Tue. Apr 22nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার ২৪. বৃহস্পতবার ,১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮: মোঃরাসেল মিয়াঃনরসিংদী প্রতিনিধিঃ নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বাংলাদেশ জুট মিলটি পাট সংকটের কারণে মিলের উৎপাদন ৪৫ টন থেকে নেমে ৭ টনে চলে এসেছে। বন্ধ রয়েছে মিলের অধিকাংশ তাত মেশিন। এতে মিলের প্রায় সাড়ে চার হাজার শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তার মাঝে মিল বন্ধের আতঙ্ক বিরাজ করছে।সেই সাথে মিলের উৎপাদিত প্রায় ৩৫ কোটি টাকা মূল্যের অবিক্রীত পাটজাত পণ্য মজুদ রয়েছে মিলের গুদাম ঘরে।

স্থান সংকুলান না থাকায় উৎপাদিত ফিনিশিং বিভাগে যত্রতত্র পড়ে পাটপণ্য নষ্ট হচ্ছে। পণ্য বিক্রি না হওয়ায় অর্থ সংকটে পড়তে হচ্ছে মিল কর্তৃপক্ষকে। বাংলাদেশ জুট মিলের পণ্য বিক্রি করে থাকে বিজেএমসি। উৎপাদিত পণ্য বিক্রি বাবদ বিজেএমসির কাছে ৯৩ কোটি টাকা পায় বাংলাদেশ জুট মিল। কিন্তু বিজেএমসি সময়মত টাকা না দেয়ার কারণে পাট কিনতে ও শ্রমিকদের বেতন ভাতাদি দিতে পারছেন না মিল কর্তৃপক্ষ। বেতন ভাতাদি না পেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করতে হচ্ছে মিলের সাড়ে চার হাজার শ্রমিক কর্মচারীদের ।

মিলের শ্রমিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আগে আমরা সপ্তাহে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা মজুরী পেতাম কিন্তু পাট সংকটের জন্য আমরা সপ্তাহে এখন মাত্র ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা মজুরি পাই। কিন্তু অর্থ সংকটের কারণে একাধিক সপ্তাহের মজুরি বকেয়া থাকায় আমাদের আর্থিক কষ্টের মধ্য দিয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে। অনেকে মজুরি না পেয়ে মিলে আসছেন না।মিলের সিবিএ সভাপতি ইউসুফ আলী ও সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান জানান, ৫২০ তাঁতের এই জুট মিলটিতে প্রায় চার হাজার শ্রমিক-কর্মচারী কর্মরত আছেন। এক সময় বাংলাদেশ জুট মিলটি দেশের অন্যতম লাভজনক জুট মিল ছিল। কিন্তু বিজেএমসি কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা ও উদাসীনতার কারণে মিলটি আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে।

বিজেএমসি টাকা না দেয়ায় মিল কর্তৃপক্ষ পাট কিনতে পারছে না ফলে মিলের উৎপাদন ৪৫ টন থেকে ৭ টনে নেমে এসেছে।অপরদিকে মিলের বিদ্যুৎ বিল প্রায় ১ কোটি টাকা ও গ্যাস বিল ৭ লাখ টাকা বকেয়া জমে গেছে। বকেয়া পরিশোধ না করার কারণে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ বার বার বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন করার নোটিশ দিচ্ছে। ২০১১ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত গত ৬ বছর যাবত মিলের চাকরিচ্যুত শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড ও গ্র্যাচ্যুইটির টাকাও দিতে পারছেন না মিল কর্তৃপক্ষ।

এ পর্যন্ত মিলে প্রভিডেন্ট ফান্ড ও গ্র্যাচ্যুইটির প্রায় ২০ কোটি ৫০ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে।এছাড়া বাংলাদেশ জুট মিলের কাছে পাট ব্যবসায়ীরা ২৮ কোটি টাকা পাওনা থাকায় এখন পাট ও সরবরাহ করছে না ব্যবসায়ীরা। মাঝে মধ্যে এক ট্রাক করে পাট এনে কোন রকমে উৎপাদন চালু রেখেছে বলে জানান মিল কর্তৃপক্ষ।এদিকে মিলটির উৎপাদন বিভাগ থেকে জানা যায়, মিলের উৎপাদিত প্রায় ৩৫ কোটি টাকার পাটজাত পণ্য মজুদ রয়েছে।

এসব পণ্য সময়মতো বিক্রি করতে না পারায় আর্থিক সংকটে পড়েছে মিল কর্তৃপক্ষ। আর এ কারণে শ্রমিকদের মজুরি প্রদানে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। ফলে বকেয়া মজুরির পরিমাণ বাড়ছে। নিয়মিত মজুরি প্রদান করতে না পারায় দেখা দিচ্ছে শ্রমিক অসন্তোষ।

বাংলাদেশ জুটমিলের মহাব্যবস্থাপক মোঃ গোলাম রব্বানীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন বিজেএমসির অনুমতি ব্যতীত কথা বলতে পারব না ।