্ররা হলেন, আজিজুল করিম, মাসাদ মরতুজা বিন আহাদ, ফয়েজ আহম্মেদ আদনান, সাবের আহম্মেদ, মেহেদী হাসান, শিহাব শাহরিয়ার, সাখাওয়াত হোসেন এবং আমিনুল এহসান।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে গত নয় দিনে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় গাড়ি ভাংচুর, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজে বাধা দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে এ পর্যন্ত মোট ২৯টি মামলা করেছে পুলিশ।